সেই কন্ঠস্বর - ১

লিখেছেন লিখেছেন চির উন্নত মম শির ০৩ মার্চ, ২০১৩, ০৭:৩৭:১৯ সকাল

১৯৯১ সাল। আমি তখন ক্লাস এইটে। স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর বি. এন. পি. সরকার ক্ষমতায়। একদিন আমাদের স্কুলের মাঠে দেশের এক প্রখ্যাত আলেমের আসার কথা। আমাদের স্কুলের মাঠটি বিশাল। আর ঐতিহ্যবাহী মাঠ হওয়ার দরূন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জনসভার আয়োজন হতো এবং এখনো হয়।

তো এতদিন এই আলেমের কথা শুধু শুনে আসছিলাম কখনো দেখার সৌভাগ্য হয় নি। তাই আমরা বন্ধুরা সিদ্ধান্ত নিলাম জনসভায় যাবো। আর যেহেতু এই সভাটা একজন আলেমের, আম্মা ও তাই বাধা দেন নি। আমরা সবাই যথাসময়ে হাজির। আমাদের স্কুলের মাঠ লোকে লোকারন্য। অবশেষে আমাদের অপেক্ষার পালা শেষ হলো। যথাসময়ে উনি আসলেন। বক্তৃতা শুরু করলেন। আমরা তার বক্তৃতা শুনতে লাগলাম। তার বক্তৃতার এক সন্মোহনী শক্তি আছে। আমরা মনযোগ দিয়ে শুনছিলাম। জনসভার বেশিরভাগই ছিল ছাত্র মূলত: স্কুল ছাত্র। উনি প্রায় ৩০ - ৪০ মিনিট বক্তৃতা করলেন । না, কোনো রাজনৈতিক বক্তৃতা ছিল না সেটা। বিষয়বস্তু ছিল মূলত: নামাজের গুরুত্ব আর ছাত্রদের জন্য উপদেশবাণী। কোরআন - হাদিস থেকে বিভিন্ন রেফারেন্স দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন একজন মুসলিমের জীবনে নামাজের কত গুরুত্বপুর্ণ। আমরা যে নামাজ পড়তাম না তা নয়, নিয়মিতই নামাজ পড়তাম কিন্তু নামাজের যে এত গুরুত্ব সেটা তো তখন জানা ছিল না। মাঝে মাঝে আলস্যে বা খেলার ছলে হয়তো সময়মত নামাজ পড়া হতো না। আমি যারপরনাই মুগ্ধ হলাম মাওলানা সাহেবের বক্তৃতায়। আর বুঝলাম মানুষ কেন মাওলানা সাহেব কে এত ভক্তি -শ্রদ্ধা করে।

বক্তৃতা শেষ করে উনি উপস্হিত সবাইকে এই মর্মে শপথ করার জন্য বলেন যে জীবনে কোনো দিন ফরজ নামাজ ত্যাগ করবো না। দুহাত তুলে শপথ নিলাম। সেই থেকে নামাজকে গুরুত্ব দিতে শিখলাম আর পারতপক্ষে কোনোদিন নামাজ ছেড়ে দেই নি আল্লাহর রহমতে। সেই মানুষটির জন্য শ্রদ্ধা আরো বেড়ে গেল। আল্লাহর রহমতে তাঁর সেই বক্তৃতা আমার জীবনে অনেক বড় একটি পরিবর্তন এনে দিল।

সেই মহান মানুষটির নাম ব্যাক্ত না করলে আমার এ লেখা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। তিনি হচ্ছেন এদেশের সব ঈমানদার মুসলিমের প্রিয় কোরআনের বুলবুলি নামে খ্যাত আল্লামা দেলওয়ার হোসেন সাঈদী। আর আজ এদেশের সরকার সেই আলেমে দ্বীন - মুফাসসিরে কোরআন কে বিনা অপরাধে ফাঁসিতে ঝুলাতে চায়। উলামায়ে দ্বীন যাঁদেরকে নবী-রাসুলের উত্তরাধিকারী বলা হয়, আজ তাঁরা জুলুমের শিকার। এদেশের ঈমানদার মুসলিমরা আজ জুলুম - হত্যার শিকার। আল্লাহপাক আমাদেরকে ধৈর্য ধারণ করার তৌফিক দিন, দৃঢ় ঈমান দিন, মুসলমানদেরকে জালেমদের উপর জয়ী করুন।

বিষয়: বিবিধ

১২৮৫ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

277045
২২ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০২:২৪
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : আমি উনাকে প্রথম দেখেছিলাম ১৯৯২ সালে ক্লাস নাইনে থাকা অবস্থায়। স্থানঃ গুনবতী কলেজ মাঠ, চৌদ্দগ্রাম,কুমিল্লা। আল্লাহ উনাকে হেফাজত করুন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File