চশমা-নির্ভর জীবনের কঠিন উপলব্দি *****************************
লিখেছেন লিখেছেন তাইছির মাহমুদ ১৫ জানুয়ারি, ২০১৮, ০৭:০৬:১১ সন্ধ্যা
ঘরের ছোট্ট অফিস রুমটিতে যখনই সময় পাই খানিক বসি। টুকটাক লেখালেখির চেষ্টা করি। তবে ডেস্কে বসার আগে রিডিং গ্লাসটি খুঁজে নেওয়া যেনো বাধ্যতামুলক । টেবিলে বসে চশমা না পাওয়াটা হয় চরম বিরক্তিকর। প্রথম প্রথম গ্লাস ছাড়াই কাজ করতে পারতাম। সময় যত যাচ্ছে, চোখ দুটোও ততই দুর্বল হয়ে পড়ছে।
আজ চশমা খুঁজতে গিয়ে মনে পড়লো আমাদের বাড়ির পাশের ছোট্ট ব্রীজটির কথা। সন্ধ্যা রাতে ব্রীজের রেলিংয়ে বসে চাঁদের আলোতে বই পড়তাম । মৃদুমন্দ আবহাওয়া । চারদিকে সবুজ ধানক্ষেত আর ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক। প্রকৃতির সাথে মিশে গিয়ে নিরিবিলি পরিবেশে বই পড়তে কী না ভালোই লাগতো।
তখন বাজার থেকে মুরব্বীরা ওই সেতু হয়ে বাড়ি ফিরতেন। চাঁদের আলোতে বই পড়তে দেখে তাঁরা অবাক হতেন। আজ সেই স্মৃতিই মনে পড়ছে। টেবিলে বসে যখন চশমা হাতড়াই, তখন চাঁদের আলোতে বই পড়ার আনন্দটুকু খুবই অনুভব করি।
ভাবি, আর তো ফিরতে পারবো ওই মধুর বয়সে। এখন যাওয়ার পালা। প্রতি বছর একটি করে চশমা বদলানোর পালা । একসময় চশমাও হয়তো কাজ করবে না । হাতে থাকতে সাদা ছড়ি। ওটিই হবে দৃষ্টি শক্তির একমাত্র বাহন । এভাবেই একসময় চলে যেতে হবে না ফেরার দেশে। যে দেশের আয়ূ হবে অনন্ত অসীম। কেমন হবে সেই জগতটি? ওই জগতের জন্য কি প্রস্তুত করতে পেরেছি নিজেকে? শুধুই ভাবি, ভাবনায় থাকি। ভাবনার শেষ নেই। জীবনের বিয়ল্লিশটি বসন্ত পেরিয়ে আজ শুধুই এই কঠিন উপলব্দি ।
তাইসির মাহমুদ
লন্ডন, যুক্তরাজ্য
রোববার, ১৪ জানুয়ারি ২০১৮
বিষয়: বিবিধ
৬৬৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন