অবশেষে বিড়ালটি নিজেকে ধৃত সিংহশাবক বলিয়া স্বীকার করিলো।

লিখেছেন লিখেছেন জারা ০৫ জুন, ২০১৩, ১১:৪৮:৫৫ রাত



একদা এক বিড়াল ছানা তাহার জন্মিবার পর হইতেই এ বাড়ি হইতে ও বাড়ি ঘুরিয়া ঘুরিয়া বেড়াইতো। আর এই বাড়ির মাছটুকু, ওই বাড়ির ভাতটুকু এইগুলি খাইয়া দাইয়াই তাহার শৈশবকালীন জীবনচরিত অতিবাহিতো করিলো। একসময় উক্ত বিড়াল ছানাটির শৈশব হইতে কৈশোরে পদার্পন করিলে সে চুরি বিদ্যার কলাকৌশলে বিশেষ পারদর্শী হইয়া উঠিলো। সে ধীরে ধীরে একেক দিবস এক এক বাড়ী হইতে কোন বাড়ীর কাচাঁ মাছ বাজার হইতে আনিবার পরে রন্ধনশালায় রাখিবা মাত্র গৃহস্তের চক্ষুর পলক ফেলিবার পূর্বেই সে ঝাপাইয়া পরিয়া চুরি করিয়া ঝড়ের বেগে পলায়ন করিতো। আবার কখনো বা অন্য কোন বাড়ীর গরম ভাত ঠান্ডা হইবার অপেক্ষার প্রহর গুনিতে গুনিতে একেকসময় ক্লান্তিতে সে ঘুমের অতল দেশে তলাইয়া যাইতো। তাহার পরে ঘুম থাকিয়া জাগিয়া উঠিবার পরে যেইটুকু খাদ্য পাইতো তাহা লইয়া সে চম্পট দেওয়ার আগেই কখনও বা ধরা খাইয়া গেরস্তের ধাওয়া খাইয়া জানালার পথ দিয়া এক লাফে পরিয়া পগার পার হইয়া যাইতো।

এই সমস্ত বিষয়াবলী দেখিতে দেখিতে বিড়াল ছানাটি একসময় তাহার নিজ এলাকায় ছিচঁকে চোর হিসাবে বেশ নাম ডাক কামাইলো।

# তাহার পরে কৈশোর থেকে ধীর গতিতে সে যৌবনে পদার্পন করিলো। যৌবনে আসিয়া উক্ত বিড়াল ছানাটি আরও ভয়ংকর হইয়া উঠিলো । সে এখন আর কাউকে দেখিয়া ভীত হইয়া পরে না এবং সে নানা রকমের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত হইয়া পড়িলো। তো এমতাবস্থায় তাহার উক্ত সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অতিষ্ট হইয়া উক্ত এলাকার সমস্ত জনসাধারন মিলিয়া থানায় গিয়া বিড়ালটির নামে একটা মামলা ঢুকিয়া দিলো।

# আর অন্য দিকে আফ্রিকার সোমালিয়া হইতে একটি সিংহশাবক খাদ্যসংকট দুর্ভিক্ষের দরুন পলায়ন করিয়া ঘুড়িতে ঘুড়িতে একসময় বাংলাদেশে আসিয়া পরিলো। এবং উক্ত ঘটনার সংগে সংগে সারা বিশ্বের গনমাধ্যেমগুলোর অশেষ কল্যান মারফত দ্রুত গতিতে সিংহ শাবকের পলায়নের সংবাদ চারদিকে ছড়াইয়া ছিটাইয়া পরিলো। কিন্তু সিংহশাবক অতি মাত্রায় ক্ষুধার্ত থাকার দরুন বেশ কিছু অপকর্ম করিয়া ফেলিলো । সে বাংলাদেশের কিছু নিরীহ জনসাধারনকে ভক্ষন করিলো। এবং তাহার উদর পূর্তি হইলে সে সকলের অগোচরে পূনরায় সোমালিয়া চলিয়া গেলো। এইদিকে বাংলাদেশে সিংহশাবকটি আসিয়া পরিয়াছে দেখিয়া এবং কিছূ বাংলাদেশী জনসাধারন তাহার উদরে চলিয়া গেছে শুনিয়া বাংলাদেশের সরকার পুলিশ বাহিনীকে উক্ত বদমাশ সিংহশাবকটাকে ধরিবার অপারেশনে নামাইয়া দিলেন। কিন্তু বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী বলিয়া কথা। তাহারা সরকারের হকুম অক্ষরে অক্ষরে পালন করিয়া অভ্যস্ত। তবে এইবারের কথা আলাদা। তাহারা অতি অত্যাধূনিক শক্তিশালী দূরবীনের মাধ্যেমে আতি পাতি করিয়া অনেক খুজিঁয়াও হিংস্র সিংহশাবকটিকে ধরিতে সক্ষম হইলো না। পরিশেষে ক্লান্ত শ্রান্ত হইয়া তাহারা অনেক আগের মামলা দায়ের করা পলাতক আসামী বিড়ালটাকেই ধরিয়া বাধিঁয়া আনিলো। এবং সরাসরি রিমান্ডে নিয়া অনেক অনুরোধ ও জিঞ্জাসাবাদ করিয়া তাহার কাছ থাকিয়া অনেক কষ্টে সৃষ্টে স্বীকারোক্তি আদায় করাইলো যে সেই আসলে প্রকৃত হিংস্র সিংহ শাবক।

বিষয়: বিবিধ

২৬২৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File