‘প্রতি কেন্দ্রে ১০০ কর্মী সারা দিন নৌকায় ভোট দেবে’!!
লিখেছেন লিখেছেন হুদাই প্যাচাল বাক্স ০১ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৯:৩৬:০৭ রাত
যশোর: নিজে নির্বাচিত হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। তাই নিজের জন্য নির্বাচনের ব্যস্ততা নেই। তবে যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলামকে বিজয়ী করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। আর এ জন্য একটি উপায়ও বের করেছেন- ১০০ ছেলে থাকবে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের লাইনে। ওরা বুথে গিয়ে ভোট দেবে, আবার এসে পেছনে দাঁড়াবে। এভাবে সারা দিন নৌকায় ভোট দেবে তারা।
এই ব্যবস্থার আবিষ্কারক যশোর-১ (শার্শা) আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত আওয়ামী লীগদলীয় এমপি শেখ আফিলউদ্দিন। তার এই পরিকল্পনা ও বক্তব্যের অডিও সিডিসহ অভিযোগ করা হয়েছে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে।
এজেন্টদের উদ্দেশে শেখ আফিলউদ্দিন বলেন, “সাংবাদিক ও মানুষ যাতে বলতে না পারে এটা একতরফা নির্বাচন, ভোটার উপস্থিতি কম। মানুষকে বোঝাতে হবে ৫ তারিখে অনুষ্ঠিত ভোটকেন্দ্রে সারা দিন খুব লম্বা লাইন ছিল।”
শেখ আফিলউদ্দিন প্রকাশে ঘোষণা করেন, “মাঠ যেন ফাঁকা না হয়ে যায়। ১০০ ছেলে থাকবে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের লাইনে। ওরা বুথে গিয়ে ভোট দেবে, আবার এসে লাইনের পেছনে দাঁড়াবে। ওরা বাড়ি যাবে না। ১০০ ছেলে সারা দিন লাইনে থাকবে।” প্রতিটি কেন্দ্রে তার উপজেলা থেকে ১০০ নির্ভীক কর্মী উপস্থিত থাকবে বলে জানান তিনি।
ওই কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়ে আওয়ামী লীগের এই এমপি বলেন, “প্রশাসনিক কোনো ভয় নেই; সেটা আমি দেখব। লোক ও সাংবাদিকরা এসে দেখবে মাঠ ভরা।”
যশোর-২(চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসনে অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলামের প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।
দুই দিন আগে যশোর-২ আসনের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম যশোরের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, “তার প্রতিদ্বন্দ্বী নেতার পক্ষে বিপুলসংখ্যক সন্ত্রাসী ভোটার মাঠে রয়েছে। এসব সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা না হলে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না। সে ক্ষেত্রে ৩ জানুয়ারি থেকে আমরণ অনশনে যাব আমি।”
নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী এজেন্টদের উদ্দেশে দেয়া শেখ আফিলউদ্দিনের বক্তব্য রেকর্ড করেছেন অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের সমর্থকরা। রেকর্ড করা ওই বক্তব্যের অডিও সিডি সাংবাদিকদের কাছেও রয়েছে। ওই সিডিসহ অধ্যাপক রফিকুলের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট শাহীন-উল-কবীর বুধবার জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
যশোরের রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়েছে। এটি ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। কমিটি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।”
যশোর-২ আসনের শার্শাসংলগ্ন ছয়টি ইউনিয়নের ভোটকেন্দ্র দখল ও নিজস্ব লোক দিয়ে শতভাগ ভোট কাস্টিংয়ের পরিকল্পনা রয়েছে ওই অডিও টেপে। গত ৩০ ডিসেম্বর সোমবার ঝিকরগাছা উপজেলার পারবাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলামের পোলিং এজেন্টদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় শেখ আফিলের এই বক্তব্য রেকর্ড করা হয়। এ সভায় নৌকার প্রার্থী অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানার জন্য এমপি শেখ আফিলউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার ফোনে রিং হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
আফিল গ্রুপের পরিচালক ও আফিলউদ্দিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু মাহবুবুল আলম লাভলুকে বিষয়টি জানিয়ে এমপির সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়ার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তিনি বলেন,“এমপি সাহেব কর্মীসভায় ব্যস্ত আছেন। তিনি এখন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না।”
বিষয়: বিবিধ
১৬৫৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন