এরপরও কি আমরা কিছু বলতে পারবো না?
লিখেছেন লিখেছেন তাইছির মাহমুদ ০৯ অক্টোবর, ২০১৫, ০৪:৫৯:০৪ রাত
রাসুলকে (সাঃ) সাহাবারা জিজ্ঞেস করেছিলেন, উট রশি দিয়ে বেঁধে আল্লাহর উপর ভরসা করবো, নাকি ছেড়ে দিয়ে? রাসুল (সাঃ) জবাবে বলেছিলেন, রশি দিয়ে বেঁধে এরপর আল্লাহর ওপর ভরসা করবে।
মৃতু্য ভাগ্যের ওপর নির্ভরশীল। যেভাবে ভাগ্যে আছে সেভাবেই হবে- এটা মুসলমানরা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করেন।
একজন গাছ কাটছে। আমি দেখছি গাছটি আমার ওপরে এসে পড়ছে, তাহলে আমি কি স্বস্থানে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকবো? নাকি দৌঁড়ে নিরাপদ স্থানে সরে পড়বো? যদি নিরাপদ স্থানে না গিয়ে ওখানে ইচ্ছা করে দাঁড়িয়ে মারা যাই, তাহলে সেটা কী হলো? অবশ্যই আত্মহত্যা। আর আত্মহত্যার পরিনাম কী সেটা আমরা জানি।
নূহ (আ এর সময়ে মহাপ্লাবন আসার আগে তিনি নৌকা বানিয়ে নিয়েছিলেন। আল্লাহ তায়ালাও তাদেরকে বাঁচাতে আগেই নৌকা বানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। আল্লাহ চাইলে তো তাদেরকে নৌকা ছাড়াও বাঁচাতে পারতেন? তিনি তো তা করেননি?
মুসা (আঃ) যখন ফোরাত নদী পাড়ি দিতে চেয়েছিলেন, তখন আল্লাহ সেখানে রাস্তা করে দিয়েছিলেন। বাতাসের সাহায্যে পার করে দেননি।
রাসুল (সাঃ) মক্কার কাফেরদের অত্যাচারে মদীনায় হিজরত করেছিলেন । আবু বকরকে (রাঃ) সঙ্গে নিয়ে উটে চড়ে দীর্ঘ ১২ দিন পায়ে হেঁটে, অনেক ছড়াই উৎরাই পেরিয়ে মদীনায় গিয়েছিলেন। তিনি কিন্তু আল্লাহর উপর ভরসা করে বসে থাকেননি যে, আল্লাহ তায়ালা তাঁর কুদরত দিয়ে গন্তবে পৌছে দেবেন।
বদরের যুদ্ধে সাহাবারা শহীদ হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কাফেরদের তরবারীর নিচে নিজেদেরকে উৎসর্গ করে দেননি। তরবারী উচিয়ে তাদের সাথে যুদ্ধ করেছেন। তাদেরকে হত্যা করতে গিয়ে নিজেরাও শাহাদত বরণ করেছেন।
রাসুল (সাঃ) বলেছেন, সমাজে অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা দেখলে হাত দিয়ে প্রতিহত করবে, তা করতে অক্ষম হলে মুখ দিয়ে প্রতিহত করবে, আর তাও না পারলে মন দিয়ে ঘৃণা করবে।
ইসলামী আইনে মানুষ হত্যার শাস্তি শিরশ্চেদ। ইসলামী আইন মানে কুরআনের আইন। কুরআনের আইন মানে আল্লাহর নির্দেশনা। আর আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলা ফরজ বা
অপরিহার্য্য।
এখন একদল লোক খোলা জায়গায় জামাতে নামাজ পড়ছে। এক ব্যক্তি প্রচণ্ড বেগে গাড়ি চালিয়ে এসে মুসল্লিদের উপরে উঠে গেলো। কয়েকজন মুসল্লী মারা গেলেন। তাহলে ওই গাড়ি চালক ব্যক্তির শাস্তি হওয়া উচিত কি-না? নাকি নামাজ পড়া অবস্থায় লোকজন যেহেতু মারা গেছেন ওনারা তো জান্নাতি। আর তাদের ভাগ্যের লিখনও তো এভাবেই ছিলো- তাহলে কি ওই মুসল্লিদের হত্যার বিচার চাওয়া যাবে না? গাড়িওয়ালা ধনকুবেরকে হত্যার জন্য দায়ী করা যাবেনা। তার কি কোনো শাস্তিই হবে না?
এরপরও কি আমরা বলবো, মিনায় হতাহতের জন্য হাজিদের ভাগ্যই দায়ী? এ ব্যাপারে কিছু বলা যাবেনা, প্রতিবাদ করা ঠিক হবেনা?
বিষয়: বিবিধ
১১১৭ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন