স্বপ্নের সাথে কি ইস্তেখারার কোনো সম্পর্ক আছে?
লিখেছেন লিখেছেন তাইছির মাহমুদ ১১ নভেম্বর, ২০১৮, ০১:৪৭:৩৩ দুপুর
সুরা ইউসুফ নিয়ে আলোচনা করছিলাম। আলোচনা করছিলাম, সুরার মুল কাহিনী যাকে নিয়ে, সেই ইউসুফ নবীর কথা। তাঁর একটি স্বপ্ন ছিলো গত পর্বের আলোচনার বিষয়বস্তু। এই বিষয়ে আরো কিছু আলোকপাত করতে চাই। লিখতে চাই- স্বপ্নের সাথে ইস্তেখারার সম্পর্ক নিয়ে। স্বপ্ন দেখার সাথে কি ইস্তেখারার কোনো সম্পর্ক আছে?
অনেকেই মনে করেন স্বপ্নের সাথে ইস্তেখারার একটি সম্পর্ক আছে। ইস্তেখারা করতে হলে স্বপ্ন দেখতে হবে। অর্থাৎ যখন কেউ ইস্তেখারা করবে তখন তাকে তার কাংখিত বিষয়টি স্বপ্নে দেখানো হবে। এটাই আজকের আলোচ্য বিষয়।
স্বপ্নের সাথে ইস্তেখারার কোনো সম্পর্ক আছে কিনা তা বুঝানোর জন্য ইস্তেখারা কী তার একটি ব্যাখা দেয়া প্রয়োজন।
ইস্তেখারা হচ্ছে কোনো কাজ শুরু করার আগে আল্লাহর সাহায্য চাওয়ার জন্য দুই রাকাত নামাজ পড়া। যেমন আপনি আগামীকাল কোথাও কোনো কাজে যাবেন। আপনি যাবেন কিনা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারছেন না। তখনই আপনি ইস্তেখারা করতে পারেন । অর্থাৎ আপনি মনোযোগের সাথে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বেন। যেকোনো সময়, যেকোনো জায়গায়, যেকোনো অবস্থায় আপনি ইস্তেখারা করতে পারেন । আপনি আকাশে থাকেন, পাতালে থাকেন- সেটা কোনো বিষয় নয়।
সাধারণ নফল নামাজের মতোই ইস্তেখারার নামাজ। শুধু মনে মনে নিয়ত বা উদ্দেশ্য থাকবে আপনি ইস্তেখারার নামাজ পড়ছেন। একটি বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য আল্লাহর সহযোগিতা চান। নামাজ শেষে আপনি দোয়া করবেন। দোয়ায় আপনি বললেন, আল্লাহ আমি এই কাজটি করতে চাই। একমাত্র তুমিই জানো আমার জন্য এই কাজ মঙ্গলজনক হবে না অকল্যানকর হবে। যদি আমার জন্য তা মঙ্গলজনক হয় তাহলে তুমি আমার এই কাজটি সহজ করে দাও। নতুবা তুমি তা থেকে আমাকে বিরত রাখো। আরবী দোয়া আছে। আরবীতে করতে পারলে ভালো। নতুবা বাংলায়ও করা যাবে। কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কারণ আল্লাহ তায়ালা সব ভাষাই বুঝতে পারেন।
অনেকের মধ্যে একটি ধারণা আছে যে, রাতে ইস্তেখারার নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে পড়তে হবে। তখন স্বপ্নের মধ্যে দেখানো হবে আপনি যে কাজ করতে চান তা আপনার জন্য কল্যানকর হবে কিনা। আসলে এটি সম্পুর্ণ ভ্রান্ত একটি ধারণা। ইস্তেখারার সাথে স্বপ্ন দেখা না দেখার কোনো সম্পর্ক নেই।
ইস্তেখারার নামাজ পড়ার পর আপনার মনই বলে দিবে আপনি কাজটি করবেন কিনা। মন যেদিকে সায় দেয়, সেদিকেই এগুবেন। আপনার জন্য যদি কল্যাণকর না হয় তাহলে আল্লাহ তায়ালাই আপনাকে সে কাজ থেকে বিরত রাখবেন। কারণ আপনি তাঁর কাছে সাহায্য চেয়েছেন।
দেখা যাবে আপনি কোনো একটি যাত্রার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন। স্টেশনে পৌঁছতে দেরী হওয়ায় ট্রেন অথবা প্লেন মিস করে ফিরে এসেছেন। হতে পারে আল্লাহ তায়ালা চাননি আপনি ট্রেনে চড়ে যাত্রা করেন। তাই তিনি আপনাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। হয়তো ওই ট্রেন যাত্রায় আপনার জন্য কোনো অকল্যাণ অপেক্ষা করছিলো।
কিন্তু এই ইস্তেখারাকে কেন্দ্রকে কিছু আলেম নামধারী ব্যক্তি ব্যবসা করে থাকেন। তাঁরা মানুষের কাছ থেকে আর্জি বা ফি নিয়ে রাতে ইস্তেখারা করে সমস্যার সমাধান বাতলে দেন। এগুলো সম্পুর্ণর্ ভাওতাবাজী, প্রতারণা। কেউ কারো পক্ষে ইস্তেখারা করা, কিংবা স্বপ্ন দেখে তার সমস্যার পথ বাতলে দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। ইস্তেখারা নিয়ে ব্যবসার ব্যাপারে আগামী পর্বে আলোচনা হবে। ততক্ষণ পর্যন্ত মনির্ং তাফসীরের সঙ্গে থাকুন। আপনার মতামত দিন।
তাইসির মাহমুদ : লন্ডন, যুক্তরাজ্য : ১১ নভম্বর ২০১৮
বিষয়: বিবিধ
১৩৩৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন