‘‘ভারত-আওয়ামীলীগ এর ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষের কারন’’ -এম.আবদুল্লাহ....(১৬তম পর্ব)

লিখেছেন লিখেছেন দূর্বল ঈমানদার ০৩ নভেম্বর, ২০১৫, ০৩:৪৮:৫৮ দুপুর

আগের পর্ব: আগের পর্ব:১৫ তম পর্ব

হিন্দু মানস- এই প্রবন্ধে আমি নিজের বক্তব্য উপস্থাপনের চেয়ে ঐতিহাসিক তথ্য এবং বিদগ্ধ মনীষীদের বক্তব্য তুলে ধরার প্রয়াস নিয়েছি। কেননা নিজের বক্তব্য তুলে ধরলে আমাকে মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক বলে গালি দেওয়ার সুযোগ করে দেয়া হবে। হিন্দু মানস বুঝতে পারলে আওয়ামী লীগ ও বামপন্থী দলসমূহের মানস ও তাদের কর্মকাণ্ডের কারণ বুঝতে সহজ হবে।

১. গজনীর সুলতান মাহমুদের সভাসদ আলবেরুণী আজ থেকে প্রায় এক হাজার বছর আগে ভারততত্ত্ব নামে একটি বই লিখেছেন। উক্ত বইতে তিনি হিন্দু মানস সম্পর্কে এবং ভারতবর্ষ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তার উক্ত বই থেকে কয়েকটি উদ্ধৃতি নিম্নে উল্লেখ করা হলো-

(ক) যারা হিন্দুধর্মের অন্তর্ভুক্ত ছিল না তাদের সবাই হিন্দুদের ধর্মীয় উন্মাদনার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিল। হিন্দুরা সকল বিদেশীকে ম্লেচ্ছ (মলের চেয়ে তুচ্ছ) অথবা অপবিত্র হিসাবে অভিহিত করতো। তাদের সাথে যে কোনো রকম যোগাযোগ রক্ষা, সম্পর্ক অথবা সংযোগ স্থাপনকে নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করে। বিবাহ অথবা অন্য কোনো আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপন করা দুরে থাক ম্লেচ্ছদের সাথে একত্রে কোথাও উপবেশন, আহার বা কিছু পান করা ছিল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কারণ তারা মনে করতো এ ধরনের মেলামেশা দ্বারা হিন্দুরা নিজেরাই অপবিত্র হয়ে যাবে। বিদেশীদের ধরা বা ছোঁয়া পানি বা আগুন তাদের নিকট অপবিত্র ছিল।

(খ) হিন্দুদের সংকীর্ণতা উদ্ধ্যতের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি লিখেন, “হিন্দুদের বিশ্বাস, তাদের দেশের ন্যায় উৎকৃষ্ট আর কোনো দেশ নেই। শ্রেষ্ঠত্বের দিক থেকে তাদের ধর্মের সাথে আর কোনো ধর্ম তুলনীয় নয়। অন্য কোনো দেশের বিজ্ঞান তাদের দেশের সমপর্যায়ের নয়। এরা উগ্র, অন্তঃসারহীন বোকামিতে মগ্ন, আত্মসর্বস্ব এবং যুক্তিহীনভাবে স্বীয় মতবাদে অনড় । নিজেদের অর্জিত জ্ঞানকে তারা অন্যের গোচরীভূত হওয়ার হাত থেকে অত্যন্ত কৃপণের ন্যায় সংরক্ষণ করে। ...প্রথমদিকে আমি তাদের একজন জ্যোতির্বিদের শিষ্য শ্রেণীভুক্ত হই। এ সময় একজন বিদেশী আগন্তুক হিসেবে তাদের অদ্ভুত প্রচলিত বৈজ্ঞানিক রীতি পদ্ধতির সঙ্গে মোটেই পরিচিত ছিলাম না। এক্ষেত্রে কিছুটা অগ্রগতি সাধনের পর আমি তাদেরকে যেসব মৌলিক উপাদানের উপর এ বিজ্ঞান নির্ভরশীল তা বলতে শুরু করি এবং কোনো সমস্যার যৌক্তিক মীমাংসার উদ্দেশ্যে যুক্তিবিদ্যার কিছু মৌলিক নিয়ম-কানুন এবং গাণিতিক বিশ্লেষণের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি তাদের নিকট উপস্থাপন করতে থাকি। তখন থেকে তারা সবাই ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমার কাছে দলে দলে এসে ভিড় করতে থাকে। তারা এসব জেনে অত্যন্ত বিস্মিত হয় এবং আমার কাছ থেকে এসব শিখে নিতে অত্যন্ত উদগ্রীব হয়ে পড়ে। তারা জানতে চায়- কোন হিন্দু পণ্ডিতের কাছ থেকে আমি এগুলো শিখেছি? প্রকৃতপক্ষে এর মাধ্যমে আমি তাদেরকে দেখাতে সক্ষম হই যে, তারা কোথায় অবস্থান করছে- আর আমার জ্ঞান তাদের জ্ঞানের তুলনায় কতটা শ্রেয়তর। তারা আমাকে একজন যাদুকরের সমতুল্য বলে ধারণা করে নিলো। তাদের নেতৃস্থানীয় লোকদের কাছে তাদের দেশীয় ভাষায় আমার প্রসঙ্গে বর্ণনা করতে গিয়ে বলতে লাগলো যে, যখন সমুদ্রের পানি এসিডের মতো হয়ে যায় তখন তার তুলনায় ভিনেগার মিষ্টি স্বাদসম্পন্ন হয়ে থাকে।

