মর্নিং তাফসীর : তৃতীয় পর্বের পাঠ প্রতিক্রিয়া ও কিছু কথা

লিখেছেন লিখেছেন তাইছির মাহমুদ ১০ জানুয়ারি, ২০১৮, ০৫:০০:৩৮ বিকাল

আজ সুরা লাহাবের তাফসীর করার কথা ছিলো। কিন্তু গতকাল তৃতীয় পর্বের তাফসীর পোস্ট করার পর দুটো পাঠ প্রতিক্রিয়া এসেছে। এই দুটোর জবাব দেয়ার প্রয়োজনবোধ করছি। সুরা লাহাবের তাফসীর অন্যদিন হবে ইনশাল্লাহ।

এক). "সাংবাদিক কাইয়ূম আব্দুল্লাহ লিখেছেন: "আমার জানতে ইচ্ছে হচ্ছ- যে বা যার তাফসির পড়ছেন সেটাই হুবহু আমাদের জন্যে পেশ করছেন নাকি সেখানে নিজস্বতা আছে। যদি সেখানে আপনার চিন্তা-ভাবনা বা দৃষ্টিভঙ্গির কোনো প্রতিফলন না থাকে তাহলে তা নিজের নামে পু:প্রচারে কোনো মাহাত্ম আছে বলে মনে হয় না। আমাদেরকে শুধু আপনার পাঠককৃত তাফসিরগ্রন্থের নাম বলে দিলেই পারেন।"

দুই). গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী রুম্মান লিখেছেন: "নবীকে আল্লাহ ক্ষমা প্রার্থনা করার কথা বললেন কেন? কিংবা তওবা করার কথা?কেননা নবী তো ছিলেন পুণ্যে পূর্ন পাপ তাঁকে স্পর্শ করে নাই"

দুটো প্রশ্নই খুবই গুরুত্বপুর্ণ। প্রথম প্রশ্নে সাংবাদিক কাইয়ূম আব্দুল্লাহ যথার্থই বলেছেন, তাফসীরে যদি নিজস্বতা না থাকে তাহলে নিজের নামে পুন:প্রকাশের কোনো মাহাত্ম নেই। তবে তার কাছে একটি বিনীত জিজ্ঞাসা: তিনি কি আমার বিগত তিন পর্বের তাফসীর পড়ে এ মন্তব্য করছেন, না-কি অনুমানের উপর ভিত্তি করে লিখেছেন?

জনাব কাইয়ূম আবদুল্লাহ'র মন্তব্যের ধরন দেখে আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যা উপলব্ধি হয়েছে তা হচ্ছে, তিনি আমার প্রতি প্রশ্ন রাখছেন যে, আমি কোনো তাফসীর গ্রন্থ থেকে তা হুবহু উপস্থাপন করছি কি-না, আমার তাফসীরে কোনো নিজস্বতা আছে কি-না? সেটা তাঁকে জানানোর জন্য।

আমার মনে হয়, আমার প্রতি এ প্রশ্ন ছুড়ার আগে তিনি তাঁর মুল্যবান সময় থেকে কিছু সময় ব্যয় করে যদি গত তিনটি পর্ব একটিবার পড়ে নিতে পারতেন তাহলে তাঁর ও আমার দুজনেরই সময় বাঁচতো। দয়া করে বিগত পর্বগুলো একটিবার করে পড়ে নেয়ার জন্য তাঁর প্রতি সবিনয় অনুরোধ থাকছে । যদি তিনি কোনো তাফসীর গ্রন্থের সাথে হুবহু মিল খুঁজে পেয়ে যান, তাহলে দয়াপরবশ আমাকে জানাতে অনুরোধ থাকছে । আমি নিজের নামের এই প্রচারনা বন্ধ করে দেবো।

দ্বিতীয়ত বলতে চাই, আমি কোনো মুফাসিসর, মুহাদ্দিস, মুফতি, মুহাক্কিক নই। আমার এই তাফসীর তাঁর মতো পণ্ডিত্যসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্যও নয়। এটা শুধু তাদের জন্য, যারা আমার মতো কুরআন সম্পর্কে জানার ও শেখার চেষ্টা করেন।

আমি আগেই বলেছি, সকালে নিজে করআন পড়ি। তাতে অন্যকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছি মাত্র। এখানে নাম ফাটানোর কিছুই নেই। ফেসবুক এমন একটি মাধ্যম এখানে আষাঢ়ে গল্প বলে পার পাওয়ার সুযোগ নেই। এখানে সবকিছু এভিডেন্স হিসেবে থাকে। সাথে সাথে প্রতিক্রিয়া জানানো যায়। আমার জন্য এটা খুবই ভালো। আমার পোস্টের পর কেউ প্রতিক্রিয়া জানালে আমি তাঁর কাছ থেকে শিখতে পারবো। বড় বড় তাফসীর মাহফিলে এই সুযোগ থাকেনা। শুধু শুনে যেতে হয়। প্রশ্ন রাখার কোনো সুযোগ থাকেনা। ফলে অনেক সময় অনেকেই যা ইচ্ছে বয়ান করে নিরাপদে চলে যান। কিন্তু ফেসবুকে মনগড়া বয়ান দিয়ে চলে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাছাড়া বাংলাদেশের মাহফিলের অডিডেন্স আর ফেসবুকের অডিয়েন্সের মধ্যে দিনরাত তফাৎ। ফেসবুকে যারা থাকেন তারা লেখাপড়া জানা মানুষ। তাদের সামনে কথা বলতে হলে এভিডেন্স দিয়েই বলতে হয়। আমি এই সচেতন মানুষের প্লাটফর্মেই "মনির্ং তাফসীর" নামক পোস্টটি চালু করেছি।

আমি আমার নিজের জানার জন্য সকালে একাধিক তাফসীর গ্রন্থ পড়ি । কারণ একটি গ্রন্থে সবকিছু পাওয়া যায় না। অনেক বিষয় কনিফিউশন থাকে। নিজের যতসামান্য আরবী ও বাংলা ভাষাজ্ঞান দিয়ে একাধিক বই পড়ে সেগুলো বুঝার চেষ্টা করি। তা থেকেই মুল বিষয়বস্তুটুকু 'মর্নিং তাফসীর" নামক পোস্টে তুলে ধরি। এরচেয়ে বেশি কিছু নয়।

কোনো ব্যক্তিই মায়ের পেট থেকে কুরআন, হাদীস শিখে আসেন না। দুনিয়ায় আসার পর বড় হওয়ার সাথে সাথে তাকে পড়াশুনা করতে হয়। পড়াশুনা করতে হলে বই লাগে। এই বইগুলোও কেউ না কেউ লিখে থাকে। পৃথিবীতে যত ইসলামিক বই আছে তাঁর উৎস হচ্ছে কুরআন- হাদীস। কেউ কুরআন হাদীস পড়ে তা থেকে তথ্য নিয়ে বই লিখে থাকেন। কেউ কুরআন হাদীসের অনুবাদ/ব্যাখ্যা পড়ে সমসাময়িক বিষয়াবলীর সাথে সামঞ্জ্যরেখে বই লিখে থাকেন । কিন্তু সবকিছুর উৎস কিন্তু কুরআন ও হাদীস ।

আমার মনে হয়না, কেউ কারো গ্রন্থ কপি করে বই লিখে সেটি তার নামে বাজারজাত করে দিতে পারবেন । একটি গ্রন্থ থেকে তথ্য উপাত্ত নিতে পারেন । কিন্তু হুবহু কপি করলে তো আর সেটি তার বই হবেনা । আর কোনো গ্রন্থ রচনা করতে হলেতো তাকে কোথাও না কোথা থেকে তথ্য নিতে হবে, তিনি যদি রাসুল না হয়ে থাকেন। কারণ একমাত্র রাসুলদের প্রতি আল্লাহ তায়ালা সম্পুর্ণ নতুন গ্রন্থ নাজিল করে থাকেন। সুতরাং তাফসীর করার সময় কোনো না কোনো তাফসীর গ্রন্থের সহযোগিতা নেয়াটা অন্যায় নয় বরং সহায়কই বলতে হয়।

এই পৃথিবীতে প্রতিদিন অগণিত স্থানে, অগণিত ব্যক্তি পবিত্র কুরআনের তাফসীর করে থাকেন। কারেন্ট ওয়ার্ল্ডের সাথে সামঞ্জস্য রেখে তারা তাফসীর করেন । তাফসিরে নতুন বেশ কিছু না থাকলেও একটি নিজস্বতা থাকতে হবে। নিজস্বতা ছাড়া তাফসীর হয়না। নতুবা সেটা পাঠ হয়। তা না হলে তাফসীর কারক যে বই থেকে তাফসীর করবেন সেই বইয়ের একেকটি চ্যাপ্টার প্রতিদিন ফটোকপি করে দিয়ে দিলেই তো পারেন।

যেমন ইস্ট লন্ডন মসজিদের ইমাম শায়খ আব্দুল কাইয়ূম প্রতি শনিবার ঘণ্টা দুয়েক তাফসীর করে থাকেন। তিনি কয়েক বছর যাবত তাফসীর করছেন। একদফা শেষ করে দ্বিতীয়দফা শুরু করে প্রায় অর্ধেকে চলে এসেছেন । তাহলে তাঁকে তো কষ্ট করে দুই ঘণ্টা তাফসির না করে প্রতিদিন আগত মুসল্লিদেরকে একসেট করে তাফসীরের ফটোকপি ধরিয়ে দিয়ে বলতে পারতেন -আজকের তাফসির এই পৃষ্ঠা থেকে ওই পৃষ্ঠা পর্যন্ত আপনারা ঘরে পড়েন নিয়েন। তাহলেই তো হতো।

আর তিনি যখন একবার তাফসীর শেষ করে ফেলেছেন, তাহলে দ্বিতীয়বার কি একই কুরআন শরীফ তাফসীর করার দরকার আছে? তিনি তো আগে যে তাফসীর করেছিলেন তা-ই করবেন। মুসল্লীও তো সমান। তাহলে তিনি কেন একই বিষয় বারবার তাফসীর করছেন?

সহজ উত্তর- প্রতিবারই যখন তাফসির করছেন বর্তমান বিশ্বের ঘটমান বিভিন্ন বিষয় তাফসীরের সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। কুরআনের তাফসীরের আলোকে তিনি কারেন্ট বিষয়গুলো বুঝিয়ে দিচ্ছেন। প্রতিবারই তার তাফসিরে নিজস্বতা আসছে। যারা একাধিকবার শুনছেন তারা দৈনন্দিন জীবনে প্রাকটিস করতে পারছেন। শুনার সুযোগ না পেলে তারা ভুলে যেতেন। যখনই নতুন কিছু আমাদের সামনে আসে তখনই আমরা ওটা নিয়ে আলোচনা শুরু করি। ওটাতে আমরা আমল করি।

একটি গান অথবা কবিতা আমরা বারবার শুনি। এটা আমাদের জন্য বিরক্তিকর মনে হয় না । যতই শুনি ততই শুনতে মন চায় । কবি নজরুলের "মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই" গানটি যতবারই শুনি, ততবারই কবরের কথা স্মরণ হয়। মৃত্যুর কথা মনে পড়ে।

যিনি কুরআনে হাফিজ তাকে কেন প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠে কুরআন প্রাকটিস করতে হবে। কুরআন তো তাঁর মুখস্থই আছে। তাকে প্রাকটিস করতে হয় এ কারণে যে, প্রকটিস না করলে তিনি কুরআন ভুলে যাবেন।

স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় শিক্ষকরা পাঠ্যপুস্তক দেখে দেখে ক্লাসে একই প্রবন্ধ, নিবন্ধ, ইতিহাস কিংবা হাদীস, কুরআন পড়ান। বছরের পর বছর ধরে পড়ান। তবুও কেন ক্লাসে যাওয়ার আগে নিজেকে পড়তে হয়, প্রস্তুতি নিতে হয়। এটার তো দরকার ছিলোনা। তিনি নিজে বছরের পর বছর একই ক্লাসের শিক্ষার্থীদের একই বিষয় পড়াচ্ছেন অথচ তাকে পড়াশুনা করতে হয় ।

তা কেন? এর কারণ আমরা জানি। প্রাকটিস না থাকলে আমরা ভুলে যাই। আগামী কাল কী কাজ করবো- তার জন্যও আমরা অনেক সময় একটি 'টু-ডু-লিস্ট' করে থাকি। অনেক সময় অনেকের কাছ থেকে অনেক ভালো কথা শুনি। যদিও সেটি আগে শুনেছি। কিন্তু তাঁর কাছ থেকে জেনে মনে হয় হয় আবারও নতুন করে শিখছি।

একটি বই আপনি পড়ে ফেলেছেন । এজন্য এটা আপনি ফেলে দেননা। ওটা সযতনে বুকশেলফে রেখে দেন। মাঝে মধ্যে যখন কোনো তথ্য উপাত্ত প্রয়োজন হয় তা খুঁজে দেখেন। তথ্য-উপাত্তের প্রয়োজন ছাড়াও পুরনো বই পড়তে, পুরনো গল্প পড়তে ভালো লাগে। গল্পের বিষয়বস্তু আমাদের মনের মধ্যে চিন্তার খোরাক যোগায়।

সুতরাং, এই পৃথিবী যতদিন থাকবে ততদিন কুরআন হাদীসের তাফসীর থাকবে। মুল কুরআনের সাথে নিজস্বতা বজায় রেখে সমসায়িক বিষয়বলির সাথে মিল রেখে বিভিন্নভাবে তাফসীর হবে। যত বেশি তাফসীর হবে তত বেশিই মানুষ উপকৃত হবে । আশাকরি বিষয়টি বুঝাতে সক্ষম হয়েছি।

