৬০ কোটি টাকার বিলবোর্ডে ৬০ লক্ষ ভোট গেলো!!!!!
লিখেছেন লিখেছেন তাইছির মাহমুদ ০৮ আগস্ট, ২০১৩, ১০:৪৬:২৩ সকাল
সরকারের সমালোচনা করতে মারাত্মক ভয় পাই। কারন সমালোচনাটা সরকারের পক্ষে গেলে কেউ কিছু বলবে না। কিন্তু বিপক্ষে গলে রক্ষা নেই। খুব সহজেই রাজাকার খেতাবটি পেছনে জুড়ে দেয়া হবে। এটা আজকাল খুব সস্তা খেতাব।
আজ একটি সমালোচনা না করে পারছিনা। যা হয় হবে। খেতাব দিয়ে দেয়া হলে তো করার কিছু নেই। খেতাবের ভয়ে তো আর চোখ মুখ বন্ধ করে বোবা হয়ে বসে থাকা যায় না ।
যদি বলা হয় বর্তমানে টক অব দ্য বাংলাদেশ কী? জবাবে সম্ভবত অনেকেই বলবেন- জনগনকে সরকারের উন্নয়ন কর্মের ফিরিস্তি গলাদকরনের জন্য নির্বাচনী পোষ্টারের মতো ঢাকা শহরে বিলবোর্ড টানানো। জনগনের ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকার এ মহত কাজটি করেছে। ৪ সিটি নির্বাচনে ভরাডুবির পর বেহুশ-বেকারার সরকার কিভাবে জাতীয় নির্বাচনে জিতে আবার রাস্ট্র ক্ষমতায় ফিরে আসতে পারে সেই ধান্ধায় এখন বেসামাল। আওয়ামীলীগের সভানেত্রী জানেন, তার সরকারের কোন কাজটি তাদের জনপ্রিয়তায় ধ্বংস নামিয়ে দিয়েছে । সেটি হচ্ছে- হেফাজত। শাপলা চত্তরে সরকারের বিরুদ্ধে একটি বিরাট শক্তি হিসেবে দাড়িয়েছিলো হেফাজত। কিন্তু সরকার লাখ লাখ গোলা বারুদ ছুড়ে অত্যন্ত নির্মমভাবে গুড়িয়ে দিলো এই শক্তিকে । তবে আশ্চর্যের ব্যাপার, ঘটনার ভয়াবহতা ও নির্মমতা এবার রূপ দিলো এক নতুন শক্তি। অর্থ্যাত দেশবাসী ঘটনাটি নীরবে দেখলো আর মুখ বুজে সহে গেলো। কিন্তু উপযুক্ত জবাব দিলো সিটি নির্বাচনে। প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পারলেন- ঐ হেফাজতই আমাদের সর্বনাশের মুল। তাই ভাবলেন, কিভাবে ওদের গায়ে একটা কিছুর লেবেল এটে দিয়ে শায়েস্তা করা যায় । তার দলের তরিতকর্মা নেতাকর্মীরা খোজে বের করলেন তেতুল তত্ত্ব। হেফাজত নেতা আল্লামা শফির তেতুল সংক্রান্ত একটি ঘরোয়া ওয়াজ তার বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করা হলো । কিন্তু এ নিয়ে কিছু আলোচনা-সমালোচনা হলেও তাতে মার্কেট পাওয়া গেলোনা। জনগনের বুঝতে অসুবিধা হলোনা প্রধানমন্ত্রীর তেতুল তত্ত্ব আবিস্কারের নেপথ্য কারণ। ফলে ফেইল হলো আল্লামা শফির বিরুদ্ধে দেশের নারী সমাজকে ক্ষেপিয়ে তোলার প্রজেক্ট।
তাহলে এখন কী প্রজেক্ট নেয়া যায়? প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা এবার গবেষণা করে উপায় খুজে বের করলেন। বললেন, পেয়েছি পেয়েছি। আর কারো বিরুদ্ধে কোনো লাগালাগি না। জামায়াত, হেফাজতের সাথে লাগালাগি করেই আজ আমাদের এই দশা। এবার আমরা আর কারো বিরুদ্ধে নয়। আমরা শুধু আমাদের গুণগান গাইবো। আমাদের কৃর্তীকর্মের বর্ণনা দেবো। জনগনকে কান ধরে দেখিয়ে দেবো উন্নয়ন কর্মকান্ড । আর এভাবেই আমরা উতরিয়ে আসবো আগামী নির্বাচনে। আর নির্বাচনে তো আমাদেরকে যেভাবে হোক জিততেই হবে।
যেমন ভাবনা তেমনি কাজ। প্রধানমন্ত্রীকে বলতেই তিনি বললেন জম্পেশ আইডিয়া। যত টাকা যায় যাউক। দেশের জনগনের যাবে। আমরা জনগনের জন্যই রাজনীতি করি। ৬০ কোটি কেন, শতশত কোটি খরচ করে বিলবোর্ড বানিয়ে ঢাকা শহর ঢেকে দাও। যেদিকে জনগনের দৃষ্টি পড়বে তারা আমাদের উন্নয়ন দেখবে, দেখতেই হবে।
কাজ শুরু। একরাতেই বিলবোর্ডে রাজধানী সয়লাব। সকালে ঘুম থেকে জেগে শহরবাসীর চোখ তো চড়কগাছ। ঘুমানোর আগে কী দেখলাম, আর ঘুম থেকে জেগে কী দেখছি। এতো রাতারাতি উন্নয়ন।
এসব দেখে রিক্সাওয়ালা কালু মিয়া হাসতে হাসতে মরে। চমক আলীর দেকানের সামনে রিক্সা দাড় করে চায়ের অর্ডার দেয়। বিড়বিড় করে বলতে থাকে- আমরা কি এতই বোকা যে বিলবোর্ড দেখে ভোট দেবো। উন্নয়ন দেখে ভোট দিলেতো গাজিপুর, খুলনায় কম উন্নয়ন হয়নি। তাহলে সেখানে আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের ভরাডুবি কেন?
চা দিতে দিতে চমক আলী অট্রহাসি দিয়ে বলে- সরকারের মাথা খারাফ। এদের এখন বেহুশ বেকারার অবস্থা। ৬০ কোটি টাকার বিলবোর্ডে ৬০ লক্ষ ভোট গেলো!!!!!
বিষয়: বিবিধ
১৮০৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন