‘‘ভারত-আওয়ামীলীগ এর ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষের কারন’’ -এম.আবদুল্লাহ....(১৮তম পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন দূর্বল ঈমানদার ০৫ নভেম্বর, ২০১৫, ০১:১৫:০৬ দুপুর
আগের পর্ব:আগের পর্ব: ১৭তম পর্ব
(পূর্বে প্রকাশিতের পর)
৬. ভারতের সর্বাপেক্ষা মুসলিম বিদ্বেষী জঙ্গী সংগঠন ‘রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ’-এর সভাপতি প্রফেসর বলরাজ মোদক ভারতের মুসলমানদেরকে হিন্দু ধর্মে আত্মীকরণের এক নীলনকশা উপস্থাপন করেন। উক্ত নীলনকশার মূল বক্তব্য ছিল- “এ উদ্দেশ্য সর্বাগ্রে যা করা জরুরি তা হলো- সকল ভারতীয় শিক্ষিত মুসলমানকে একথা বোঝাতে হবে যে, তাদের পূর্বপুরুষ হিন্দুদের পূর্বপুরুষদের মতই ছিল এবং ভারতে ইসলাম ধর্ম আগমনের পূর্বে অশোক, চন্দ্রগুপ্ত এবং হর্ষবর্ধনের গৌরবগাথায় দুস্প্রদায়ের পূর্বপুরুষরাই গৌরববোধ করতো। তাদের মনে এরকম একটা অনুভূতির সঞ্চার করতে হবে যে, রাম, কৃষ্ণ, ব্যস এবং কালীদাস তাদেরও মহাপুরুষ এবং তাদের গৌরব ও মহানুভবতা প্রচারের উদ্দেশ্যে উদযাপিত অনুষ্ঠানাদি হিন্দুদের সাথে সাথে তাদেরও একত্রে উদযাপন করা উচিত। এরকম একটি ধারণা মুমসলমানদের মধ্যে জাগিয়ে তুলতে হবে। ধীরগতির প্রচেষ্টার মাধ্যমে আস্তে আস্তে এবং সুপরিকল্পিত উপায়ে এ সকল অভিন্ন মহাপুরুষের মহত্ব উদযাপন অনুষ্ঠান যুক্তভাবে দুই সম্প্রদায়ের একত্রে পালনের প্রচেষ্টার মাধ্যমে এ পরিকল্পনা কার্যকর করার চেষ্টা করতে হবে। ...ভারতে যেদিন মুসলমানদের ভারতীয়করণ (হিন্দুকরণ) সম্পূর্ণ হবে, ভিন্ন কোনো দেশের প্রতি স্বাজাত্যবোধের শিকড় উপড়ে ফেলা সম্ভব হবে, সেদিনই ভারতে সাম্প্রদায়িকতা সমস্যার সমাধান হবে।
(Balaraj Modak, Hindustan of the cross roads, Mallik Bros, Lahore, 1964, PP. 96-97)
শক, হুন, গ্রিক ও বৌদ্ধদেরকে ব্রাহ্মণ্যবাদী ভারত যেভাবে হিন্দুতে পরিণত করেছিল সেভাবে মুসলমানদেরকে হিন্দুতে পরিণত করা সম্ভব না হওয়ায় হিন্দুরা মুসলমানদেরকে তাদের এক নম্বর শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। গান্ধীর প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন সংগঠন ও কর্মসূচি এবং বলরাজ মোদকের নীলনকশার প্রতি লক্ষ্য করলে দেখা যাবে তারা তাদের বিরামহীন প্রচেষ্টার মাধ্যমে সম্রাট আকবরের সময় থেকে বর্তমান পর্যন্ত বিপুলসংখ্যক মুসলমানকে বিপথে পরিচালিত করে ইসলাম ও মুসলমানের শত্রুতে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছে। তাই বর্তমানে দেখা যাচ্ছে উপমহাদেশের বামপন্থী কম্যুনিস্টপন্থী দলগুলোর মুসলমান নামধারী ব্যক্তিগণ এবং তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী দল-গোষ্ঠী ও বুদ্ধিজীবীরা বর্তমানে প্রকৃত ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে এবং ব্রাহ্মণ্যবাদী ভারত, সাম্রাজ্যবাদী ইহুদি ও খ্রিস্টানদের পক্ষে ও স্বার্থে কাজ করছে। এর স্বরূপ নিম্নরূপ :
১. আধুনিক কম্যুনিস্ট মতবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের আজব সৃষ্টি হলো এসব মতবাদের মুসলমানরা। তারা নিজেদের ধর্মকে কটাক্ষ করে, ধর্ম নেতাদেরকে বিদ্রুপ করে। নিজ ধর্মের লোকজনকে বিশ্বাস না করে অপর সংখ্যালঘু ধর্মবিশ্বাসীদের মাঝে নিজেদের নিরাপত্তা খোঁজে। তারা নিজেদের ধর্মের বিরুদ্ধে নিজের জাতির বিরুদ্ধে এবং সাম্রাজ্যবাদী শক্তির পক্ষে অবস্থান করে নিজের জাতীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও আত্মমর্যাদাকে বৈষয়িক স্বার্থের বিনিময়ে বিকিয়ে দেয়। নিজ ধর্মের প্রচার-প্রসারে বাধা দেয়। ধর্মীয় নেতাদের উপর জুলুম নির্যাতন চালায়। ধর্মীয় মূল্যবোধসম্পন্ন রাজনৈতিক নেতাদের বিরোধিতা করে। ধর্মীয়, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও চেতনাকে ধ্বংস করতে সদা-সর্বদা সচেষ্ট থাকে। বিদেশী প্রভুদের স্বার্থে তারা স্বদেশের উন্নতি-অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্থ করে এবং গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে স্বৈরাচারের সাথে, ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুদের সাথে ও সাম্রাজ্যবাদীদের সাথে আঁতাত করে দেশের সর্বনাশ সাধন করে। সর্বোপরি শুধুমাত্র নিজেদের ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর স্বার্থে তারা সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে ডেকে এনে স্বদেশ দখলে ও লুটতরাজে সাহায্য করে। লক্ষ-কোটি স্বদেশবাসীর লাশ মাড়িয়ে তারা সাম্রাজ্যবাদের পুতুল সরকারে অংশ নিয়ে স্বদেশী হত্যায় অংশ নেয় ও গর্ববোধ করে।
২. বাস্তবে ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ হলো- আল্লাহর ইনসাফপূর্ণ বিধানকে দূরে সরিয়ে রেখে ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের লোভ, স্বেচ্ছাচারিতা ও বেআইনী কার্যকলাপের পথে প্রতিবন্ধক কল্যাণকর নীতি আদর্শ থেকে পলায়নের মনোবৃত্তি।........
অসমাপ্ত, চলবে, সাথেই থাকুন
[বই:‘‘ভারত-আওয়ামীলীগ এর ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষের কারন’’ -এম.আবদুল্লাহ....পৃষ্টা:৪০-৪২]
পরের পর্ব:১৯তম পর্ব: Click this link
বিষয়: বিবিধ
৯৩২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন