বাংলাদেশ কে কি এখন আর নদী মাতৃক দেশ বলা যায়?
লিখেছেন লিখেছেন মাটির মানুষ ০২ জুন, ২০১৩, ১১:৪৩:১৪ সকাল
বাংলাদেশ কে কি এখন আর নদী মাতৃক দেশ বলা যায়?
নদী বাংলাদেশের জন্য এমন একটি প্রকৃতিক সম্পদ মিহান আল্লাহর এক অপরুপ দান।এই নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে আমাদের সভ্যতা এবং সংস্কৃতি।এই নদীকে আশ্রয় করে লিখা হয়ে অনেক কালজয়ী উপন্যাস, কবিতা, গল্প।কবি তার মনের ভাবনা মেটানোর জন্য বেছে নিত নদীকে।তার সকল সুখ দুঃখ আশা নিরাশা আনন্দ বেদনার একমাত্র কেন্দ্রস্থল ছিল এই নদী।এই নদীর বক্ষে গড়ে উঠেছে কালজয়ী উপন্যাস-পদ্মানদীর মাঝি,তিতাশ একটি এবং আরও অনেক সাহিত্য।এই নদীকে কেন্দ্র করে উঠেছে আমাদের জীবন যাত্রা।গড়ে উঠেছে নগর বন্দর এবং জীবন জীবিকার উপকরন।এই নদীই আমাদের সুখ দুঃখের সাথী হয়ে উঠেছে।আমাদের অর্থনীতি গড়ে ওঠেছে অনেকটা নদীনির্ভর ।কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হল আজ আমরা হারাতে বসেছি আমাদের এই ঐুতিহ্য।আমারা নিজেরাই হত্যা করছি আমাদের নিজের জীবন।আমারা একুশ উৎযাপন করি বাংলা নববর্ষ উৎযাপন করি কিন্তু যেখান থেকে আমাদের এই কৃষ্টি ও আমাদের প্রানের সংস্কতি গড়ে উঠেছে আমারা তার কোন খেয়াল করছি না।আমারা হারিয়ে যাচ্ছি আামাদের নিজেদের অজান্তে অতল গভিরে।আমারা ধীরে ধীরে হারাতে বসছি আমাদের সংস্কৃতির উৎসদাতা,আমাদের জীবন,আামাদের প্রণের স্পন্দন,আমাদের এই নদী গুলোকে।অন্যান্য দেশ এই নদীকে ঘিরে গড়ে তুলেছে তাদের দেশ।তারা এখন হয়েছে উন্নত এই বিশ্বের দরবারে।কিন্তু আমারা কই।আমারা নিজেদের স্বার্থ হারাতে বসেছি প্রকৃতির দেওয়া আমারদের এই নদীগুলোকে।এই নদী হারিয়ে গেলে আমার মনে হয় আমারা এমন এক সময় আসবে যে আমারা নিজেদের অস্তিত্ব হারাতে বসবো।এক সময় আমাদের দেশে নদী ছিল আনুমানিক ৪৩০টি কিন্তু এখন বর্তমানে আছে ২০১টি অথবা ২৩০টি।এর বুকের মধ্যে ব্যরেজ রয়েছে সাতটিতে এবং আরও একটিতে বাঁধ দেবার পরিকল্পনা হচ্ছে।নদীতিরবর্তী এলাকার রয়েছে প্রায় ৮৯টি যার মধ্যে বসবাস করে হাজার হাজার মানুষ।এই মানুষগুলোর জীবনযাত্রা নির্ভর করে এই নদীর উপর।এই ব্যারেজ গুলোর মাধ্যমে আমারা ধীরে ধীরে হারাতে বসেছি আমাদের দেশের অন্যতম প্রাকৃকিত সম্পদ এই নদীগুলোকে।
আবার আমারা নিজেরাই দুষিত করছি এই নদীগুলোকে যার ফলে এই নদীগুলে হারাতে বসেছে নিজেদের অনন্ত যৌবন এবং নিজেদের নিজস্ব সম্পদ।এটি হারাতে বসেছে নিজের আদিকাল হতে তৈরা করা নিজস্ব গতিপথ।যার ফলে আমারা পাচ্ছি একটি মৃত নদী।এর অন্যতম উাহরন হল আমোদের রাজধানীর পাশে বয়ে যাওয়া বুড়িগঙ্গা।আমারা নগর তৈরী করে সভ্য হচ্ছি কিন্তু আমারা আমাদের প্রানের স্পন্দন এই নদীকে বিসর্জন দিয়ে।যে নদী আমাদের দিয়েছে তার বুক ভরা জলে এবং উজার করে দিয়েছে তার অমুল্যবান সম্পদ কিন্তু আমারা স্বার্থপর এর মত তার কাছ হতে শুধু নিয়েছি কিন্তু তার বদলে দিয়েছি শুধু তাকে মৃত্যু।
আমাদের দেশে এখন অনেক নদী বিলিন হয়ে যাচ্ছে কালের গর্ভ।আমারা আর নাম শুনতে পাই না এই নদীগুলোর এবং এর জলের মিষ্টি পানি দ্বারা আর আমরা মেটাতে পারি না আমাদের তৃষ্ঞ।আমারা হারাতে বসেছি ডাকাতিয়া,শংখ,কুমার,বানার,বড়াল,নাগর,বাঙালী,ভদ্রা,শিবসা,খোয়াই,মানিক,বেঘাই আরও অনেক।হারাতে হারাতে আমারা একদিন হারিয়ে ফেলব নিজেদের।
আমারা শুধু নদীরক্ষার জন্য সবসময় একে অপরকে দোষারপ করি।সর্বাবস্থায় দোষ গিয়ে পড়ে সরকারের উপর।আমি বলতে চাই আমার এই দেশটি এবং এই নদীগুলোকি সরকারের না আমি, তুমি, আমরা সকলের।যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে কেন আমারা সবসময় একদিকে আঙ্গুল দেখাই।আমারা নিজেরা একটু সচেতন হয়ে এই নদীগুলোকে রক্ষা করতে পারি।হ্যাঁ তবে এই কাজের জন্য সরকারকেই আগে এগিয়ে আসতে হবে।নদী দখল,নদী হতে অতিরিক্ত বালু উত্তলন,নদী ভালোকরে ড্রেজিং এই সব প্রশাশনিক কাজ কিন্তু সরকারের।যেহেতু জনগনকে নিয়েই সরকার তাই আমারা সাধারন জনগন এক্ষেত্রে এগিয়ে আসবো।সর্বশেষ যে কথাটি বলতে চাই আমাদের মত একটি উন্নয়নশীল দেশে দেশের উন্নয়নের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ন ভুমিকার রাখতে পারে এই নদীগুলো।এবং আমারা নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য আমাদের এখনই এগিয়ে আসা প্রয়োজন এই নদী রক্ষা করার জন্য।
“এই পদ্মা এই মেঘনা ,এই যমুনা সুরামা নদী তটে
আমার রাখার মন গান গেয়ে যায়
এই আমার দেশ এই আমার প্রেম
আনন্দ বেদনায় মিলন বিরহ সংকটে…………..”
বিষয়: বিবিধ
১৬৫৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন