মনির্ং তাফসীর : সুরা ইউসুফ : দ্বিতীয় পর্ব ইউসুফ কে ছিলেন?
লিখেছেন লিখেছেন তাইছির মাহমুদ ০৫ নভেম্বর, ২০১৮, ০৩:৪৫:১৬ দুপুর
মুসলিম জাতির পিতা ইব্রাহিম (আঃ) এর দুই স্ত্রী ছিলেন। সারা ও
হাজরা । সারা'র পুত্র হলেন ইসহাক। ইসহাক (আঃ) এর পুত্র হলেন ইয়াকুব। আর ইয়াকুব এর পুত্র হলেন ইউসুফ। এরপর এই একই বংশে জন্মগ্রহণ করেন হযরত মুসা (আঃ) ও হযরত ঈসা (আঃ) ।
অন্যদিকে ইব্রাহিম (আঃ) এর দ্বিতীয় স্ত্রী হযরত হাজেরা'র পুত্র হলেন ইসমাইল (আঃ) । আর ইসমাইল (আঃ) এর বংশেই জন্ম গ্রহন করেন মুসলমানদের নবী ও রাসুল হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)।
ইউসুফ নবীকে নিয়ে পবিত্র কুরআনে একটি সুরা নাজিল হয়। এই সুরা নাজিল হওয়ার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে মুফাসিসরগন বলেছেন, মুহাম্মদ (সাঃ) যখন ইসলাম প্রচার শুরু করেন তখন মক্কার ইয়াহুদীরা রাসুল (সাঃ) কি সত্য নবী, তা প্রমাণ করার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রশ্ন করতো। একবার কজন ইয়াহুদী রাসুল (সাঃ) এর নিকট এসে বললো, আপনি যদি সত্যিকার নবী হয়ে থাকেন তাহলে আমাদেরকে নবী ইউসুফের (আঃ) জীবনী বলে দিন। কারণ ইউসুফ নবীর কাহিনী তাদের ধর্মগ্রন্থ তাওরাতে বর্ণিত ছিলো । যেহেতু রাসুল (সাঃ) নিরক্ষর ছিলেন এবং তিনি কোনো কিছু জানতেননা তাই তাদের ধারনা ছিলো তিনি এ ব্যাপারে কিছুই বলতে পারবেন না। তখনই আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবীকে ইউসুফ (আঃ) এর জীবন কাহিনী জানাতে সুরাটি নাজিল করেন।
ইয়াকুব (আঃ) এর দুই স্ত্রী ছিলেন। প্রথম স্ত্রীর সন্তান ছিলেন ইউসুফ ও বিনিয়ামিন। এই দুই ভাইর মা মারা গেলে পিতা ইয়াকুব (আঃ) তাদের খালাকে বিবাহ করেন। খালার ঘরে আরো ১১ ভাই জন্ম নেয়। দুই মায়ের তেরো ভাইয়ের মধ্যে ইউসুফ (আঃ)কে একটু বেশি ভালোবাসতেন পিতা ইয়াকুব (আঃ) । এতে অন্য ভাইয়েরা খুব ঈর্ষাকাতর হয়ে পড়ে। এরই মধ্যে একদিন ইউসুফ স্বপ্নে দেখলেন এগারোটি নক্ষত্র এবং চাঁদ ও সুর্য তাঁকে সাজদা করছে। তিনি ঘুম থেকে জেগে তার পিতার কাছে স্বপটি বললেন। তখন তার পিতা এই স্বপ্নের কথা কাউকে না বলতে সতর্ক করে দিলেন। তিনি এও বললেন, এই স্বপ্নের কথা তার বৈমাত্রেয় ভাইয়েরা জানলে তার ক্ষতি করতে পারে। কারণ শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। শয়তান ভাইদের মনে কুমন্ত্রনা দিয়ে ইউসুফের প্রতি বিদ্বেষী করে তুলবে।
সুরা ইউসুফের চার ও পাঁচ নম্বর আয়াতে সেকথাই বলা হয়েছে। নিচে দুটো আয়াতের অনুবাদ তুলে ধরা হলো।
চার. ইজ ক্বালা ইউসুফু লি-আবিহী ইয়া আবাতি ইন্নি রাআইতু আহাদা আশারা কাওকাবাও, ওয়াশ-শামসা ওয়াল-ক্বামারা রাআইতুহুম লি-সাজিদিন।
অর্থ: যখন ইউসুফ তাঁর পিতাকে বললেন, হে আমার পিতা আমি স্বপ্নে দেখেছি এগারোটি তারা এবং চাঁদ সুর্য, আমি এদেরকে আমার প্রতি সাজদারত অবস্থায় দেখেছি।
পাঁচ. ক্বালা ইয়া বুনাইইয়া লা- তাক্বসুস রুহইয়াকা আলা ইখওয়াতিকা ফাইয়াক্বিদু লাকা কাইদা। ইন্নাশ-শায়তানা লিল ইনসানি আদুউউম মুবিন
(এ কথা শুনে তার পিতা বললেন) হে আমার স্নেহের পুত্র, তুমি তোমার এ স্বপ্নের কথা কিন্তু তোমার ভাইদের কাছে বলে দিওনা, (বললে) অতঃপর তোমার বিরুদ্ধে তারা ষড়যন্ত্র আঁটতে শুরু করবে। কেননা শায়তান হচ্ছে অবশ্যই মানুষের প্রকাশ্য দুশমন। (চলমান)
বিষয়: বিবিধ
৭৯৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন