স্রষ্টা কি নারী বিরোধী!!

লিখেছেন লিখেছেন ফাহিম মুনতাসির ০৮ মার্চ, ২০১৪, ১২:৪৪:১৮ দুপুর

নারী দিবসে নারীরা চাই তাদের অধিকার! কেন ইসলাম কি নারীদের অধিকার দেয় নি!! আচ্ছা আপনি একটা খসড়া দেখুন ;

যারা বলে থাকেন স্রষ্টা বলে যদি কোন সত্ত্বা থেকেও থাকেন, তবে সেই সত্ত্বা নারী বিরোধী।

তাহলে চলুন! প্রমাণ করি -ওদের এ বক্তব্য সম্পূর্ণ ভ্রান্ত।

০১.

স্রষ্টা তার কালামে "পুরুষ " এনেছেন ২৪ বার। পক্ষান্তরে " নারী " শব্দটিও এনেছেন ২৪ বার।

০২.

কোরআনে পুরুষ নামে যেমন সূরা আছে (সূরা মুহাম্মদ, সূরা ইব্রাহিম) তেমনি নারীর নামেও সূরা আছে (সূরা মারিয়াম)। আরো মজার ব্যাপার কোরআন মাজিদে "সূরাতুন নিসা "(নারীর সূরা) নামে সূরা আছে, কিন্তু এইভাবে সূরাতুল রিজাল (পুরুষদের সূরা) নামে কোন সূরা নাই।

০৩.

স্রষ্টা অতি মূল্যবান সোনা ও রেশম -এর ব্যবহার নারীর জন্য বৈধ করেছেন পুরুষের জন্য নয়।

০৪.

স্রষ্টা কোরআনে সরাসরি আমাদের আদি পিতা হযরত আদম (আঃ) এর কথা উল্লেখ করেছেন তিনি নিষিদ্ধ ফল খেয়ে অপরাধ করেছেন, কিন্তু স্রষ্টা ইশারা ইঙ্গিতেও তাঁর স্ত্রী হাওয়া কে দায়ী করেননি। (সূরা ত্ব -হা_১২০)

০৫.

অজ্ঞতাবশতঃ বলা হয় "স্বামীর পদতলে স্ত্রীর বেহেস্ত " এটি আল হাদীস নয়, জাল হাদীস। বরং আছে মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেস্ত। নারী জাতির মুক্তির এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য এই ছোট্ট হাদিসটিই যথেষ্ট যদি তুমি ইসলাম বিশ্বাস কর।

০৬.

নাস্তিকরা আরও একটি হাদিস উপস্থাপন করে -আল্লাহ ছাড়া যদি অন্য কাউকে সিজদা করার নির্দেশ দেওয়া হতো, তবে স্ত্রীকে বলা হতো স্বামীকে সিজদা করতে। দেখুন! এই হাদীসে "যদি " শব্দ দিয়ে বলা হয়েছে। অথাৎ বাস্তবে এটি ঘটের। যেমন, যদি আমার দুটি পাখা থাকতো, তবে সেই পাখা দিয়ে আমে উড়তে পারতাম -এতে কি আমার পাখা সত্যি সত্যি হয়ে গেছে?

০৭.

পবিত্র কোরআনে সূরা লোকমানের ১৩ নং আয়াতে স্রষ্টা ঘোষণা করেনঃ "আমি মানুষকে মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মা গর্ভে ধারণ করেছে কষ্টের পর কষ্ট করে, আর তার (দুধ ) ছাড়ানো হয় দুবছরে।"

এখনে স্রষ্টা পিতার কথা বলেছেন মাতার সাথে মিলিয়ে একবার। এরপর শুধু মাতার কথা বলেছেন তিন বার।

কীভাবে তিন বার?

কষ্টের পর কষ্ট অথাৎ

গর্ভ ধারণের দশ মাসের কষ্ট,

প্রসব বেদনার কষ্ট,

পূর্ণ দুই বছর দুধ পান করানোর কষ্ট।

দেখুন! এই তিন গুণ কষ্টের কারণে মায়ের মর্যাদাও ইসলাম তিন গুণ বেশি দিয়েছেন।

০৮.

আমাদের সমাজে কিছু জ্ঞান পাপী নাস্তিক আছে যারা বলে ইসলাম নারীকে ঠকিয়েছে। তারা উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করেন পবিত্র কোরআনের সূরা নিসার ১১ নং আয়াতটি "একজন পুরুষের জন্য দুইজন নারীর অংশের সমান " যদিও এ নির্দেশের আলোকে ছেলে পায় মেয়ের দ্বিগুণ। তথাপি স্রষ্টা কিন্তু নারীকে ঠকাননি।

কিভাবে? বলছি …

আপনি নিশ্চয়ই Gross income & Net income এর কথা জানেন।

[১]Gross income : যে Income এ অন্যের অধিকার আছে।

[২] Net income : যে Income এ অন্যের অধিকার নেই।

এখন পরিবার হতে ভাই যে অংশ পেল, সেটি হচ্ছে Gross income. অথাৎ এতে অধিকার আছে নিজের স্ত্রীর, সন্তানের, বুড়ো মা -বাবার, বুড়ো দাদা দাদীর, এবং অন্যান্য আত্নীয়স্বজনের, এমনকি দুঃখী মানুষেরও।

পক্ষান্তরে বোনের অংশ হচ্ছে Net income. কারণ এতে কারও অধিকার নেই ; এমনকি তা সে নিজের জন্যও খরচ করতে বাধ্য নয়। কারণ বোনের ভরণপোষণের সব দায়িত্ব বোনের স্বামীর। এখনে শেষ নয় বোন আবার স্বামীর বাড়িতে গিয়ে মোহরানার টাকা পাবে এবং স্বামী সেই টাকা দিতে বাধ্য। এবং সে তার পাপ্ত সকল টাকা হচ্ছে করলে সংসারে খরচ করবো নচেৎ না এই ব্যপারে তাকে কেউ জোর করতে পারবে না। দেখুন বিয়ের পর বোন যখন স্বামীর বাড়িতে চলে যায় তখন তার স্বামীর বাড়িই হয় স্থায়ী বাড়ি, পিতার বাড়ি নয়। তা সত্ত্বেও পিতার বাড়ি হতে পাচ্ছেন তার অর্ধেক অংশ এবং স্বামীর সম্পতিতেও তিনি একটা অংশ পান।

আর ভাই বেচারা! তিনি শ্বশুরবাড়ি হতে কোন সম্পত্তি পাওয়ার প্রশ্নই আসে না। অথচ বোন কিন্তু শ্বশুরবাড়ি ও পিতার বাড়ি হতো অংশ পাচ্ছেন এবং তার সম্পত্তি সে একমাত্র নিজেই ভোগ করার অধিকার রাখে অন্য কেউ নয়।

তার পরও কি আপনি বলবেন ইসলাম ধর্মে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়নি? ইসলাম নারীকে যে মর্যাদা,সম্মান, এবং অধিকার দিয়েছে অন্য কোন ধর্মে আজ পর্যন্ত দিতে পারেনি এবং পারবেও না।

আমি চেলেঞ্জ করছি পারলে আপনি নারীর মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় নতুন একটি খসড়া প্রণয়ন করে দেখান যতটা ইসলাম দিয়েছে ততটা অন্য কেউ দিতে পারে কি না।

বিষয়: বিবিধ

১৩৩৪ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

188858
০৮ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০১:২৫
বিন হারুন লিখেছেন : তাইতো মায়ের পদ তলে সন্তানের বেহস্ত
188911
০৮ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৪:১৪
সন্ধাতারা লিখেছেন : নারীদের জীবন ইসলামের আলোয় উদ্ভাসিত হোক, অপূর্ব লিখনির জন্য অনেক অ-নে-ক দোয়া ও শুভেচ্ছা রইলো।
০৮ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:৩৬
140174
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : চমত্কার লিখেছেন ,যারা নারী অধিকার চায় বলে চিল্লায় আসলে তারা কি চায় আমরা জানি।
০৮ মার্চ ২০১৪ রাত ০৯:০৫
140253
ফাহিম মুনতাসির লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ Happy
188938
০৮ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৭
আনিসুর রহমান লিখেছেন : Thanks for your beautiful post. I think your informative and analytical discuss are very helpfull for those whom are looking answer about the real position of Women in Islam. Your post also inform us, the islamic police for woman are the best policy then all others policy exist in this world,
০৮ মার্চ ২০১৪ রাত ০৯:০৬
140254
ফাহিম মুনতাসির লিখেছেন : Thanks
188951
০৮ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৩
ইবনে হাসেম লিখেছেন : পোস্টটি বেশ তথ্যবহুল এবং যুক্তিসঙ্গত হয়েছে, তবে উপস্থাপনায় আরো একটু যত্নশীল হতে পারলে আরো সুন্দর হতে পারতো। প্রিয়তে রাখছি এবং শেয়ার করছি। ধন্যবাদ।
০৮ মার্চ ২০১৪ রাত ০৯:০৬
140255
ফাহিম মুনতাসির লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ, বারাকাল্লাহ।
189022
০৮ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:৩৩
সজল আহমেদ লিখেছেন : যারা বলে ইসলাম নারীকে ঠকিয়েছে তারা জ্ঞানপাপী।
০৮ মার্চ ২০১৪ রাত ০৯:০৭
140256
ফাহিম মুনতাসির লিখেছেন : আমার দৃষ্টিতে তাই।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File