মর্নিং তাফসির- দুই
লিখেছেন লিখেছেন তাইছির মাহমুদ ০৭ জানুয়ারি, ২০১৮, ০৩:০৫:২৪ দুপুর
ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। ডাইলগটি আক্ষরিক অর্থে বেশ সুন্দর। অর্থাৎ যে যে ধর্মের অনুসারীই হোক, যখন কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান হবে তাতে দলমত নির্বিশেষে সকল অংশগ্রহণ করবে। মিলে মিশে উৎসব উদযাপন করবে।
ডায়লগটি প্রথম যখন শুনেছিলাম, বেশ চমৎকারই মনে হয়েছিলো। রাস্ট্রের বহুধর্মের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি সৃষ্টির জন্য এটি আসলেও চমৎকার । তখন মিডিয়ায় বড় বড় শিরোনামও হয়েছিলো । কিন্তু একসময় বিতর্ক শুরু হলো। ডায়লগটির ভাবার্থ উপলব্ধি করতে শুরু করলো মানুষ। এখন এই ডায়লগের বিপরীতে বলা হয়: "ধর্ম যার উৎসবও তার।"
তাহলে দেখা যাক, পবিত্র কুরআনে শরিকানা এবাদত সম্পর্কে কী বলা হয়েছে? এটি বুঝার জন্য সুরা কাফিরুনের ছয়টি আয়াতের অনুবাদই যথষ্টে। আল্লাহ তায়ালা শরীকানা এবাদত সম্পকে তাঁর নবীকে উদ্দেশ্য করে বলছেন:
এক) কুল ইয়া আইযূহাল কাফিরুন
(হে নবী), আপনি বলে দিন, হে অবিশ্বাসীরা
দুই) লা আহবুদু মা তায়বুদুন
আমি (তাদের) এবাদত করিনা, যাদের এবাদত তোমরা করো।
তিন). ওয়ালা আনতুন আবিদুনা মা আহবুদ
না তোমরা (তাঁর) এবাদত করো যার এবাদত আমি করি
চার). ওলা আনা আ-বিদুম মা আবাত্তুম
এবং আমি (কখনোই তাদের) এবাদত করবোনা, যাদের এবাদত তোমরা করো।
পাঁচ) ওয়ালা আনতুম আ-বিদুনা মা আহবুদ
না তোমরা কখনো (তাঁর) এবাদত করবে (যাঁর) এবাদাত আমি করি।
(ছয়). লাকুম দ্বি-নুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন
(অতএব) তোমাদের পথ (ধর্ম) তোমাদের জন্য, আর আমার পথ আমার জন্যে।
রাসুল (সাঃ) এর কাছে একবার শরীকানা এবাদতের প্রস্তাব এসেছিলো। একদল অবিশ্বাসী এসে প্রস্তাব রাখলো, চলুন আমরা শরিকানা ভিত্তিতে এবাদত করি। তাহলে আমাদের মধ্যে আর কোনো সমস্যা থাকবেনা । এক বছর আপনি আমাদের মুর্তিগুলোর এবাদত করবেন। আর পরবর্তী বছর আমরা আপনার আল্লাহর এবাদত করবো। তখনই আল্লাহ তায়ালা এই সুরাটি অবতীর্ণ করে জানিয়ে দিলেন, আসলে ইসলাম ধর্মে শরিকানা এবাদতের কোনো সুযোগ নেই।
অর্থাৎ 'ধর্ম যার যার উৎসব সবার নয়' বরং 'ধর্ম যার উৎসবও তার'।
এখন অনেকেই যুক্তি আওড়াবেন । বলবেন: একটু পুজা পার্বনে যাওয়া, প্রসাদ খাওয়া, খানিক আড্ডা দেওয়া কি এবাদত হয়ে গেলো?
যদি তাই না হয়, তাহলে মুসলমানের ঈদগাহ ময়দানে, হজ্জ পালনে, মিলাদ কিংবা দোয়া মাহফিলে তো অন্য ধর্মাবল্বীদেরও অংশগ্রহণের কথা। কই, তাতো দেখিনা?
তাইসির মাহমুদ
লন্ডন, যুক্তরাজ্য
৬ জানুয়ারি ২০১৮
বিষয়: বিবিধ
৭৭২ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ
দূর্বল যুক্তি ও প্রমানঃ
তাহলে মুসলমানের ঈদগাহ ময়দানে, হজ্জ পালনে, মিলাদ কিংবা দোয়া মাহফিলে তো অন্য ধর্মাবল্বীদেরও অংশগ্রহণের কথা। কই, তাতো দেখিনা?
মুসলিম ভিন্ন অন্য ধর্মের লোকেরা অসংখ্য এসেছে, এখনো আসে এবং আগামীতেও আসবে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে যারা আসেন তারা নিজ ধর্মের প্রতি ট্রউলী বিশ্বাসী। বরং তারা নিজ ধর্মের অনেক কিছুর প্রতি অবিশ্বাসী কিংবা সন্দেহবাদী কিংবা অন্য ধান্ধা নিয়ে আসেন ঠিক যেমনটা আজকের বিশ্বের অধিকাংশ মুসলিম তার নিজ ধর্মের অনেক কিছুর ব্যাপারে অবিশ্বাসী কিংবা সন্দেহবাদী কিংবা অন্য ধান্ধা নিয়ে মসজিদে, ঈদগাহে আসেন।
---------------------
একজন দুনিয়াবাদী, স্রষ্টার কমান্ডের প্রতি অবিশ্বাসী কিংবা ভীতশ্রদ্ধ, স্রষ্টার আদেশ নিষেধ এর পরিবর্তে নিজের খেয়াল খুশী ও বিবেক দ্বারা পরিচালিত মানুষের খায়েশ হল - এই স্লোগানের আড়ালে 'ধর্ম যার যার, উৎসব সবার'। মানুষকে তার মত অজ্ঞ ও মূর্খ বানানো - যাতে সবাই তার মত আল্লাহর শত্রুতে পরিগনিত হয়।
অন্যদিকে একজন মুসলিম কোরানের ঘোষনানুযায়ী আল্লাহর সাথে যারা শরীক করছে কিংবা যারা আল্লাহকে অস্বীকার করছে তারা আল্লাহর শত্রু বলে বিবেচনা করে। আর আল্লাহ ও তার রাসুল যেখানে সম্পর্কচ্ছেদ করেছেন - এবং তার অনুসারীকে সম্পর্কচ্ছেদ করতে বলেছেন, তাদের লেবাস ও বেশভূষা এ্যাভয়েড করতে বলেছেন - সেখানে কিভাবে সেই আল্লাহর অনুসারীরা অবিশ্বাসীদের পূজা পার্বন ও উৎসবে যাবে। মুসলমানদের কোন বিকল্প নেই - কারন তাদের আল্লাহ, তাদের রব - তাদের জন্য তা হারাম করেছেন।
এর অর্থ এই নয় যে - আমরা তাদের কে অপছন্দ করি কিংবা সেকেন্ড ক্লাস মনে করি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন