সুখাধ্যিয়া সোনার হরিনের খোঁজে (১ম পর্ব)।

লিখেছেন লিখেছেন জারা ০১ জুন, ২০১৩, ১১:৩১:২০ সকাল



মিসেস মিনুর বিয়ের বয়স প্রায় চল্লিশ হতে চললো, এবং এই বয়সেও তাকে সংসারের যাবতীয় কাজগুলো সেই আগের মতোই করে যেতে হচ্ছে। কিন্তু আজকাল আর কাজের ধকল শরীরে সইতে পারছেন না। শরীরে কতধরনের কত রকমের রোগব্যাথি বাসা বেধেঁছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিকস ,কোমরে বাতের ব্যথা, রাতে ঘুম হয় না নানারকমের সমস্যা। এই ডায়াবেটিকস এর কারনে সকাল, বিকেল , নিয়ম করে প্রচুর হাটাঁহাটিঁ করতে হয় তাকে । প্রতিদিন নিয়ম মাফিক ভোর সাড়ে চারটার মধ্যেই মিসেস মিনুর ঘুম ভাংগে। এবং যথারীতি দাতঁব্রাশ করে মুখ হাত ধুঁয়ে অজুটা সেরে ফজরের নামাজ আদায় করে নেন। তারপরে প্রাতঃ ভ্রমনের সঙ্গীনিদের ডাকে বেরিয়ে পড়েন। একনাগাড়ে ঘন্টা দুয়েক পায়ে হন্টন ব্যায়াম সেরে ক্ষান্ত দেন নিজেকে। বাসায় ফিরে কাজের মেয়ে আশাকে সকালের নাস্তা ডাইনিং এ দিতে বলে নিজে তোয়ালে নিয়ে বাথরুমে চলে যান। এবং ফ্রেশ হয়ে নাস্তা সেরে খবরের কাগজ নিয়ে বসেন। আজকাল এটাই তার নিয়ম করা প্রতিদিনের ডিউটি হয়ে দাড়িয়েছে। বাসাতে লোক বলতে মিসেস মিনু, এবং তার হ্যাসবেন্ড। মেয়েদুটোর অনেক আগেই বিয়ে হয়ে গেছে। বড় মেয়ে জামাই সরকারী উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, আর ছোট মেয়ে জামাই আমেরিকার একটি নামকরা হসপিটালের শৈল্যচিকিৎসক । ছোট মেয়েটি ওখানেই স্হায়ী নিবাস করে নিয়েছে, দেশে খুব একটা আসছে না। আর বড় মেয়েটি নাতনীদের চাপে পড়ে মাঝে মধ্যে মিসেস মিনুদের কাছে এসে বেড়িয়ে যায়। মিসেস মিনুর একমাত্র ছেলে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করতে গিয়েছিলো তাও প্রায় বছর দশেক আগে। এই দু, বছর হলো দেশে ফিরেছে। ছেলেটা বিয়ে করার কোন নামও নিচ্ছে না। ছেলেটি যখন দেশ থেকে বিদেশ পাড়ি দিয়েছিলো উচ্চ শিক্ষার জন্য তখন ছেলেটি দেখতে কত স্মার্ট ছিলো। যখন দেশে ফিরলো এক্কেবারে আলাদা জগতের মানুষ সে। একমুখ দাড়ি, বেশভুষা, চালচলন, কথাবার্তা, বলতে গেলে সবকিছুতেই তার অভাবনীয় পরিবর্তন। এক্কেবারে খাটিঁ মুসলিম বলতে যা বোঝায় এই আর কি। সে পাচঁ ওয়াক্ত জামাতের সাথে নামাজ আদায় করে। প্রতিদিন নিয়ম করে পবিত্র কোরআন পাঠ করছে। সাথে বিভিন্ন হাদিস ,ও ইসলামিক বই অধ্যয়ন করছে। এ নিয়ে আত্ত্বীয় স্বজনরা কেউ বা অত্যন্ত খুশী হয়েছে আর কেউ কেউ হাসি তামাশাও করছে।

এদিকে মিসেস মিনুর ছেলেটির বিযের বয়সটাও প্রায় পার হয়ে যাচ্ছে। ছেলেটার জন্য বিদেশ থাকাকালীন সময়েই অনেক জায়গায় বায়েডাটা দিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু পাত্রী দেখে দেখেই মিসেস মিনুর দিনগুলো কেটে গেলো। মনের মতো পাত্রী আর পাওয়া হলো না। ছেলে দেশে ফেরার পরে পাত্রী দেখা আবার পূনরায় শুরু হলো , মনের মতো পাত্রী যদিও বা মিসেস মিনু পেলেন তা আবার ছেলের পছন্দ নয়। আবার ছেলের যে পাত্রী পছন্দ হয় তা আবার দেখা যায় ছেলের বাবার পছন্দ হয় না। ছেলের বাবার চাই অভিজাত ঘরের সুন্দরী পাত্রী, আর মিসেস মিনু খোজেঁন দেখতে সুন্দরী ,গৃহকর্মে পটিয়সী পাত্রী। আর মিসেস মিনুর ছেলের চাই দেখতে মোটামুটি হলেও চলবে কিন্তু পাত্রীকে অবশ্যই ধর্মভীরু হতে হবে।

(চলবে)

বিষয়: বিবিধ

১৯১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File