আরো একটি একাত্তোর!
লিখেছেন লিখেছেন তাইছির মাহমুদ ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৭:১৯:০৫ সকাল
আমার দেশের বাড়ি ভারত সীমান্তে। বাড়ি থেকে সীমান্তের দুরত্ব মাইল তিনেক। ছোটকাল থেকেই দেখে আসছি, সীমান্তিক জনপদ হওয়ায় হরতাল ধর্মঘট আমাদের এলাকাবাসীর উপর তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনা। জাতীয় আন্দোলন-সংগ্রামের ঢেউ গ্রামীণ জনপদে তেমন কেনো আতংক সৃষ্টি করতে পারেনা।
ঢাকায় হরতাল ডাকা হলে তা পালনের নির্দেশনা পৌঁছতে পৌঁছতে হরতাল শেষ হয়েই যেতো। স্কুল-কলেজে ক্লাস হতো। ব্যাংকে লেনদেন স্বাভাবিকভাবেই চলতো। বাজারে মানুষের আনাগোনায় কমতি হতোনা। বিকিকিনিও চলতো স্বাভাবিক নিয়মে।
কিন্তু এখনকার অবস্থা সম্পুর্ণ ভিন্ন। মোবাইল টেলিফোনের বদৌলতে হরতালের নির্দেশনা গ্রাম গঞ্জে নেতা-পাতি নেতাদের কাছে সেকেন্ডের মধ্যে পৌঁছে যায়। তাই মিছিল মিটিং কিংবা জ্বালাও-পোড়াও ঢাকায় যেমন হয়, তেমনী গ্রাম-গঞ্জেও সমান তালে হয়।
গতকাল সকালে দেশে কথা হলো বড়ভাইয়ের সাথে। পারিবারিক কিছু বিষয়ে কথা বলতে ফোন দিয়েছলাম। কিন্তু আধঘন্টা কথা হলো শুধু দেশের পরিস্থিতি নিয়ে। তিনি চরম উদ্বেগের কথা জানালেন।
বললেন, কখন হরতাল ডাকা হয় আর কখন মিছিল বের হয় তার কোনো ঠিক নেই। তাই সবসময়ই চরম আতংকের মধ্যে থাকতে হয়। গাড়ি ব্যবসা একেবারেই লাটে উঠেছে। গাড়িগুলো সবসময় গ্যারেজে তালা দিয়ে রাখতে হয়। এক মিনিটের জন্য রাস্তায় বের করা যায়না। কখন পেট্রল দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয় এই দুশ্চিতায় সময় কাটে।
তিনি তার উদ্বেগের কথা জানালেন। বললেন, সরকারী দল বিরোধীদল তাদের কোনো ক্ষতি নেই। একদল ক্ষমতায় আছে, অন্যদল ক্ষমতায় আসতে চাচ্ছে। বিপদ আমাদের। ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের। নির্বাচন ছাড়াই আওয়ামীলীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে সরকার গঠনের পথে। বিরোধীদলতো কিছুতেই তা মেনে নেবেনা। তাহলে জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনের অবসান ঘটনার কোনো লক্ষন তো দেখছিনা । আন্দোলন চলবে।
তিনি তার উদ্বেগের কথা বলতেই থাকলেন। বললেন, ৭১ সালে ছোট ছিলাম। যুদ্ধ দেখেছি, তেমন বুঝিনি। এখন মনে হচ্ছে একাত্তরের মতোই আবার যুদ্ধ শুরু হলো। একাত্তরে যুদ্ধে যেতে পারিনি। এবারও তো পারবো।
বিষয়: বিবিধ
৯৯৮ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন