মনির্ং তাফসীর : সুরা ইউসুফ : প্রথমপর্ব চলমান কুরআন কি মানবরচিত গ্রন্থ?

লিখেছেন লিখেছেন তাইছির মাহমুদ ৩১ অক্টোবর, ২০১৮, ০১:৩১:৫১ দুপুর

গত পর্বে সুরা ইউসুফের প্রথম তিন বাক্যের সংক্ষিপ্ত আলোচনা শুরু করেছিলাম। সুরাটি শুরু হয়েছে "আলিফ-লাম-রা। তিলকা আ-ইয়াতুল কিতাবুল মুবিন" (অথং: এগুলো সুস্পষ্ট গ্রন্থের আয়াত) দ্বারা ।

"আলিফ-লাম-রা"- এগুলোকে আরবী ভাষায় হুরুফে মুকাত্তিয়াত বলে। বাংলায় বলা হয় বিচ্ছিন্ন অক্ষর সমষ্টি । সুরা বাকারাসহ কুরআনের একাধিক সুরা এভাবে বিচ্ছিন্ন অক্ষর-সমষ্টি দ্বারা শুরু হয়েছে। অর্থাৎ পৃথক পৃথকভাবে কয়েকটি অক্ষর একীভূত হয়েছে। এগুলোর কোনো অর্থ কেউ জানেন না । তবে তা কুরআনেরই অংশ।

কুরআনের প্রকৃত ব্যাখ্যা সাধারনত হাদীস দ্বারাই হয়ে থাকে। কিন্তু আলিম-লাম-রা অক্ষরগুলোর প্রকৃত অর্থ কী রাসুল (সাঃ) নিজেও জানতেন না । তিনি এই অক্ষরগুলোর অর্থ খুঁজতে নিষেধও করেছেন। যেহেতু আল্লাহ তায়ালা জানিয়ে দেননি তাই তিনি জানেন না।

তবে এই হুরুফে মোকাত্তিয়াত দ্বারা অনেকগুলো বিষয় আমাদের জন্য বুঝতে সহায়ক হয়। এক. রাসুল (সাঃ) গায়েব বা অদৃশ্যের খবর জানেন না। তিনি যদি অদৃশ্যের খবর জানতেন তাহলে আল্লাহ তায়ালা জানিয়ে না দিলেও এই আলিফ লাম-রা অক্ষর-সমষ্টির অর্থ তিনি বলে দিতে পারতেন।

দ্বিতীয় আরো একটি গুরুত্বপুর্ণ বিষয় আমরা শিখতে পারি। তা হচ্ছে, এই কুরআন আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত গ্রন্থ। এই গ্রন্থ মুহাম্মদ (সাঃ) নিজে রচনা করেননি। যেভাবে অবিশ্বাসীরা দাবী করে কুরআন আল্লাহ তায়ালার বাণী নয়, এটি মুহাম্মদ (সাঃ) রচিত ধর্মগ্রন্থ।

এ ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করলে বিষয়টি আরো সহজেই বুঝা যাবে । যেমন: কোনো একজন গল্পকার একটি গল্প রচনা করলেন । কিংবা একজন কবি একটি কবিতা লিখলেন। তাহলে এই গল্পকার কিংবা কবি তাঁর গল্প ও কবিতা সম্পর্কে শতভাগ ওয়াকেফহাল থাকবেন । অর্থাৎ তিনি কী লিখেছেন তা বলতে পারবেন। কোন লাইনটি কোন উদ্দেশ্যে রচনা করেছেন তা তিনি ভালোবাবে বুঝিয়ে দিতে পারবেন। কোনো লাইন কিংবা প্যারার প্রকৃত অর্থ কী, যদি তিনি তা বুঝিয়ে দিতে পারেন না তাহলে তিনি এই গল্প কিংবা কবিতার রচয়িতা নন। বুঝতে হবে এগুলো অন্য কারো গল্প কিংবা কবিতা।

ঠিক তেমনি মুহাম্মদ (সাঃ) যদি পবিত্র কুরআন নিজে রচনা করতেন তাহলে আলিফ-লাম-রা কিংবা আলিফ-লাম-মিম ইত্যাদি বিচ্ছিন্ন অক্ষর সমষ্টির অর্থ বলে দিতে পারতেন । এটি নিশ্চয় তাঁর রচিত গ্রন্থ নয়, আল্লাহ তায়ালার গ্রন্থ- তাই তিনি বলতে পারেননি। কুরআন আল্লাহ তায়ালার গ্রন্থ- এই চিরন্তন সত্যকে অনুধাবন করতে উপরোক্ত দৃষ্টান্তটি অবিশ্বাসীদের জন্য সহায়ক হতে পারে। (চলমান)

বিষয়: বিবিধ

৬৫৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

386085
৩১ অক্টোবর ২০১৮ দুপুর ০৩:৪৫
কুয়েত থেকে লিখেছেন : লেখাটি ভালো লাগলো চালিয়ে যান। অনেক অনেক ধন্যবাদ
386092
০১ নভেম্বর ২০১৮ রাত ০৮:২৮
শেখের পোলা লিখেছেন : হরফে মুকাত্তায়াতের বিষয়ে এখন বেশ কিছু গোপন তথ্য আবিষ্কার হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও হবে। রসুল সঃ এর জমানায় হয়ত এর বুঝ প্রয়োজন হয়নি। এখন বিজ্ঞান মনষ্ক মানুষ তা বুঝতে পরবে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File