চিত্র-বিচিত্র : লন্ডনের থানা বনাম বাংলাদেশের থানা

লিখেছেন লিখেছেন তাইছির মাহমুদ ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০১:৩৭:০২ দুপুর

দুই লাখ আশি হাজার জনসংখ্যা অধু্যষিত একটি কাউন্সিলের পুলিশ কমান্ডার তিনি। তাঁর অধীনে চারটি থানা। তত্ত্বাবধানে রয়েছেন ৬৫০ জন পুলিশ। অথচ তাঁর চলাফেরা একেবারেই সাদামাটা। সিভিল পোষাকে থানা ভবনের ছোট একটি রুমে বসে কাজ করেন। কোমরে ওয়াকিটকি আর পিস্তলও ঝুলানো নেই।

দরজার সামনে মুর্তির মতো দণ্ডামান কোনো পুলিশ গার্ড নেই। অন্যান্য পুলিশ কনস্টেবলদের সঙ্গে কথা বলেন সহকর্মীর মতো। পুলিশ অফিসাররা কখনো স্যার বলেন না। নাম ধরেই সম্বোধন করেন তাঁকে। রুমে প্রবেশের সময় হাত-পা দিয়ে স্যালেউট করেননা । কমান্ডারের টেবিলের পাশে একপায়ে দাঁড়িয়ে স্যার স্যার বলতে বলতে ফরমায়েশ শোনার অপেক্ষায় থাকেননা। পাশেই চেয়ারে বসেন। পুলিশ কমান্ডারের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন, পরামর্শ নেন, পরামর্শ দেন।

বলছিলাম পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধু্যষিত টাওয়ার হ্যামলেটস বারার নবনিযুক্ত পুলিশ কমান্ডার সু্য উইলিয়ামের কথা। শুধু তাঁর অফিসেরই দৃশ্য নয় এটি, লন্ডনের সবগুলো পুলিশ স্টেশনের চিত্রই এরকম। থানা যে একটি শান্তির জায়গা, পুলিশ যে শান্তির প্রতীক তা বৃটেনের থানাগুলোতে গেলে অনুভব করা যায়।

সম্প্রতি একটি প্রেস ব্রিফিংঅনুষ্ঠানে থানায় দীর্ঘক্ষন কথা হয়েছিলো পুলিশ কমান্ডার সু্য উইলিয়ামের সঙ্গে। তার অফিসের সাদামাটা চিত্র দেখে চোখের সামনে ভেসে এলো বাংলাদেশের থানাগুলোর কথা ।

পেশাগত কারণে বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন থানায় যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। তবে আজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগে। সেসব থানায় অধিনস্ত পুলিশ কনস্টেবলদের সঙ্গে থানার ওসি সাহেবের ব্যবহার দেখে মনে করতাম এটিই বোধহয় পুলিশের নিয়ম। জুনিয়র ও অধিনস্থদের সঙ্গে ওসি সাহেব সবসময় ধমকের সুরে কথা বলবেন। প্রয়োজনে সময়-সময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করবেন। ওটা যেনো স্বাভাবিক নিয়ম। কিন্তু বৃটেনের থানাগুলোর চিত্র দেখতে বুঝতে পারলাম-ওটা আসলে পুলিশের নিয়ম না। ওটা বাংলাদেশের নিয়ম।

বাংলাদেশে একটি মফস্বল থানায়ও ওসি সাহেবের একটি বিশাল রুম থাকে। রুমে থাকে বিশাল একটি টেবিল। এরপর দরজায় দাঁড়িয়ে থাকে একজন পুলিশ কনস্টেবল। ওসি সাহেব বসা থেকে দাঁড়ালেই দন্ডায়মান পুলিশ কনস্টেবল অনবরত স্যালেউট দিতে থাকে। এটি যেনো দৈনন্দিন রুটিন ওয়ার্ক। লন্ডনের থানা পুলিশের চিত্র দেখি আর ভাবি বাংলাদেশে কি কখনো সেটা সম্ভব?

তাইসির মাহমুদ

বেথনালগ্রীন, লন্ডন

২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

বিষয়: বিবিধ

৯৯৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

377942
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ দুপুর ০৩:৫১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : মজার কথা হলো যে এই বৃটিশরা এই দেশ শাসন ও শোষন করার জন্য যে পুলিশি ব্যবস্থা এখানে কায়েম করেছিল আমরা সেটাকেই অন্ধের মত ধরে আছি!!!
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ রাত ০৪:৩৭
313268
তাইছির মাহমুদ লিখেছেন : ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File