চাঁদে সাঈদীর মুখায়ব : জল্পনা-কল্পনা তুঙ্গে:
লিখেছেন লিখেছেন তাইছির মাহমুদ ০৪ মার্চ, ২০১৩, ১২:০৯:৪৮ দুপুর
গত দুইদিন যাবত একটি গুজব চলছে-জামায়াতের নায়েবী আমির মাওলানা দেলোয়ার হোসেইন সাঈদীর মুখায়ব নাকি চাঁদে দেখা গেছে। এটি এখন টক অব দ্যা বাংলাদেশ। এতোদিন টক অব দ্যা ওয়ার্ল্ড ছিলো সাঈদীর মৃতু্যদন্ডের রায়। কিন্তু এখন তাঁর সাথে যোগ হয়েছে তার মুখের প্রতিচ্ছবি চাঁদে দেখা যাওয়ার বিষয়টি। টেলিভিশনের বিভিন্ন টক শোতেও যোগ হয়েছে নতুন এ বিষয়টি।
রোববার রাতে চ্যানেল নাইনে সম্পাদকীয় নামে একটি টক শোতে এ বিষয়ে আলোচনা দেখলাম। দুইজন আলেমকে নিয়ে এই টক শো চলছিলো। এতে মাওলানা সাঈদীর চন্দ্রচ্ছবির বিষয়টিই বেশ গুরুত্ব পায়। একজন কলার ফোন করে জানতে চাইলেন-এটা বিশ্বাস করলে ঈমানের কোনো ক্ষতি হবে কি-না। জবাবে মাওলানা সাহেব বললেন, এটা একটি অবাস্তব বিষয়। এটা নিয়ে প্রশ্ন করাই অবান্তর। কেউ যদি সাঈদীর প্রতি বেশী ভক্ত হয়ে থাকেন তাহলে তিনি চাঁদের পানে তাকালে তাঁকে দেখতে পারেন। এটা তার আবেগের ব্যাপার। এমনকি তিনি সাঈদীর স্থলে যদি তার নিজের মুখায়ব দেখার আবেগী চিন্তা করেন তাহলে তিনি তার মুখও দেখতে পারবেন। তবে এখানে ঈমান নস্ট হওয়ার মতো কিছু নয়।
একই সময় সাংবাদিক শ্যামল দত্তের উপস্থাপনায় এটিএন বাংলায় আরো একটি টকশো দেখছিলাম। সেখানে অবশ্য কোনো মাওলানা অতিথি ছিলেননা। দুই অতিথির মধ্যে একজন নিজেকে খুব ধার্মিক দাবী করে বিষয়টির ব্যাপারে নিজ দায়িত্বে একটি ফতোয়া দিলেন। বললেন, এটা সম্পুর্ণভাবে শিরিক। যারা সাঈদীর মুখায়ব চাঁদে দেখেছেন বা বিশ্বাস করছেন তাদের মুসমানিত্ব থাকবেনা।
এই বিভ্রান্তি এড়াতে লন্ডনে কথা হলো এক ইসলামি চিন্তাবিদের সাথে। তিনি বললেন, কেউ চাঁদ দেখেছে দাবী করলে বা বিশ্বাস করলে যে ঈমান চলে যাবে, অবিশ্বাসী হয়ে যাবে, শিরিক হবে-এটা ঠিক নয়। কারন শিরিক হচ্ছে আল্লাহর সাথে কাউকে অংশিদার করার নাম। যেমন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, ঈসা (আঃ) আল্লাহর পুত্র। এটাই শিরক। কারন তারা এখানে ঈসা (আঃ)কে আল্লাহর ছেলে বানিয়ে তার সাথে শরীক করছেন। চাঁদে সাঈদীর মুখায়ব দেখা যাচ্ছে-এর মানে তো কেউ সাঈদীকে আল্লাহর সাথে তুলনা করছেনা।
তিনি বলেন, ইসলামে আধ্যাত্মিকতার নিয়ে দুটি বিষয় আছে। একটি হচ্ছে-মুজিজা আর অপরটি ক্বেরামতি। মুজিজা হচ্ছে নবী রাসুলদের জন্য নির্দিষ্ট। যেমন আল্লাহর রাসুল মোহাম্মদ (স এর আঙ্গুল ঈশারায় চাঁদ দ্বিখন্ডিত হয়েছিলো। এটা দেখে একদল মূর্তিপুজক ইসলাম গ্রহন করেছিলেন। তেমনী মুসা (আ এর লাঠি। যে লাঠিটি সাপ হয়ে যেতো। সাপ থেকে আবার লাঠি হয়ে যেতো।
আর ক্বেরামতি হচ্ছে-আল্লাহর ওলিদের জন্য। এটা শুধু প্রকাশ পায় আল্লাহর প্রিয় মানুষের মাধ্যমে। যেমন-শাহজালাল (রহ ক্বেরামতি। তিনি জায়নামাজ বিছিয়ে সুরমা নদী পার হয়েছিলেন বলে কথিত আছে। তেমনী ইমান বোখারী (রহ এর মৃতু্যর পর কবরের মাটি সুগন্ধি হয়ে যাওয়া-ইত্যাদি শতশত ওলির শতশত ক্বেরামতি রয়েছে। তিনি বলেন, এভাবেই সাঈদী যদি আল্লাহর প্রিয় ব্যাক্তি হয়ে থাকেন তাহলে চাঁদে তাঁর মুখায়বের চিত্র দেখিয়ে তাঁর মাধ্যমে একটি ক্বেরামতির বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারেন। এটা একেবারেই অস্বাভাবিক নয়।
এদিকে কেউ কেউ বলছেন, গ্রামগঞ্জের সরলপ্রাণ মানুষের মধ্যে মিথ্যা এটি বিষয় ঢুকিয়ে দিয়ে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে জামায়াতে ইসলামি? আপনি কী মনে করেন?
বিষয়: রাজনীতি
১২১১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন