ইসলামী ব্যাংক এবং ইসলামী শরীয়াহ বোর্ড
লিখেছেন লিখেছেন দূর্বল ঈমানদার ১৯ মার্চ, ২০১৪, ০৫:১৪:০৬ বিকাল
সেদিন গেলাম বন্ধু কিবরিয়ার অফিসে ।
দেখি বন্ধু মুখ গোমড়া করে বসে আছে । চেহারায় রাগি রাগি ভাব ।
কিরে দোস্ত, এমন মোড় নিয়েছিস কেন ? কোন সমস্যা ?
কোন জবাব নেই !!
মন খারাপ ?
হ্যাঁ !
কেন ?
বলতে পারবো না ।
ওমা মন খারাপ করে বসে থাকবি আর বলতে পারবি না, এটা কেমন কথা ? আমার উপর মন খারাপ নাকি ?
না ।
তাহলে কার উপর মন খারাপ ?
ইসলামী ব্যাংকের উপর ।
কস কি ? তোর মন খারাপ ইসলামী ব্যাংকের উপর ? অষ্টম আশ্চর্য মনে হচ্ছে !
কেন তোর অষ্টম আশ্চর্য মনে হচ্ছে কেন, তুই তো ইসলামী ব্যাংকের নাম শুনলেই এরকমই বলবি ।
আবে শালা, রাগ করলি তুই আর দোষ চাপলো আমার উপর ! আচ্ছা, ঘঠনা কি বল, তুই তো ইসলামী ব্যাংকের ইনভেষ্টম্যান্ট পার্টি ।
সমস্যা তো সেখানেই ।
খুলে বল ।
কোন কাজ করতে গেলেই বলে শরীয়াহ বোর্ড ।
যেমন ।
সেদিন আমাকে ইনভেষ্টম্যান অফিসার ডেকে বললেন- কাছাকাছি আপনার কয়েকটি ডিল আছে, আগে থেকে এডজাষ্ট না করলে তখন আসি বিপদে পড়বেন ।
তারপর ?
গতমাসে খুলনা থেকে আমি মাল এনেছিলাম অর্ধেক বাকিতে । ঐ পার্টির একাউন্ট অন্য ব্যাংকে । আমি পার্টিকে বললাম যে ইসলাম ব্যাংকের হলে আমার জন্য ভাল হয় ।
তো পার্টি আমাকে একটি ইসলামী ব্যাংকের একাউন্ট জানাল, বাট একাউন্টটি অন্য নামে । মানে যে নামে আমি মাল এনেছি সে নামে একাউন্টটি নেই ।
আচ্ছা । তারপর ? আমি বললাম ।
কিবরিয়া বলল- ইসলামী ব্যাংকে গিয়ে বিষয়টি আমি উনাদের জানালাম । বললাম যে পার্টিকে আমি ৫০ হাজার টাকা দিব । সেজন্য আমার লোন একাউন্টে ৫৫ হাজার টাকা জমা দিব ।
এতে আমার সুবিধা যেটা হবে তা হচ্ছে আমার আগের লোনে টাকা এডজাষ্ট হয়ে আজকে আরেকটি ৫০ হাজার টাকার নতুন ডিল হবে । এতে আমার আগে নেয়া লোন ওভার ডিউ হওয়া থেকে রক্ষা পাবে এবং আমি ভাল পার্টি হিসেবে গন্য হব ।
তার পর ?
ইসলামী ব্যাংকের অফিসাররা বেকে বসলো আমার প্রস্তাবে ।
কেন ? তুই তো যা নিতে চেয়েছিস তার চেয়ে আরো ৫ হাজার টাকা বেশী জমা দিতে চেয়েছিস । তবু ওরা বেকে বসার কারন কি ?
কিবরিয়া বলল- কারন হচ্ছে শরীয়াহ্ ।
শরীয়াহ বোর্ড নাকি বলবে, এক নামে মাল এনেছে অন্য নামে টাকা ঢুকাইছে কেন ?
তুই বুঝিয়ে বলিস নি ?
বলিনি মানে, ওদেরকে সব ডকুমেন্টস দেখিয়েছি ।
ওরা বিশ্বাস করেনি ?
ওরা বিশ্বাস করেছে কিন্তু শরীয়াহ বোর্ডকে নাকি বুঝানো যাবে না ।
ঠিকই তো আছে, এখানে ওদের দোষ কোথায় ?
তোর মুখে বলছিস এখানে ওদের দোষ কোথায় ?
হ্যাঁ বলছি, এখানে ইসলামী ব্যাংকের কোন দোষ নেই ।
আচ্ছা বুঝলাম ইসলামী ব্যাংকের কোন দোষ নেই। তাহলে আমার কয়েকটি প্রশ্নের জবাব দেয় ।
শালা, ইসলামী ব্যাংকের সেবক হচ্ছিস তুই, আর তোর ব্যাংকের হয়ে জবাব দিতাম আমি ?
তবুও আমার মনটাকে একটু শান্ত কর ।
আচ্ছা বল ।
কিবরিয়া আবার বলল- আমি যে মাল কিনেছি তা সত্য ।
মানলাম, তারপর ?
আমি যে যার কাছ থেকে মাল কিনেছি তাকেই টাকা দিচ্ছি তাও সত্য, যদিও টাকাটা সে ইসলামী ব্যাংকে অন্য নামের একাউন্টে জমা নিচ্ছে ।
আচ্ছা, তারপর ?
এই সত্য জিনিস গুলো যে বোর্ড মানতে পারবে না তাহলে এটা শরীয়াহ বোর্ড হবে কেন ?
তো কি করতে বলছিস ?
এখানে ইসলামী ব্যাংক দায়িত্বরত অফিসার আমার পার্টির সাথে সরাসরি মোবাইলে কথা বলে আমার সত্যতা যাচাই করে নোট করে রাখতে পারতেন ।
পরে অডিট যখন আসবে তখন ঐ নোটটা দেখলেই যথেষ্ট ছিল না ?
ছিল ।
এখানেই আমার বিরক্তির কারন ।
বিষয়: বিবিধ
১১৯২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন