‘‘ভারত-আওয়ামীলীগ এর ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষের কারন’’ -এম.আবদুল্লাহ....(১৭তম পর্ব)

লিখেছেন লিখেছেন দূর্বল ঈমানদার ০৪ নভেম্বর, ২০১৫, ১২:২০:৫১ দুপুর

আগের পর্ব: ১৬তম পর্ব: Click this link

(পূর্বে প্রকাশিতের পর)

৩. জে. ই. সঞ্জনা নিজে একজন হিন্দু। হিন্দু সম্প্রদায় কর্তৃক মুসলমান এবং অন্যান্য অহিন্দু সমাজকে সামাজিকভাবে বর্জনের বিষয়ে বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন-

“নয়াদিল্লিতে এবং ভারতের অন্যান্য স্থানে কোনো হিন্দু কোনো মুসলমানের কাছে তার বাড়িভাড়া দেবে না। বোম্বাই, যাকে বহুজাতিক নগরী বলে মনে করা হয়, সেখানেও এমন অনেক বাড়ি, এমনকি অনেক এলাকাও পাওয়া যাবে যেখানে কোনো অহিন্দু বিশেষত কোনো মুসলমান-কোনো হিন্দুর কাছে একটি কামরাও ভাড়া পাবে না। বোম্বাই নগরীর কংগ্রেসপন্থী একটি খবরের কাগজের পাতায় একজন ভারতীয় খ্রিস্টানের এই মর্মে অভিযোগ ছাপা হয়েছিল যে, বোম্বের শহরতলি ঘাটকাপার এলাকায় যেন বানিয়া অথবা হিন্দুরাজ কায়েম হয়ে গেছে। এ অভিযোগকারীর একজন বন্ধু যে একজন স্থানীয় হিন্দু ডাক্তারের সহকারীরূপে কাজ করার চাকরি পাওয়া সত্ত্বেও তার সাথে স্থানীয় হিন্দুরা একটি নোংরা কুকুরের প্রতি কেউ যে রকম আচরণ করে, সে রকম আচরণ করছে। অনেক হিন্দু বাড়িওয়ালা তাদের ভাড়া দেওয়ার উদ্দেশ্যে নির্মিত অনেক ঘর খালি পড়ে থাকা সত্ত্বেও তাকে তা ভাড়া দিচ্ছে না। বোম্বের শহরতলি এলাকায় কোনো হিন্দু কোনো অহিন্দুকে তার বাংলো অথবা বাগানবাড়িও ভাড়া প্রদান করে না। হিন্দুরা যেভাবে সবকিছু নিজেদের করায়ত্ত করে রেখেছে- তাতে কি মনে হয় না যে, এসব কিছুই হিন্দু রাজত্ব আগমনের নমুনাস্বরূপ। অন্য একজন দক্ষিণ ভারতীয় খ্রিস্টান যে পনর বছর বার্মায় বসবাস করার পর জন্মভূমিতে ফিরে এসেছে, যে বোম্বের শহরতলি দাদার এবং মাতুঙ্গা- যেখানে অধিকাংশ মাদ্রাজী হিন্দুর বসবাস- সেখানে তার বসবাসের জন্য কামরা ভাড়া নেয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, এলাকার বহু ফ্লাট এবং রুম খালি ছিল- কিন্তু সেগুলো আমার কাছে ভাড়া দেয়া হবে না, কেননা আমি হিন্দু নই। সবসময় একই উত্তর পাওয়া যেতো- না, না, খ্রিস্টান এবং মুসলমানের জন্য নয়। এটা অত্যন্ত অবমাননাকর। এটা ব্যক্তিগতভাবে অপমান করার শামিল।

(J. E. Sanjana, c aste & out caste, Thaker & Co. Bombay, 1964, P.-15)

৪. ভারতের দয়ালু দার্শনিক রাজা হিসাবে আখ্যায়িত ড. রাধাকৃষ্ণ ভারতে বৌদ্ধধর্মের অবলুপ্তির ইতিহাস বর্ণনা করতে গিয়ে লিখেছেন-

“এটা যথার্যভাবেই বলা হয়ে থাকে যে, হিন্দুরা ভ্রাতৃত্বের আলিঙ্গনের আড়ালে বৌদ্ধ ধর্মের কবর রচনা করেছিল। আমরা আগেই লক্ষ্য করেছি, কিভাবে ব্রাহ্মণ্যবাদ বৌদ্ধ ধর্মের অনেক আচার-অনুষ্ঠানকে নিজেদের মধ্যে গ্রহণ করে নিয়েছিল। জীব হত্যাকে বৌদ্ধদের মতো নিন্দনীয় বলে ঘোষণা করেছিল। বৌদ্ধকে ‘বিষ্ণুর অবতার’ বা প্রতিনিধি বলে প্রচার করেছিল। এভাবে তারা বৌদ্ধ ধর্মের উত্তম উপাদানগুলোকে নিজেদের ধর্ম বিশ্বাসের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছিল।

এর উদ্দেশ্য ছিল অত্যন্ত সুস্পষ্ট। হিন্দুরা তাদের অসংখ্য অবতারের মধ্যে বৌদ্ধকে একজন মাত্র অবতার হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। এছাড়া অনেক বৌদ্ধ ধর্মাচারণকে তারা গ্রহণ করেছিল। এ সকল আপাত উদার কর্মের উদ্দেশ্য ছিল- এর দ্বারা আলাদা ও স্বতন্ত্র বৌদ্ধ ধর্মের উচ্ছেদ সাধন। সে লক্ষ্য অর্জনে তারা সম্পূর্ণ সফল হয়েছিল। ড. রাধাকৃষ্ণ অত্যন্ত পাণ্ডিত্যপূর্ণ উক্তিতে এ কাজটিকেই ‘ভ্রাতৃসুলভ আলিঙ্গনের দ্বারা বৌদ্ধ ধর্মের উচ্ছেদ সাধন’ বলে অভিহিত করেছেন।

(Dr. Radha Krisnan, The Vedanta, George & Union, London, 1928, P.P. 36-37)

৫. স্বামী ধর্ম থিরাথজি মহারাজ ব্রাহ্মণ্যবাদ কর্তৃক বৌদ্ধ ধর্মের উচ্ছেদ প্রসঙ্গে বলেন-

“আলোক এবং জ্ঞানের সকল রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হলো। ৮ম থেকে দশম শতকে উত্তর ভারত এক অভেদ্য অন্ধকারে তমসাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এ ভয়াবহ অন্ধকার ঘটনাবলী বর্ণনায় ইতিহাস অসমর্থ। সম্ভবত (শান্তি ও ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের আশঙ্কায়) এ অন্ধকার যুগের ভারতের যুদ্ধের পরবর্তী ঘটনাবলী যেমন ছিল তমসাচ্ছন্ন ঠিক সে রকম তমসাচ্ছন্ন অবস্থায় ব্রাহ্মণ্যবাদ তার কর্তব্য সম্পূর্ণরূপে সমাধা করে। এ সময় বৌদ্ধদের উপাসনালয়গুলো মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়। বৌদ্ধ পুরোহিতদের ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হয় অথবা হত্যা করা হয়। বৌদ্ধ ধর্ম পুস্তকগুলো পুড়িয়ে দেয়া হয়। বৌদ্ধ ধর্মের উচ্ছেদ সাধন এবং জাতীয়তাবাদের (ভারতীয়) কবর রচনা করা হয়।

(Swani Dharma Theerathaji Maharaj, ‘The menac of Hindu Imperialism, Hindu Missionery Society, Lahore, PP. 130-131).....

অসমাপ্ত, চলবে, সাথেই থাকুন


[বই:‘‘ভারত-আওয়ামীলীগ এর ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষের কারন’’ -এম.আবদুল্লাহ.....পৃষ্টা:৩৮-৪০]

পরের পর্ব: Click this link (১৭তম পর্ব)

Good Luck

বিষয়: বিবিধ

১০৯২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

348470
০৪ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:২০
শেখের পোলা লিখেছেন : চলুক৷ সাথে আছি৷
০৫ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০১:১৯
289308
দূর্বল ঈমানদার লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকে ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File