২. নীরদ চন্দ্র চৌধুরী হিন্দু মানস সম্পর্কে বলেছেন-

(ক) হোমার বর্ণিত গ্রিক জাদুকরণী ‘সির্স’ ওডিসিয়াসের সঙ্গীদের যাদুর পানি পান করিয়ে যেভাবে শূকরে পরিণত করেছিল, ভারতে ব্রাহ্মণদের আত্মা ভারতে আগত আগন্তুক ব্যবসায়ী ও বিজেতাদেরকে একইভাবে হিন্দুতে পরিণত করেছে। তা সত্ত্বেও যখন আমি বলি যে, একজন হিন্দু তার দৃষ্টিভঙ্গীতে অত্যন্ত আদিম তখন পাশ্চাত্যের ভারত প্রেমিকরা মন্তব্য করেন যে, আমি হিন্দুদের বিষয়ে কিছুই জানি না।

(খ) বর্তমানকালের হিন্দু নরপশুদের দিক থেকে নিজেদের আড়াল করলে অথবা দূরে সরিয়ে নিলে কোনো ভদ্রতাবোধই আহত হবে না। এই নরপশুরা সবাই বেশ দ্বিধাহীন। নিখুঁত ভদ্রলোক অথবা জ্ঞানী হিন্দুরাও স্বার্থের খাতিরে নিজেদের আকর্ণ বিস্তৃত হাসিতে উদ্ভাসিত হতেও কুণ্ঠিত নন। তাদের মধ্যে এমন কোনো কদর্যের অস্তিত্ব বাদ নেই যা তারা নিজেদের জন্য তৈরি করেনি।

(গ) বর্তমানে এ ধারণা প্রচলিত যে, হিন্দুরা শান্তিপ্রিয় ও অহিংস জাতি এবং এ ধারণা গান্ধীবাদের প্রচারণা দ্বারা শক্তিশালী হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে হিন্দুদের মতো যুদ্ধপ্রিয় এবং রক্তপিপাসু জাতি পৃথিবীতে খুব কমই আছে। আমি জানি আমার একথা কেউ বিশ্বাস করবে না, কিন্তু লেয়ার্ড (খধুধৎফ) কর্তৃক আবিষ্কারের পূর্বে আসিরীয় সভ্যতার বর্বরতার কথা যেভাবে মাটিচাপা পড়েছিল ঠিক তদ্রুপ হিন্দুদের যুদ্ধংদেহী মনোভাব তাদের দ্বারা প্রচারিত অহিংস মতবাদের নিচে সযত্নে লুকিয়ে রাখা হয়েছে।

তথ্যসূত্র :

1. Nirad C. Chowdhuty, The Continent of circe, chatto & windus, London, 1965, P.- 305.

2. Ibid-p-306

3. Ibid-p-94

[বই:‘‘ভারত-আওয়ামীলীগ এর ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষের কারন’’ -এম.আবদুল্লাহ....পৃষ্টা:৩৬-৩৮]

অসমাপ্ত, চলবে, সাথেই থাকুন


পরের পর্ব:

বিষয়: বিবিধ

১০৩৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

348353
০৩ নভেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:০৫
শেখের পোলা লিখেছেন : সাথেই আছি৷ চলুক৷
০৫ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০১:২৩
289312
দূর্বল ঈমানদার লিখেছেন : ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File