‘‘ভারত-আওয়ামীলীগ এর ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষের কারন’’ -এম.আবদুল্লাহ.....৩য় পর্ব

লিখেছেন লিখেছেন দূর্বল ঈমানদার ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৮:৩২:৫৯ রাত

Good Luck আগের পর্ব...(২য় পর্ব)

(পূর্বে প্রকাশিতের পর)

১. ২০১২ সালের নভেম্বরের বেগম খালেদা জিয়ার ভারত সফরকে ব্যর্থ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য প্রচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন । এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বস্থ করার জন্য দিল্লী থেকে ২য়বার বার্তা পাঠিয়ে বলা হয়-‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের জন্মগত সম্পর্ক, এর পরেই অন্যদের সম্পর্ক’ । (সূত্র: দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন, তাং-০৩-১১-১২ইং)

২. ২০০৭ সালে এপ্রিলে রায়রেরিলির এক জনসভায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘আমার পরিবারই পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছে।’ (সূত্র: The Indian Doctrine, M.B.I. Mushi, page-III)

৩. ৩০ নভেম্বর ১৯৭০ সালে জনসভায় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বলেন, ‘ভারত কখনো পাকিস্তানের অস্তিত্বকে মেনে নেবে না।’ (সূত্র: ঐ পৃ-১১২)

৪. পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর শেখ মজিবুর রহমান বিরোধী রাজনীতিতে একটি অবস্থান তৈরী করার জন্য ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার জ্যোতি সেন গুপ্তের সান্নিধ্যে আসেন, যিনি মনোরঞ্জন ধরসহ কতিপয় কংগ্রেস নেতার সঙ্গে মুজিবের পরিচয় করিয়ে দেন । মুজিব তাদের সাথে মিলে পূর্ব পাকিস্তানে ভারতীয় কংগ্রেসের লক্ষ্য হাসিলে কাজ করার ব্যাপারে একমত হন ।

(সূত্র: জ্যোতি সেন গুপ্ত, হিস্ট্রী অব ফ্রীডম মুভমেন্ট অব বাংলাদেশ, ১৯৪৭-৭৩: সাম ইনভলবমেন্ট)

৫. ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারির পর সলিমুল্লাহ মুসলিম হল থেকে বিপুল পরিমাণ ধ্বংসাত্মক প্রচারপত্র উদ্ধার করা হয় । নারায়ণগঞ্জের মিছিলে জয়হিন্দ এবং যুক্ত বাংলা চাই শ্লোগান দেয়া হয় । নবগঠিত আওয়ামী লীগের নেতা (এমএলএ) যিনি হিন্দু মাড়োয়ারী ব্যবসায়ীর সাথে পাট ব্যবসায়ীর সাথে পাট ব্যবসায়ে সম্পৃক্ত ছিলেন তাঁর (ওসমান আলীর)বাসগৃহ থেকে ধ্বংসাত্মক লিফলেট উদ্ধার করা হয এবং একই স্থান থেকে ভারতীয় হিন্দু যুবকদের গ্রেফতার করা হয় । একই রূপ ভারতীয় হিন্দু যুবক গ্রেফতার হয় চট্টগ্রাম, রাজশাহী এবং আরো কিছু স্থানে । (সূত্র: ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, বি আল হেলাল, পৃ:৪৪৯-৫০)

৬. ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠনের মূল কাজটি সম্পাদন করে কমিউনিস্ট পার্টি । প্রকাশ্য রাজনীতিতে কার্যতঃ নিষিদ্ধ এই পার্টি যুক্তফ্রন্ট গঠনে প্রধান ভূমিকা পালন করে । বামধারার ছাত্র ইউনিয়ন, গণতন্ত্রী দল ও আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে কর্মরত বামরাই এতে প্রধান ভূমিকা পালন করে । তৎকালে হিন্দুস্থানে কমিউনিস্টদের উপর দমন-পীড়ন অব্যাহত থাকলেও দিল্লী পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্টদের পৃষ্টপোষকতা দান করত শুধুমাত্র পাকিস্তানকে ধ্বংস করার জন্য । কমিউনিস্ট নেতৃত্বের মূল কাঠামোর মূল কাঠামোয় হিন্দু নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত থাকার কারণে ভারতীয় সাহায্য তাদের জন্য অবারিত ছিল । (সূত্র: মোহাম্মদ হান্নান, বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস, পৃ-২৫)

