‘‘ভারত-আওয়ামীলীগ এর ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষের কারন’’ -এম.আবদুল্লাহ....( ২৩তম পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন দূর্বল ঈমানদার ১৭ নভেম্বর, ২০১৫, ০৩:৫৮:০২ দুপুর
আগের পর্ব:২২তম পর্ব: Click this link
(পূর্বে প্রকাশিতের পর)
৪। ভারত কেবলমাত্র বাংলাদেশের সীমানায় কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে। ভারতের অন্যান্য প্রতিবেশী দেশ যথা বার্মা, চীন, নেপাল, পাকিস্তান সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেয়নি। ভারত তার দীর্ঘ সীমান্তে অন্য কোনো দেশের মানুষকে গুলি করে হত্যা করে না, ধরে নিয়ে যায় না। ইসরাইল যেভাবে ফিলিস্তিনীদেরকে যখন খুশি হত্যা করে এবং তাদের স্বাধীনতা স্বীকার করে না ঠিক তদ্রুপ ভারতও বাংলাদেশীদের হত্যা করে। কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে তারা বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি করায়ত্ব করেছে। এতে বাংলাদেশের কোনো নিয়ন্ত্রণের সুযোগ নেই।
৫। ভারত আমাদেরকে জাতি হিসাবে স্বীকার করে না বিধায় তারা আন্তর্জাতিক নিয়ম-কানুন উপেক্ষা করে আমাদের সকল নদীতে উজানে বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করছে এবং আমাদের তালপট্টি, ছিটমহল দখলে রেখেছে ও আমাদের সমুদ্রসীমা লংঘন কর প্রতিনিয়ত মাছ ধরে।
৬। ভারত বাংলাদেশের সাথে চুক্তি করে নিজের প্রাপ্য বুঝে নেয় কিন্তু আমাদের প্রাপ্য দেয় না।
৭। কলকাতার দেবসাহিত্য কুটির ১৯৭৩ সালে A.T. Dev লিখিত Student favourite Dictonary'র সংশোধিত সংস্করণ বের করে। এ ডিকশনারীতে মানচিত্রসহ বাংলাদেশের পরিচয় পাঠকদের জন্য তুলে ধরে যাতে বাংলাদেশকে ভারতের একটি প্রদেশ হিসাবে দেখানো হয়। (প্রাগুক্ত, আবুল আসাদ পৃ.-৩০৭)
৮। এ টি দেবের ডিকশনারীর ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার একটি গেজেট নোটিশ প্রকাশ করে যার No. 1130-sec(111) 15th November, 1973. উক্ত নোটিশে উল্লেখ করা হয়, “এ টি দেবের ডিকশনারী ম্যাপ বাংলাদেশের একশ্রেণীর মানুষকে প্রভাবিত করবে।”
পাঠককূল লক্ষ্য করুন, বাংলাদেশকে ভারতের প্রদেশ বলা হলো অথচ তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারকে এবং স্বাধীনতার সোল এজেন্ট আওয়ামী লীগকে তা প্রভাবিত করল না। শুধুমাত্র একশ্রেণীর মানুষকে প্রভাবিত করবে বলে সরকার গেজেট প্রকাশ করল। সুতরাং বুঝাই যায় আওয়ামী লীগ কিরূপ স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী।
৯। কলকাতার দৈনিক ‘অমৃতবাজার’ পত্রিকা ১৯৭৪ সালের ১৮ মে তারিখে একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করে। The chief minister of Bangladesh (মুখ্যমন্ত্রী) বলে অভিহিত করে। (প্রাগুক্ত-পৃ.-৩০৮)
১০। শেখ মুজিব ও তার দল যে ভারতের এজেন্ট, মুজিবের সহযোগী অন্যান্য দল, নেতা ও বুদ্ধিজীবীরা যে ভারত লালিত এবং স্বাধীন বাংলাদেশের শত্রু তা বুঝা যাবে মাওলানা ভাসানীর বক্তব্যে- পরিপূর্ণ স্বাধীনতা ও মুক্তি আমাদের আসে নাই, কেননা আগেকার প্রাদেশিক গভর্নর ও মন্ত্রীদের চাইতে অধিকতর নগ্নভাবে বাংলাদেশের মন্ত্রীরা নয়াদিল্লীতে সপ্তায়-সপ্তায় গমন করেন। সেখান হইতে যে নির্দেশ দেয়া হয়, ভারতীয় কিসিঞ্জার বাংলাদেশের অসরকারী প্রধানমন্ত্রী ডি পি ধর (হালে ইন্দিরা গান্ধীর বিশ্বস্ত হাত পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ বাবুরা) আসিয়া যে নির্দেশ দিয়া যান, ঠিক সেভাবেই দেশ চালনার এস্তেমাল হইতেছে। বাংলাদেশের বাৎসরিক উন্নয়ন পরিকল্পনা দিল্লীর অনুমতি ছাড়া প্রকাশ করা যায় না, বাণিজ্য চুক্তি আলোচনার নাম করিয়া অর্থমন্ত্রী নয়াদিল্লীর প্রভুদিগকে উন্নয়ন পরিকল্পনার খসড়া দেখাইয়া আনেন। সবচাইতে লজ্জার ব্যাপার হইল, একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের জনগণের পবিত্রতম সনদ শাসনতন্ত্রটিও খসড়া হইবার পর জনগণের কাছে প্রকাশের আগে দিল্লী পাঠানো হইয়াছে। জুন মাসে (১৯৭২) আইনমন্ত্রী কামাল হোসেন শাসনতন্ত্রের খসড়া বগলদাবা করিয়া বিলাতযাইবার নাম করিয়া দিল্লীর প্রভুদের খেদমতে হাজির হইয়াছেন। মৎস্য বিভাগ, এমনকি সমবায়ের মতো অনুল্লেখযোগ্য দপ্তরের মন্ত্রীরাও এদেশের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ লইবার আগে নয়াদিল্লী-কলকাতা-বোম্বাই দৌড়াইয়া ভারতীয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের নির্দেশ ও ফরমায়েশ লইয়া আসেন।” (সূত্র : ‘আওয়ামী লীগের কথা ও কাজ ওয়াদা ভঙ্গের এক নজীর’ মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, জুলাই-১৯৭২ ‘শান্তি প্রেস’)
অসমাপ্ত, চলবে , সাথেই থাকুন
[বই: ‘‘ভারত-আওয়ামীলীগ এর ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষের কারন’’ -এম.আবদুল্লাহ-----পৃষ্টা: ৫০-৫২]
পরের পর্ব:
# ইতিহাস জানুন, অন্যথায় অন্ধকারেই থেকে যাবেন
বিষয়: বিবিধ
১৬১২ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন