আমার দেখা স্বাধীন বাংলার মুজিবনগর।

লিখেছেন লিখেছেন জারা ০২ এপ্রিল, ২০১৩, ০৪:৫৪:৩৬ বিকাল





১৯৭১ সালের ১৭ ই এপ্রিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন করা হয় মেহেরপুর জেলার অর্ন্তবর্তী ইতিহাস বিখ্যাত মুজিবনগর (বর্তমানে) উপজেলার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে। আমরা সিলেট থেকে মেহেরপুরে চলে আসি ২০১১ সালের নভেম্বর মাসের ৯ তারিখে।

আমি এমনিতেই ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করি। প্রথম যখন মেহেরপুরে আসি তখন আমার শুভানুকাংক্ষীরা বলছিলো এখানে চরমপন্হী ও সন্ত্রাসীদের আধিক্য বেশী মাএায় কাজেই একটু সাবধানে থাকতে। বুঝে শুনে চলার পরামর্শও দিলো ।

আর দশটা মফস্বল শহরের মতোই মেহেরপুরের অবস্হা ,এখানে আসার পর দিনগুলো প্রথম প্রথম খুব একটা ভালো কাটছিলো না । সময়ের স্রোতে একটা সময়ে মোটামুটি এখানে নিজেকে মানিয়ে নিলাম ।

২০১২ এর ফেব্রুয়ারী মাসের প্রথমদিকের এক শনিবার সকালে আমার হ্যাসবেন্ড কে বললাম চলো না কোথাও বেড়াতে যাই , শুনে আমার হ্যাসবেন্ড বললো ঠিক আছে রেডী হয়ে নাও। আমি তখনই আমার বেবীসহ নিজেকে গুছিয়ে নিলাম। আমরা অটোযোগে ঐতিহাসিক মুজিবনগরের উদ্দেশ্য পথ চলতে শুরু করলাম। ওখানে পৌছাতে আমাদের ঘন্টাখানেক সময় লাগলো। মেইনগেটের সামনে অটোচালক অটো থামালো। আমরা অটোচালককে উনার প্রাপ্য ভাড়া মিটিয়ে দিয়ে গেটের ভিতরে প্রবেশ করলাম। গেটের পাশেই কিছু ভ্যানওয়ালা ভ্যানগাড়ি নিয়ে দাড়িয়ে আছে যদি দর্শনার্থীরা পায়ে হাটার বিকল্প ভ্যানগাড়িতে চড়ে সবকিছু ঘুরে দেখে এই আশায়। আমরা বাংলাদেশের ম্যাপ ও ইন্ডিয়ার শেষ সীমান্ত এবং সেই সংগে সৃত্মিসৌধ দেখবো ,ভাড়া ঠিক হলো দেড়শ টাকায়।

প্রথমেই গেলাম বাংলাদেশের ম্যাপ দেখতে , ষ্টেডিয়ামের মতো তৈরী করে ভিতরে বাংলাদেশের মানচিএ কংক্রিট দিয়ে ঢালাই করে সবুজ রংয়ের মিশ্্রনে তৈরি করেছে।

চারপাশে দর্শকরা যাতে ঘুরে ফিরে মানচিএটি দেখতে পারে সে ব্যবস্থাও করা হয়েছে। আপনি যদি অনেক উচুতে উঠে মানচি্এর রুপ দর্শন করতে চান সেক্ষে্এ আপনাকে ওখানে অবস্হিত উচু টাওয়ারে উঠে দেখতে হবে।

মানচি্এর মধ্যে যুদ্ধের সময়ে কোন কোন জেলার ওই সময়কার পরিস্হিতি গুলো ভাস্কর্য্যের মাধ্যেমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এক পার্শ্বে আবার ছোটখাট মিউজিয়াম রয়েছে। ততকালীন সময়ের ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, সচিবালয়, প্রেস ভবন, আরও অনেক কিছু যেসব জায়গা পাক মিলিটারি বাহিনীর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। এইগুলো উক্ত মিউজিয়ামে ইট ,পাথর ,সিমেন্ট ,বালি দ্বারা নির্মান করা হয়েছে। আর ষ্টেডিয়ামটির ঠিক পাশেই শেখ মুজিবুর রহমানের শ্বেত রংগের ঢালাই করা মূর্তি আর পাশেই আরও অনেক মূর্তি

দাড়িয়ে দাড়িয়ে তার ঐতিহাসিক ভাষন শুনছে এই আদলে গড়া হয়েছে। হাতের বা পার্শ্বে রয়েছে পাক বাহিনীর কুকর্মের ছোয়া, মা বোনদেরকে তারা ধরে নিয়ে যাচ্ছে। দেখতে দেখতে একসময় আমার বেবীটা তার ছোট ছোট আংগুলগুলো ওগুলোর দিকে দেখিয়ে বলে উঠলো , মামনি ওই লোকগুলো ওখানে কি করছে। হেসে বললাম ওগুলো ভাষ্কর্য্য সোনা। আমার বেবী কি বুঝলো কে জানে। ও আচ্ছা বলে মাথা ঘুরিয়ে নিলো। পরে আমরা ওখান থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ এবং ভারতের সীমান্ত দেখতে চলে আসলাম। সীমান্ত রেখা দর্শন শেষে আবার সেই আম্রকাননে ঢুকলাম এখানে রয়েছে সৃত্মিসৌধ। কতক্ষন ঘুরে ঘুরে দেখলাম ভালোই লাগলো। খুব সুন্দর করে সৃত্মিসৌধ বানানো হয়েছে। পাঠক আপনারাও ইচ্ছে করলে ঘুরে যেতে পারেন এই সৃত্মি বিজরিত সুন্দর মুজিবনগরে।

বিষয়: বিবিধ

১২৬১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File