দুই. "নবীকে আল্লাহ ক্ষমা প্রার্থনা করার কথা বললেন কেন? কিংবা তওবা করার কথা?কেননা নবী তো ছিলেন পুণ্যে পূর্ন পাপ তাঁকে স্পর্শ করে নাই"।

এই প্রশ্নের জবাবে একটি হাদীস উদ্ধৃত করতে চাই। হাদীসটি আমরা অনেকেই জানি। "রাসুল (সাঃ) রাতের বেলা জেগে দীর্ঘক্ষন দাঁড়িয়ে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন। নামাজে এতো বেশি সময় দাড়াতেন যে তার পা ফেটে যেতো। এই অবস্থা দেখে আয়শা (রাঃ) তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, "হে রাসুলুল্লাহ- আল্লাহ তায়ালা যখন আপনার অতীত ও বর্তমানের সব ভুলত্রুটি মাফ করে দিয়েছেন, তাহলে আপনি কেন এতো রাত জেগে কষ্ট করে ইবাদত করেন। জবাবে রাসুল (সাঃ) বলছিলেন, "আমি কি আল্লাহর একজন কৃতজ্ঞ দাস হতে চাইব না? (সহিহ বোখারী)।

সুতরাং, এ থেকে প্রতীয়মান হয়- রাসুল (সাঃ) বেশি বেশি করে নামাজ পড়তেন, ইবাদত করতেন, ক্ষমা চাইতেন, তাকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য উপদেশ দেয়া হতো -বান্দা হিসেবে আল্লাহর কাছে আরো কৃতজ্ঞ হওয়ার জন্য । আর "ওয়াস-তাগফিরহু" অর্থ হচ্ছে: ইস্তেগফার করা। ইস্তেগফারের বহু অর্থ আছে। ক্ষমা প্রার্থনা করা, সাহায্য চাওয়া।

তাছাড়া কুরআন হচ্ছে সার্বজনীন। এই আয়াতে আল্লাহ তাঁর রাসুলকে ক্ষমা চাওয়া বা সাহায্য চাওয়ার উপদেশ দিয়ে মুলত আমাদেরকেই উপদেশ দিচ্ছেন। কারণ আমরা ক্বেয়ামত পর্যন্ত নামাজের মধ্যে এই সুরা পাঠ করবো। আমাদের প্রতিই ইস্তেগফার করার উপদেশ অব্যাহত থাকবে।

ওমা তাফফিকি ইল্লা বিল্লা। বাকি আল্লাহ তায়ালাই ভালো জনেন।

তাইসির মাহমুদ

লন্ডন, যুক্তরাজ্য

১০ জানুয়ারি ২০১৮

বিষয়: বিবিধ

৮৩৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

384672
১০ জানুয়ারি ২০১৮ সন্ধ্যা ০৬:২৪
সাদাচোখে লিখেছেন : আসসালামুআলাইকুম।

বেশ ভাল আর্গুমেন্ট, মাশাআল্লাহ্‌।
384682
১১ জানুয়ারি ২০১৮ রাত ০১:১৫
মনসুর আহামেদ লিখেছেন :
চমৎকার, মোটামুটি ভাল জানেন, ষ্টাডি সার্কেল করেন। সাদাচোখে, এই বীজ্ঞ ব্যাক্তি আপনার আসে পাশে থাকেন। ওনার সাথে যোগাযোগ করেন।
384687
১১ জানুয়ারি ২০১৮ বিকাল ০৫:০৭
শেখের পোলা লিখেছেন : আপনাকে প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই। এ মজমায় আগের মত আর আসতে পারিনা। আজ আপনার এ তথ্যপূর্ণ ও উপদেশ পূর্ণ লেখাটি বেশ ভাল লাগল। আপনি ভাল কাজে মনোযোগ দিয়েছেন। থামবেন না চালিয়ে যান। দোওয়া রইল। আমি বেশ কিছুদিন ধারা বাহিক ভাবে উর্দু বয়ানুল কোরআনের বাংলা অনুবাদ করে সোনার বাংলা ও এ ব্লগে দিয়েছি। এবং তার পূর্ণ অনুবাদ অামার কাছে আছে। আমার নামের ব্লগে অনেক আছে। প্রয়োজনে ঘুরে দেখতে পারেন। ওটি মরহুম ডঃ ইসরার আহমাদ সাহেবের তাফসীর। আমার নিজস্ব কিছু তাতে নেই। চাইলে ও ই মেইল নং দিলে পূরা তাফসীর পাঠিয়ে দেব। ভাল থাকেন।ধন্যবাদ
384690
১২ জানুয়ারি ২০১৮ দুপুর ০২:৩৮
তাইছির মাহমুদ লিখেছেন : Thanks. Please email to

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File