দুগ্ধপোষ্য শিশুর মা আটক জামায়াত নেতাকে ধরতে র্যাবের নিষ্ঠুর কৌশল!
লিখেছেন লিখেছেন হরতাল ২৪ মার্চ, ২০১৩, ০৭:৫২:০২ সকাল
শিশুটির বয়স এক বছর। তাকে বাসায় রেখে চিকিৎসক মা গতকাল গিয়েছিলেন কাশিমপুর কারাগারে আটক তার অসুস্থ পিতাকে দেখতে। পিতা রাজশাহীর জনপ্রিয় জামায়াত নেতা আতাউর রহমান। তার সাথে সাাৎ শেষে ডা: জাকিয়া ফারহানা যখন বাসায় ফিরছিলেন তখন পথ থেকেই তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-১ এর সদস্যরা। গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় অজ্ঞাত স্থানে। সেখানেই র্যাবের সদস্যরা ডা: ফারহানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। একটি দুগ্ধপোষ্য শিশুর জীবন বিপন্ন করে তার মাকে আটক করার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিশুটির পিতা জামায়াতের আরেক নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ একজন পলাতক আসামি। আর তাকে ধরতেই এই অমানবিক ও নিষ্ঠুর পন্থা গ্রহণ করেছে তারা। ডা: জাকিয়ার মাধ্যমেই তারা শফিকুল ইসলাম মাসুদকে গ্রেফতারের অভিযান চালাচ্ছে। এ ঘটনায় মানবাধিকার সংস্থা ও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে তীব্র ােভের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডাক্তার জাকিয়া ফারহানা গতকাল কাশিমপুর কারাগারে আটক তার পিতা জামায়াতে ইসলামীর রাজশাহী মহানগরীর আমির আতাউর রহমানকে দেখার জন্য যান। সেখান থেকে ফেরার পথে র্যাব সদস্যরা তাকে আটক করে। গতকাল সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তাকে র্যাব সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে র্যাবের প থেকে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ডাক্তার জাকিয়া ঢাকা মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের স্ত্রী। জাকিয়ার পিতা আতাউর রহমানকে সম্প্রতি র্যাব আটকের পর মিরপুর থানায় সোপর্দ করে। সেখানে পুলিশ তাকে রিমান্ডে নিয়ে ব্যাপক নির্যাতন করে। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার চিকিৎসক কন্যা মাঝে মধ্যেই পিতাকে দেখতে কারাগারে যান। তবে জাকিয়াকে কোথায় রাখা হয়েছে, কেন তাকে আটক করা হয়েছে সে সম্পর্কে র্যাবের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আনুষ্ঠানিকভাবে র্যাবের কোনো কর্মকর্তা এই আটকের বিষয়টি স্বীকারও করেননি।
এ দিকে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ এক বিবৃতিতে এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রাজশাহী মহানগরী আমির, বীর মুক্তিযোদ্ধা বিশিষ্ট শিাবিদ আতাউর রহমান কিছু দিন ধরে কারাগারে বন্দী। দেশবাসী অবগত আছেন তিনি চিকিৎসার জন্য রাজশাহী থেকে ঢাকায় আসছিলেন। পুলিশ গত ১৯ ফেব্র“য়ারি কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে তাকে গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠায়। তিনি ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ ও হৃদরোগে ভুগছেন। তার প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহের জন্য তার কন্যা ডা: জাকিয়া ফারহানা কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে পিতার সাথে সাক্ষাৎ করতে যান। ওষুধপত্র প্রদান শেষে প্রত্যাবর্তনের সময় সরকার তাকে গ্রেফতার করে। একজন বন্দী রাজনৈতিক নেতার কন্যাকে গ্রেফতার করা সম্পূর্ণ অমানবিক ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
ডা: জাকিয়া ফারহানা এক শিশুসন্তানের মা। শিশুটির বয়স এক বছর। শিশুটিকে মায়ের বুকের দুধ খেয়ে বেঁচে থাকতে হয়। এমতাবস্থায় সরকার ডা: জাকিয়া ফারহানাকে গ্রেফতার করে ওই শিশুটির মাতৃ অধিকারের ওপর আঘাত করেছে। এটা নারী শিশু আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ডা: জাকিয়া ফারহানাকে গ্রেফতারের মাধ্যমে সরকার শিশুটিকে মায়ের সাহচার্য থেকে বঞ্চিত করে সম্পূর্ণ অন্যায় ও গর্হিত কাজ করেছে। সরকারের স্বৈরাচারী আচরণের হাত থেকে শিশু, নারী, বৃদ্ধ কেউই নিরাপদ নয়। তিনি বলেন, আমি সরকারের আমানবিক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে ডা: জাকিয়া ফারহানার মুক্তি দাবি করছি এবং দেশবাসীকে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী এ স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে চলমান গণ-আন্দোলন আরো বেগবান করার আহ্বান জানাচ্ছি। http://www.dailynayadiganta.com/new/?p=143728
বিষয়: রাজনীতি
১৬০৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন