‘‘ভারত-আওয়ামীলীগ এর ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষের কারন’’ -এম.আবদুল্লাহ....(২৫তম পর্ব)

লিখেছেন লিখেছেন দূর্বল ঈমানদার ২৫ নভেম্বর, ২০১৫, ০২:৫৯:৩৯ দুপুর

আগের পোষ্ট: ২৪তম পর্ব: Click this link

(পূর্বে প্রকাশিতের পর)

আওয়ামী লীগ জোটের মিথ্যাচার : তথাকথিত প্রগতিশীল আওয়ামী লীগের মিথ্যাচার জাতীয় স্বার্থবিরোধী কাজ এবং জাতিকে প্রতারণার কয়েকটি তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরা হলো-

১। বৃটিশ ভারতে পুঁজি যাদের হাতে ছিল তারা সবাই ছিলেন অবাঙ্গালী। আগাখানী সম্প্রদায়কে আগাখান নিজে এ অঞ্চলে টাকা খাটাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন কিন্তু এরা অনেকে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিকুল আবহাওয়ায় হতাশ হয়ে ব্যবসা শুরু করেন করাচীতে। পূর্ব পাকিস্তানে প্রথম প্রথম যে কটি জুট মিল স্থাপিত হয় তার মধ্যে আদমজী এবং ইস্পাহানি প্রধান। এরা কলকাতা অঞ্চল থেকে পুঁজি এবং তাদের শ্রমিক সঙ্গে নিয়ে আসেন। এসব দক্ষ শ্রমিকের অধিকাংশই ছিল বিহারী। তা না হলে কলকারখানা স্থাপন করা যেত না। (কেননা পূর্ব বাংলায় কোনো জুট মিল ছিল না সুতরাং জুট মিল পরিচালনা তারা কিভাবে করবে।) বলাবাহুল্য, হঠাৎ করে একদল শ্রমিককে বসিয়ে দিলেই কারখানা চালু করা যায় না। এক্ষেত্রেও কয়েক বছর পর শুনতে পেলাম, আদমজী, ইস্পাহানী, বাওয়ানী এরা বিশেষ কিছু পুঁজি আনেনি। পূর্ব পাকিস্তান সরকারের অবাঙ্গালী কর্মচারীদের সহায়তায় এরা পাটের ব্যবসা কুক্ষিগত করেছেন। ৫৪ সালের পর আওয়ামী লীগ মন্ত্রিসভার আমলে বাঙালী-বিহারী দাঙ্গায় কয়েকশ লোক নিহত হয়। এর পেছনে ছিল রাজনৈতিক উস্কানি। দেশ শিল্পায়িত হউক বা না হউক সেটা যেন একেবারেই গৌন হয়ে গেল। শুধু শোনা গেল অবাঙ্গালী মালিক ও শ্রমিকেরা পূর্ববঙ্গের রক্ত শুষে খাচ্ছে। পাকিস্তান আমলে যে কটি পাটকল অবিভক্ত বাংলায় ছিল তার সবগুলো ছিল কলকাতায় এবং তাদের মালিক ছিল হিন্দু মাড়োয়ারী ব্যবসায়ী। আদমজী-ইস্পাহানি ছিলেন এর ব্যতিক্রম। কলকাতায় মোট জুট মিলের সংখ্যা ছিল ৪০ বা ৪১টি। এসব মিলে পাট সরবরাহ হতো পূর্ববঙ্গ থেকে। পাট ব্যবসায়ের কেন্দ্র ছিল নারায়ণগঞ্জে। এখানে ফড়িয়াদের নিকট থেকে পাট ক্রয় করে নিত মাড়োয়ারীরা। আশ্চর্য হল মাড়োয়ারী শোষণের কথা আমরা কখনও শুনিনি। ১৯৭১ সাল নাগাদ পূর্ব পাকিস্তানে পাটকলের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭০-৭১টিতে যার অধিকাংশ মালিক ছিল বাঙ্গালী। (সূত্র : একাত্তরের স্মৃতি, প্রাগুক্ত পৃ.-৬০)।

পাঠকবৃন্দ, আওয়ামী লীগ জোট ১৯৪৭ সন থেকে অদ্যবাধি মাড়োয়ারী ব্যবসায়ীদের শোষণ, ৪৭ পূর্ব হিন্দু-জমিদারদের শোষণ-নির্যাতনের বিরুদ্ধে কখনও কোনো কথা বলেনি। তারা মুসলমানের দেশ পাকিস্তান ভাঙ্গার জন্যই শুধুমাত্র ভাষা বিদ্বেষ ও জাতি বিদ্বেষ ছড়িয়েছে। অথচ ১৯৩৫ সালে ঋণ শালিসী বোর্ড স্থাপনের আগে অসংখ্য মুসলমান কৃষক হিন্দু মহাজনদের ঋণে জর্জরিত হয়ে ভিক্ষাবৃত্তিও গ্রহণ করতে বাধ্য হতো। বহু ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে, মূল ঋণের বহু গুণ টাকা শোধ করেও কৃষক ঋণ থেকে রেহাই পেত না। সুদ বৃদ্ধি পেত চক্রবৃদ্ধি হারে। আওয়ামী লীগ জোটের উর্দুভাষীদের বিরুদ্ধে ছড়ানো বিদ্বেষের নীচে চাপা পড়ে যায় হিন্দু মহাজন, জমিদার ও মাড়োয়ারীদের ১৯০ বছরব্যাপী শোষণ ও অত্যাচার।

২। আওয়ামী লীগের একটি লোক মারা গেলেও সেটাকে জেনোসাইড বলা হতো। আর ১৯৭২ সালে এরা গণকবর আবিষ্কার করত। পাক বাহিনীর নির্মমতার প্রমাণ হিসাবে এ সমস্ত গণকবরের উল্লেখ করা হতো। বহু ক্ষেত্রে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের লোকেরা যে সমস্ত লোককে একাত্তর সালে হত্যা করেছিল তাদের অস্থি কংকাল নতুন করে বের করে প্রচার করা হতো এরা সব আর্মির নিষ্ঠুরতার শিকার। তখন এর প্রতিবাদ করার কেউ ছিল না। (প্রাগুক্ত পৃ.২০৫)

অসমাপ্ত, চলবে , সাথেই থাকুন


[বই: ‘‘ভারত-আওয়ামীলীগ এর ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষের কারন’’ -এম.আবদুল্লাহ-----পৃষ্টা: ৫৪]

পরের পর্ব: ২৫তম পর্ব

# ইতিহাস জানুন, অন্যথায় অন্ধকারেই থেকে যাবেন

বিষয়: বিবিধ

১৩৭১ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

351427
২৫ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:৩০
কুয়েত থেকে লিখেছেন : অন্যায়ের বিরোধিতা করতে হলে আপনাকে আমাকে দলীয় রাজনৈতিক পরিচয়ের উর্দে উঠে ন্যায়ের পক্ষে কথা বলতেই হবে। এটাই মানুষত্বের দ্বাবী, নৈতিকতা এবং ঈমানের ও দ্বাবী। ভালো লাগলো চালিয়ে যান আপনাকে ধন্যবাদ
০৬ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:১৬
292936
দূর্বল ঈমানদার লিখেছেন : অন্যায়ের বিরোধিতা করতে হলে আপনাকে আমাকে দলীয় রাজনৈতিক পরিচয়ের উর্দে উঠে ন্যায়ের পক্ষে কথা বলতেই হবে। এটাই মানুষত্বের দ্বাবী, নৈতিকতা এবং ঈমানের ও দ্বাবী
আপনার সাথে একমত । Good Luck Rolling on the Floor
351505
২৫ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৪৬
শেখের পোলা লিখেছেন : খুলনায় পাঁচটি জুটমিল ছিল আজও তা স্যালাইন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে৷ ষাটের দশকে আমিও সে জুটমিলে চাকরী করেছি, দেখেছি তার যৌবন জৌলুশ৷ কর্ম বিমুখ বাঙ্গালী মেশিনারী বা কলমে অভ্যস্থ না থাকায় অভিজ্ঞ বিহারীরাই তার পরিচালক ছিল৷ মুজিব সরকার একেও শোসণ বলে প্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে৷ ধন্যবাদ সাথে আছি৷
০৬ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:১৬
292935
দূর্বল ঈমানদার লিখেছেন : অন্যায়ের বিরোধিতা করতে হলে আপনাকে আমাকে দলীয় রাজনৈতিক পরিচয়ের উর্দে উঠে ন্যায়ের পক্ষে কথা বলতেই হবে। এটাই মানুষত্বের দ্বাবী, নৈতিকতা এবং ঈমানের ও দ্বাবী
আপনার সাথে একমত । Good Luck Rolling on the Floor
০৬ ডিসেম্বর ২০১৫ দুপুর ১২:১৯
292937
দূর্বল ঈমানদার লিখেছেন : আপনার নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করায় আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ।Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File