৭. শেরেবাংলা একে ফজলুল হক যুক্তফ্রন্ট গঠনের বিরোধী ছিলেন । ছাত্ররা এক বিরাট বিক্ষোভ মিছিল সংগঠিত করে তাঁর বাসভবন ঘেরাও করে রাখে । শেষ পর্যন্ত ছাত্রদের চাপে রাজি হলে তাঁকে ছাত্ররা কাঁধে নিয়ে উল্লাস করতে করতে ফিরে আসে । (প্রাগুক্ত পৃ:২৫)

দেশপ্রেমিক ইসলামী শক্তি ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত করলেও পরবর্তীতে এর নিয়ন্ত্রণ এসে যায় কমিউনিস্টদের হাতে । ’৫২ সালের পর তারা রাজনীতি ও সাংস্কৃতির অঙ্গনে পুরোপুরি সক্রিয় হয়ে উঠে । প্রথমতঃ তারা মুসলিম জনমানসকে ইসলামী সংস্কৃতি থেকে তথাকথিত বাঙালি (হিন্দু)সংস্কৃতি অভিমুখে নিয়ে যায় স্মৃতিস্তম্ভ, শহীদ মিনার স্থাপন করে এবং হিন্দুয়ানী কায়দার বিভিন্ন দিবস পালন করে । ২য় পর্যায়ে মুসলিম ঐক্যকে দ্বিধাবিভক্ত করার জন্য গঠন করে যুক্তফ্রন্ট । এভাবে তারা পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আদর্শিক চেতনা থেকে জনগনকে বিচ্ছিন্ন করে ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজে লাগায় ।

৮. স্বাধীন হিন্দুরাষ্ট্র তৈরির চেষ্টা আজকের নয, পঞ্চাশের দশকেই হযেছিল এর ব্লু প্রিন্ট । ‘বঙ্গভূমি ও বঙ্গসেনা’ পুস্তিকায় ডা. কালিদাস বৈদ্র নিজেই স্বীকার করেছেন যে, ১৯৬২ সালে তারা তিন জন যুবক কলকাতা থেকে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানে যান এবং ‘সংখ্যালঘুদের মুক্তির জন্য ব্যাপক কর্মতৎপরতা চালান ।’ গোপনে স্বাধীনতা ও তার সঙ্গে স্বতন্ত্র বাসভূমির কথাও প্রচার করেন । ঐ তিন যুবক হলো- কালিদাস বৈদ্য, চিত্তররঞ্জন ছুতার ও নীরদ মজুমদার । … কলিদাস বৈদ্য ও চিত্ত সুতার তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে এবং বাংলাদেশে বহুকাল ভারতের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন । … মুজিব সরকারের উপর প্রভাব খাটানোর জন্য চিত্ত সুতারকে ভারতত সরকার চিরকাল ব্যবহার করেছে । এখনো ভারত সরকারের তরফে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন চিত্তবাবু । (সূত্র: একশ’ বছরের রাজনীতি: আবুল আসাদ )

৯. পাকিস্তানের জন্মের প্রায় শুরু থেকে ভারতের ষ্টেটম্যান পত্রিকার ঢাকা অফিসে দায়িত্বপালনকারী ভারতীয় সাংবাদিক জ্যোতিসেন গুপ্ত স্বীকার করেছেন যে, শেখ মুজিবর রহমান সহ তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের বহু মহলের সাথে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার যোগাযোগ ছিল । (সূত্র: বাংলাদেশ মারাত্মক অপপ্রচারণা ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের শিকার, এমটি হোসেন, পৃ-৯৮)

Good Luckপরের পর্ব, (৪র্থ পর্ব)

(চলবে, সাথেই থাকুন )

বিষয়: বিবিধ

১১৬৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

340107
০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ০২:০৬
কুয়েত থেকে লিখেছেন : ভালো লাগলো চালিয়ে যান অনেক অনেক ধন্যবাদ
০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৫:৫৬
281537
দূর্বল ঈমানদার লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File