কেন এই "মনির্ং তাফসীর"?
লিখেছেন লিখেছেন তাইছির মাহমুদ ০৬ নভেম্বর, ২০১৮, ০২:৪৯:১১ দুপুর
অনেকেই "মনির্ং তাফসীর" পড়েন। পথিমধ্যে দেখা হলে বলেন। প্রশংসা করেন। উৎসাহ দিয়ে বলেন, লেখাটি চালিয়ে যান। কিন্তু ফেসবুকে কোনো কমেন্ট করেন না। না করার অনেক কারণ থাকতে পারে। কারো
সময়ের অভাব। কেউ কলামটি যে পড়েন সেটি আমাকে কিংবা অন্যকে বুঝতে দিতে চাননা। চুপিসারে পড়েন। কেউ আবার নিজের ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে খুব একটা ফোকাস হতে চাননা। কারণ আজকাল ইসলামি কথাবার্তা বলা, পড়া ও শোনার ক্ষেত্রে একধরনের ভয় কাজ করে। পাছে লোকে কী বলেন? নিজে খাঁটি মুসলমান। কিন্তু সেটা বাইরে প্রকাশ করতে চাননা, কারণ এতে করে আপনাকে ইসলামিক বা ইসলামিস্ট বলা হতে পারে। অনেকে আবার ভোটের রাজনীতিতে অসুবিধা হওয়ার ভয়ে কুরআন ও ইসলামকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসতে চাননা। মনে করেন, ইসলামের পক্ষে বেশি কথা বললে যারা সেকুলার, তথাকথিত প্রগতিশীল কিংবা মুসলম নন, সেই ভোটারদের হারাতে পারেন। এই ভয়ও অনেকের মধ্যে কাজ করে থাকে।
কিন্তু নির্বাচন, রাজনীতি এসব তো মাত্র ক্ষনিক সময়ের জন্য। পুরো দুনিয়ার জীবনটিই তো ক্ষনিকের। রাসুল (সাঃ) বলেছেন, দুনিয়াতে তুমি এমনভাবে চলো যেনো তুমি একজন মুসাফির, ভ্রমনকারী বা ট্রাভেলার। অর্থাৎ একজন ভ্রমনকারীর সঙ্গে তেমন কিছু থাকেনা। একটি ব্যাগে কিছু জরুরী কাপড়-চোপড় থাকে। আর হয়তো পকেট খরচের কিছু অর্থ। তিনি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা ভ্রমণ করেন। তাকে মানুষ চিনেনা। কোথায় তার বাড়ি, কোথায় তার ঘর? কোথা থেকে এসেছেন। কোথায় যাবেন। এভাবেই জীবনযাপন করতে বলেছেন বিশ্বনবী (সাঃ)।
দুনিয়ার জীবন আসলেও কিছু নয়। এখানে আমি, আপনি কী করলাম আর পাছে আরো একজন কী বললো বা বলতে পারে এটা কোনো ধর্তব্য বিষয় নয়। ধর্তব্য হচ্ছে, পরকাল। ওই জীবন কেমন হবে। ওই জীবন অনন্তকালের। ওই জীবনের শেষ নেই। সুতরাং ক্ষনিকের জীবন নিয়ে কে কী বললো- সেটা চিন্তা না করে অন্তহীন জীবন নিয়েই আমাদের ভাবা উচিৎ।
আমি কোনো মুফাসিসর কিংবা মুহাদ্দিস নই। আমার নামের শেষে দাঃ বাঃ (দামাত বারাকাতুহু) লাগানো হয়না । নামের আগে মাওলানা, আল্লামা, শায়খ ইত্যাদি খেতাবও নেই । আমি কুরআন হাদীস পড়ি, বুঝার চেষ্টা করি। যা পড়ি তা অন্যকে জানানোর চেষ্টা করি। একজন মানুষও যদি লেখাটি পড়েন, কুরআন হাদীসের একটি বিষয় জানেন বুঝতে পারেন, তাহলে তার প্রতিদান আমাকে দেওয়া হবে। আমার চেষ্টা স্বার্থক হবে- এই বিশ্বাস থেকেই নিয়মিত লিখার চেষ্টা করি।
এই ফেসবুকে, সংবাদপত্রের পাতায়, প্রতিদিনই তো কত কিছু লিখি। সবগুলোই তো জাগতিক বিষয়। এরমধ্যে মহান সৃষ্টি কর্তাকে নিয়ে দুচারটি কথা লিখা কি উচিত নয়? তিনিই আমাকে লেখার শক্তি দিয়েছেন। পরকালে যদি জিজ্ঞেস করেন, তোমাকে লিখার শক্তি দিয়েছিলাম। কেন আমার কথা লিখনি? কোন সংকোচবোধ আমার কথা লিখতে দুরে রেখেছিলো? আমি তো তোমাকে লেখার মতো একটি নেয়ামত দান করেছিলাম যা সকলকে দেইনি। তাহলে তুমি কেন আমাকে নিয়ে দুচার লাইন লিখার চেষ্টা করনি? সেই প্রশ্নের মুখোমুখি হলে বলতে পারবো- হ্যা চেষ্টা করেছি। কবুল করার দায়িত্ব আপনার। সেই তাগিদ থেকে লেখা। আপনাদের ভালো লাগা মন্দ লাগা নিয়ে জানালে খুশি হবো। আপনাদের পরামর্শ নিয়ে লেখাকে আরো সমৃদ্ধ করতে চাই।
শুরু করেছিলাম সুরা ইউসুফের তাফসীর। যে সুরায় ইউসুফ নবীর কাহিনী অত্যন্ত সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা প্রথম চারটি আয়াতের প্রাথমিক আলোচনা করেছি। ইউসুফ নবী ছোটকালে একটি স্বপ্ন দেখেছিলেন । সেই স্বপ্নের ব্যাখ্যা কী? আমরাও আমাদের দৈনন্দিন জীবনে স্বপ্ন দেখি। স্বপ্ন কী? কেন আমরা স্বপ্ন দেখি। স্বপ্ন কি সত্য? অনেক আলেম ইস্তেখারা করে মানুষের সমস্যা বলে দেন। এটা কি আদৗ সম্ভব। আগামী পর্বে- তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা। চোখ রাখুন। সঙ্গে থাকুন। আজ এ পর্যন্ত।
বিষয়: বিবিধ
৭১০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন