সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশ কোনদিন রুক্ষ-পাথুরে আফগানিস্থান হবেনা।
লিখেছেন লিখেছেন জাদুর কাঠি ০১ মে, ২০১৩, ০৪:০১:৫৪ রাত
ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি, আমরা বাঙালিরা খারাপ। আমরা স্বার্থপর, হীণমন্য, পরশ্রীকাতর, মানুষের বিপদে এগিয়ে আসিনা, শৃংখলাবোধ নেই, দেশপ্রেম নেই, চোরের জাতি ইত্যাদি নানা অভিধায় আমরা অভিষিক্ত।
কিছুটা বড়ো হওয়ার পর মনে প্রশ্ন জাগতো, " এরকম নষ্ট একটি জাতিগোষ্ঠি কিভাবে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীনতা আনলো"? জবাব খুঁজতে গিযে মাথায় বেঁধে যেতো চিন্তাজট।
একাত্তরে আমি ছিলাম না তার আরও ১২/১৩ বছর পরে আমার জন্ম। তাই নিজ চোখে দেখার সৌভাগ্য হয়নি একটি জাতির ভিতরে কিভাবে এতো বৈপরিত্য থাকতে পারে।
সাভার ট্রাজেডির পর বুঝতে পারছি, বাঙালির অন্তর্নিহিত শক্তির উৎস তার আবেগ, মানুষের জন্য নিখাদ ভালোবাসা। শেখ মুজিব নামের মানুষটি বাঙালির এই নাড়ির স্পন্দনটি ধরতে পেরেছিলেন বলেই আমাদের দিতে পেরেছিলেন স্বাধীন রাষ্ট্র, হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।
সাভারে শাহানা নামের বোনকে বাঁচাতে না পারার ব্যর্থতায় কঠোর পেশাদার সেনাসদস্যের কান্নার ছবি দেখেছি। দল-মত নির্বিশেষে সাভারের মানুষের ছুটে যাওয়ার চিত্র দেখেছি। দেখেছি সেই তরুণ বা তরুণীকে যে জীবনে কথনো লাশ দেখেনি সেও ব্যস্ত লাশ হযে যাওয়া মানুষটিকে উদ্ধারে। জাহাঙ্গীরনগরের যে ছেলেটিকে এতোদিন জানতাম ইভ-টিজার হিসাবে তাকে দেখেছি হাত বাড়িয়ে দিতে রক্ত দেয়ার জন্য। যে ডাক্তারকে হয়তো গালি দিয়েছি কসাই বলে কোন একদিন তাকেই দেখেছি দিন-রাত্রি মানুষ বাঁচানোর আপ্রাণ যুদ্ধে।
ফায়ার-সার্ভিস, সিভিল ডিফেন্স, ছাত্র-সংগঠন, নারী-শিশু, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে উচ্চকিত তরুণ অথবা এক প্যাকেট বিস্কুট হাতে নিয়ে আগত পিতা- কাকে ছেড়ে কার কথা বলবো?
আবেগ ও ভালোবাসার এই জোয়ার-ভাটার দেশে এখনো স্বপ্ন দেখতে সাহস পাই। বিশ্বাস করি, সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশ কোনদিন রুক্ষ-পাথুরে আফগানিস্থান হবেনা।
হৃদয়ের গভীর থেকে ধন্যবাদ জানাই মাননীয় বিরোধীদলীয় নেত্রীকে হরতাল প্রত্যাহারের জন্য। অকৃত্রিম অভিনন্দন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে, হরতাল প্রত্যাহার করার পর তিনি বিরোধীদলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
দিনশেষে এই দেশটি একান্তই আমাদের, আমাদের সন্তান-সন্ততির। আমরা একাত্তরের শহীদদের গর্বিত উত্তরাধিকার।
বিষয়: বিবিধ
১৫৯৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন