দুই বড় রাজনৈতিক দলের কুকুর কামড়া -কামড়িতে পরিণত হয়েছে।

লিখেছেন লিখেছেন জাদুর কাঠি ২৩ মার্চ, ২০১৩, ০২:৫১:৩৯ রাত

আমরা সবাই লক্ষ্য করছি যে ১৯৭১ সালের কুখ্যাত,ঘাতক রাজাকারদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে দেশ জুড়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল এ প্রজন্মের তরুণদের নেতৃত্বে -তা কীভাবে দুই বড় রাজনৈতিক দলের কুকুর কামড়া -কামড়িতে পরিণত হয়েছে। এটা যে হয়েছে গণ জাগরণ মঞ্চের ব্লগার নেতৃবৃন্দের 'সকল রাজাকারের ফাঁসি চাই' এবং 'নব্য রাজাকার তত্ত্ব', আওয়ামী লীগের কোলে চড়া ( বাধ্য হয়ে বা নিরাপত্তার জন্য) এবং বিএনপি বিদ্বেষী মন্তব্য ও আচরণের কারণে তা আর বলে দেয়ার অপেক্ষা রাখে না।আর এই ডামাডোলে পড়ে এখন ঘাতক রাজাকারের বিচারের দাবিটিও আর জোর গলায় শোনা যাচ্ছে না-গণ জাগরণ মঞ্চ ম্রিয়মান হওয়ার সাথে মিল রেখে। আর যে বিএনপি অনেক ইস্যু থাকা সত্ত্বেও কোন প্ল্যাটফর্ম পাচ্ছিল না বলে সরকার বিরোধী আন্দোলন শুরু করতে পারছিল না -তারা এখন চমত‌‌কার একটি প্ল্যাটফর্ম পেয়ে জোরদার আন্দোলনে নেমে পড়েছে -এমন কী সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন শুরু করার হুমকি ও দিচ্ছে। আর এর মধ্যে পড়ে হারিয়ে যাচ্ছে গণ জাগরণ মঞ্চ।কিন্তু এসব কী অপ্রত্যাশিত ছিল ? বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাস এবং দলগুলোর আচরণ এবং জন প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে অভিজ্ঞ যে কোন সচেতন বাংলাদেশি নাগরিকের পক্ষে এসব ভবিষ্যত বাণী করা কঠিন কিছু নয়। সমস্যা হলো যাদের এসব ভাবার কথা -গণ জাগরণ মঞ্চের সেই সব নেতৃবৃন্দ কী ভেবেছিলেন -মানে শিক্ষিত ব্লগার নেতৃবৃন্দ? দুই দলের কুকুর কামড়া-কামড়ির মধ্যেপড়ে এখন তারা কী করবেন ?বাংলাদেশে ২০১৩ সালে 'নাস্তিক' যে একটি গালি -শুধু গালি-ই নয় -এক ধরণের কালিমা (Stigma) তা এর আগে এমন করে আর বোঝা যায় নি এবং আমি ভাবতেও পারিনি। কারণ বিগত ৪/৫ বছর ধরে উলটো চিত্র-ই দেখা গেছে । ব্লগে ব্লগে স্বঘোষিত 'উগ্রবাদী নাস্তিকেরা (Militant Atheists)' সগর্বে নিজদের অস্তিত্ব্ব জানান দিয়েছে - ধার্মিকদের যুক্তি দিয়ে -বুদ্ধি দিয়ে ধরাশায়ী করেছে। আবার কখনো গালিগালাজ করে -ছাগু-রাজাকার ইত্যাদি উপাধি দিয়ে অপমান করে ব্লগ হতে বের করে দিয়েছে। এসব দেখে মনে হতো একজন শিক্ষিত মানুষ নিজেকে ধার্মিক বলে পরিচয় দেয়া বা ধর্মের প্রতি বিন্দুমাত্র অনুরাগ দেখানো যেন একটি লজ্জার ব্যাপার- একটি বালক সুলভব্যাপার।একজন নাস্তিকের পক্ষে একজন আস্তিককে বিতর্কে ধারাশায়ী করা পানির মতো সোজা - কিছু সহজ যুক্তি এবং বৈজ্ঞানিক তথ্য বা তত্ত্ব প্রয়োগ করে ।এতে বাহাদুরির কিছু নেই। তবে নাস্তিক ব্লগারদের এসব আক্রমণের লক্ষ্য ছিল মূলতঃ বাঙলা ভাষা-ভাষী মুসলিমেরা ।যদিও তারা বলতে চাইতো যে তারা আসলে জামাত-শিবিরের বিরুদ্ধে এসব লিখছে।কিন্তু তারা কাউকে-ই ছাড় দিতো না। তাদের কেউ কেউ এ তত্ত্ব্ব প্রদান করেছিল যে জামাতীরা-ই হলো আসল মুসলিম- ১৯৭১ -এ জামাতীরা যা করেছে তা-ই হলো একজন মুসলিমের কাজ -তাই ইসলাম-ই হইলো খারাপ- আর মডারেট মুসলিম বলে কিছু নেই । তাই ইসলামকে-ই দূর করতে হবে- ধ্বংস করতে হবে। তাদের যখন বলা হলো যে ১৯৭১ সালে এই জনপদের মুসলিমরা রাজাকারদের প্রত্যাখ্যান করেছিল তখন ও তারা তা আমলে আনলো না। তারা এসব কথা বলার জন্য আওয়ামী লীগের ধার্মিক ব্লগারদের অপমান করেছে-গালিগালাজ করেছে। এমন কী যখন কেউ বলেছে যে সে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বা তার পরিবার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ছিল তখন তার জন্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে - তাকে পাকি জারজ বলেছে -তার মা রাজাকার বা পাকিস্তানী সৈন্যদের সাথে অবৈধ যৌন সম্পর্ক করে তার জন্ম দিয়েছে কী না এসব জানতে চেয়েছে । অত্যন্ত দুঃখের সাথে সেই সব ব্লগ ছেড়ে চলে গিয়েছিল ধর্মের সপক্ষে থাকা ব্লগাররা এবং আশ্চর্য যে তারা প্রায় সকলে-ই ছিল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে এবং আওয়ামী লীগ বা বিএনপি'র সমর্থক। আজ গণ জাগরণ মঞ্চের গায়ে নাস্তিকতার কালিমা লাগিয়ে দেয়া হয়েছে ভাল করে- গোবর লেপার মতো করে -সেই সকল উগ্রবাদী নাস্তিক ব্লগারদের কিছু সংখ্যককে গণ জাগরণ মঞ্চে দেখে।

গণ জাগরণ মঞ্চের ব্লগার নেতৃবৃন্দ, এখন আপনারা কী করবেন ?

বিষয়: বিবিধ

৯৯৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File