সংকটকালে মূল ধারার ইসলামী শক্তি জাতিকে পথ দেখাবে

লিখেছেন লিখেছেন শিক্ষানবিস ২৯ মার্চ, ২০১৩, ০৯:০৬:১৮ সকাল

দৈনিক ইনকিলাব

২৯.০৩.২০১৩

রাজনৈতিক ভাষ্যকার : শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে হাজার হাজার শব্দ সম্বলিত সংবিধানে মহান আল্লাহর নামটির জায়গা হল না। বিসমিল্লাহর অনুবাদে বিকৃতি আনা হল। তুলে দেয়া হল আল্লাহর উপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস। চার মূলনীতির নামে সেক্যুলারিজম ও সোশ্যালিজম বহাল করা হল ‘আল্লাহর উপর ঈমান ও আস্থা’ বাদ দিয়ে। ধর্মহীন সমাজব্যবস্থা কায়েমের জন্য অপসংস্কৃতির তুফান শুরু হয়েছে। শিক্ষাব্যবস্থায় যাচ্ছেতাই অন্তর্ভুক্ত করে পড়ানো শুরু হয়েছে। মিডিয়ায় চলছে সর্বগ্রাসী মিথ্যাচার ও অপপ্রচারণা। ঘুষ, দুর্নীতি, কেলেংকারির ভারে অর্থনীতি ও জনজীবন ন্যূব্জ। এর উপর নাস্তিক ব্লগারদের সীমাহীন ঔদ্ধত্য ও প্রিয়নবী (সা.)-এর শানে ইতিহাসের জঘন্যতম বেয়াদবির ফলে মুসলিম জনগণের অন্তরে মারাত্মক আঘাত ও ধর্মীয় অনুভূতি আহত হওয়ার প্রতিবাদে দেশের অরাজনৈতিক শান্তিপ্রিয় মানুষ ক্ষুব্ধ ও প্রতিবাদে মুখরিত হয়ে উঠেছে। নাস্তিক মুরতাদদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের পক্ষাবলম্বন করায় তৌহিদী জনতা দুঃখে-ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে। তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিল ও সমাবেশে সরকারী পেটোয়া বাহিনী ও পুলিশের নির্বিচার হামলা আর নির্মম আচরণ তাদের ক্ষোভকে আরো ধূমায়িত করে। প্রতিবাদী মানুষের উপর গুলী, টিয়ারগ্যাস তো বটেই তাদের উপর দমন-পীড়ন, হামলা-মামলা ও ইমাম-খতিব, আলেমদের চাকরিচ্যুতিও চলছে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায়। সরকারী লোকজন এখনো নাস্তিকদের পক্ষে কথা বলছে, সাফাই গাইছে, কাজ করছে। অপরদিকে মহানবী (সা.)-এর মর্যাদা রক্ষায় কোন আইন পাসের উদ্যোগ বা নাস্তিক ব্লগারদের গ্রেফতার ও শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।

এ অবস্থায় ইসলামপ্রিয় জনতা অব্যাহতভাবে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। ঈমান রক্ষার এ আন্দোলন চলতেই থাকবে। এ আন্দোলনে যারা শরিক হবেন, সংহতি প্রকাশ করবেন, তারাই বাংলাদেশে ভবিষ্যতে রাজনীতি করতে ও নেতৃত্ব দিতে পারবেন। যারা ব্যর্থ হবেন বা বিরোধিতা করবেন, তারা সংখ্যালঘু হয়ে বিতাড়িত হবেন। এটাই সত্য। এটাই বাস্তব।

বিকল্প ইসলামী শক্তির উত্থান ঘটাতে আজকের মহাসমাবেশ সফল করতে ইসলামী নেতৃবৃন্দের নিরলস প্রচেষ্টা থেকেই এ কথা প্রমাণিত।

নাস্তিক্যবাদী ও ধর্মবিরোধীদের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনকে বেগবান করে বড় ঝাঁকুনি দেয়া এবং ব্যর্থ সরকারসমূহের পরিবর্তে ইসলামকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে ইসলামী আন্দোলন শক্তি ও সমর্থন প্রদর্শন করতে ২৯ মার্চ পল্টনে মহাসমাবেশ করতে যাচ্ছে। উল্লেখিত লক্ষ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আজকের এ মহাসমাবেশকে সর্ববৃহৎ জনসমুদ্রে পরিণত করতে সারাদেশে ব্যাপক সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন পীর ছাহেব চরমোনাইসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এবং কর্মীগণ। মহাসমাবেশের মাধ্যমে একটি বড় শোডাউন করার উদ্দেশ্য সামনে রেখে পীর ছাহেব চরমোনাই ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ গত ক’সপ্তাহ দিনরাত ছুটেছেন এক জেলা থেকে আরেক জেলায়। একের পর এক প্রস্তুতি সভায় তারা মহাসমাবেশ সফলের আহ্বান জানান। পীর ছাহেবের মতে, আগামী নির্বাচনের পূর্বে এরূপ আর একটি মহাসমাবেশ করা সম্ভব নাও হতে পারে। তাই এ মহাসমাবেশের গুরুত্ব অধিক। দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ এ মহাসমাবেশকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে মহাসমাবেশ সফলে নিরলস সময় ব্যয় করেন ধর্মদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দেশের ইসলামপ্রিয় জনতাকে উজ্জীবিত করতে এবং হেফাজতে ইসলাম আহূত আগামী ৬ এপ্রিল ঢাকা অভিমুখী দেশের সবচেয়ে বড় ঢাকামুখী লংমার্চ সফল করার অনুপ্রেরণা যোগাতে আজকের মহাসমাবেশ সফলের সব কার্যক্রম জোরেশোরে চালানো হয় বলে ইশা আন্দোলনের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, এ মহাসমাবেশের উদ্দেশ্য ধর্মদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে উজ্জীবিত করা এবং আগামী ৬ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের ডাকে লংমার্চ সফলে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অনুপ্রাণিত করা। তারা বলেন, রাসূল (সা.) ও ইসলামের বিরুদ্ধে কটূক্তিকারীদের গ্রেফতার, এদের সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য সংসদে আইন পাস এবং সংবিধানে আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃ স্থাপন এবং ধর্মনিরপেক্ষতা তুলে দেয়ার বিষয়ে ধর্মপ্রাণ জনতার দাবিকে মেনে নিতে সরকারের উপর একটি শক্ত চাপ সৃষ্টি করাও এ মহাসমাবেশের উদ্দেশ্য। এছাড়া প্রচলিত সরকারসমূহের সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতার প্রেক্ষিতে দেশের শাসন ব্যবস্থায় ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করতে একটি বিকল্প ইসলামী শক্তির উত্থান ঘটানো এ মহাসমাবেশের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। জাতীয় সংকট মুহূর্তে নীতিবান নেতৃত্বের আওতায় যারা নির্দ্বিধায় তৃতীয় শক্তিরূপে আত্মপ্রকাশ করতে পারবে।

এদিকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর, দারুল উলুম হাটহাজারীর মুহতামিম শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী বলেছেন, রাসূলের (সা.) শানে যারা বেয়াদবী করছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে বাংলার জমিনকে পবিত্র করতে হবে। শাহবাগে নাস্তিক ব্লগারসহ যারা সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী প্রিয় নবী সায়্যিদুল আম্বিয়া হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে মিথ্যা অসম্মানজনক কটূক্তি করেছে সকলের বিচার করতে হবে। ইসলামের মৌলিক ফরজ বিধান পর্দা পালনকে যারা ব্যঙ্গ করেছে তাদের এবং নাস্তিক মুরতাদসহ ধর্মদ্রোহীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য সকল মুসলমানদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান। আল্লামা আহমদ শফী আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে রাসূলে পাক (সা.) এর দুশমনরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ধর্মের উপর আঘাত বরদাশত করা হবে না। ইসলামের শত্রুদের যারা প্রশ্রয় দেয় তারাও ইসলামের শত্রু। তিনি বলেন, আশেকে রাসূলদের এদেশে রাসূল (সা.) এর শানে কেউ বেয়াদবী করলে আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। এদের প্রতিহত করতে আমরা রক্ত দিতে প্রস্তুত রয়েছি। তিনি ইসলাম বিদ্বেষী শক্তির দাঁতভাঙা জবাব দেয়ার জন্য আলেম-ওলামা ও তৌহিদী জনতার প্রতি আহ্বান জানান।

তাঁর আহ্বানেই সংঘটিত হতে যাচ্ছে আগামী ৬ এপ্রিলের ঐতিহাসিক লংমার্চ। এ সম্পর্কে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে নিম্ন বর্ণিত চিত্র পাওয়া গেছে।

হিলির আখতারুজ্জামান তার দেড়শ’ সঙ্গী নিয়ে ৬ এপ্রিলের লংমার্চে ঢাকা আসবেন। তাদের মসজিদের ইমাম সাহেব চট্টগ্রামের হাটহাজারি মাদরাসা থেকে পাস করা বর্ষীয়ান আলেম। সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেমে দীন, হেফাজতে ইসলামের আমির, শায়খুল হাদিস আল্লামা শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে দেশে যে নাস্তিক-মুরতাদ বিরোধী জাগরণ শুরু হয়েছে, এতে দেশের প্রতিটি অঞ্চলের মানুষ এখন উজ্জীবিত। নওগাঁ, রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জের ঘরে ঘরে লংমার্চেরই আলোচনা। খুলনা, বরিশাল, যশোর, কুষ্টিয়া, বৃহত্তর ফরিদপুরেও দলমত নির্বিশেষে দেশপ্রেমিক মানুষ তাকিয়ে আছে ৬ এপ্রিলের লংমার্চের দিকে। তৌহিদী জনতা ইমাম, আলেম, রাজনৈতিক নেতা ও সমাজকর্মীদের সাথে নিয়ে লংমার্চ করে আসবে তারা রাজধানীর দিকে। শেরপুর, জামালপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ থেকে তৌহিদী জনতার ঢল ঢাকার দিকে আসছে। তামাবিল সীমান্ত থেকে সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, বি-বাড়িয়া, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ধুয়ে মুছে তৌহিদী জনতা বানের পানির মত নাস্তিক-মুরতাদদের পাপচিন্তা ও অপকর্মের অভিশাপ থেকে রাজধানীকে পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন করতে আসছে ৬ এপ্রিল।

এ লংমার্চ কোন দলের ক্ষমতা দখলের লড়াই নয়। কোন দলকে গদি থেকে ঠেলে নামানোর আন্দোলনের অংশও নয়। এ হচ্ছে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর মর্যাদা রক্ষার ঈমানী সংগ্রাম। ইসলাম, কোরআন, সুন্নাহ ও ধর্মীয় মূল্যবোধ বিরোধী গভীর ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনতার অরাজনৈতিক উত্থান। দেশের দুর্যোগ মুহূর্তে ব্যর্থ রাজনীতির দুর্বল সময়ে জাতির আশা-আকাক্সক্ষা জাগ্রত রাখার প্রয়োজনেই উলামা-মাশায়েখ ও তৌহিদী জনতার এ জাগরণ। দেশের সচেতন মানুষের নীরব অনুভূতিরই সংহত বহিঃপ্রকাশ এই হেফাজতে ইসলাম। রাজনীতির নষ্ট সময়ে এটিই আশার আলো। শত কথা, বিভ্রান্তি ও অপবাদেও অটল আল্লামা শাহ আহমদ শফী। বৈরী মিডিয়ার কঠিন অপপ্রচারেও অবিচল হেফাজতে ইসলামের লক্ষ কোটি সমর্থক। নাস্তিক ব্লগারদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে তারা অনড়। মুসলমানের প্রাণের অধিক প্রিয়তম নবী (সা.) তাঁর পরিবারবর্গ, সম্মানিত সাহাবীগণ, নামাজ, ঈদ, রোযা, হজ, জিহাদ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ইতিহাসের জঘন্যতম কুৎসা রটনাকারী পাপীদের আইনের আওতায় আনার জন্য সংসদে ‘ধর্ম অবমাননা আইন’ পাস, চিহ্নিত ব্লগারদের পক্ষপাতিত্ব ছেড়ে সরকারকে তৌহিদী জনতার কাতারে আসা ইত্যাদি দাবি নিয়ে চলমান শান্তিপ্রিয় ঈমানী আন্দোলন অমর অক্ষয়। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, সাড়ে চার লাখ মসজিদ ও আড়াই লাখ মক্তব-মাদরাসা, অসংখ্য খানকাহ, দরবার থাকবে ততদিন বিশ্বনবী (সা.)-এর অবমাননা করে কোন শক্তিই পার পাবে না।

টেকনাফ, কক্সবাজার, বান্দরবান, উখিয়া, পটিয়া, চট্টগ্রাম, মিরেশ্বরাই, ফেনী, পদুয়ার বাজার, কুমিল্লা, দাউদকান্দি, মেঘনা, মদনপুর, কাঁচপুর, সাইনবোর্ড হয়ে লংমার্চের মূল গাড়িবহর রাজধানীতে প্রবেশ করবে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নবী প্রেমিক তৌহিদী জনতার এ প্রবহমান জোয়ার রুখবে সাধ্য কার? হেফাজত নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাদের নানা চাপ, প্রলোভন ও ভয়ভীতি মোকাবেলা করে এগুতে হচ্ছে। বলা হচ্ছে, জামায়াত-শিবির তাদের টাকা-পয়সা দিচ্ছে। হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঈনুদ্দীন রুহী বলেন, ঈমানী আন্দোলনের জন্য টাকা যদি নিতে হয় তাহলে জামায়াত কেন, সরকার থেকে নেব। জামায়াত ক’টাকা দিতে পারবে? টাকা-পয়সা তো সরকারি দলের লোকদের কাছেই বেশি থাকার কথা! এক প্রশ্নের জবাবে মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, সারাদেশের আলেম, ইমাম, ছাত্র, জনতা ও ধর্মপ্রাণ মানুষ ঈমান ও দেশরক্ষার প্রেরণায় নিজেদের জানমাল ব্যয় করে এই লংমার্চে শরিক হবে। লংমার্চ বাস্তবায়ন কমিটির দায়িত্বশীলেরা অন্ততঃ ২ কোটি লোকের সাড়া পেলেও আমরা প্রথমবারের এ কর্মসূচিতে ৫০ লাখ মানুষকে এলাউ করেছি। ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলো থেকে কমপক্ষে ৩০ লাখ মানুষ আশা করছি। বাকি ২০ লাখ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে। ধারণা করা হচ্ছে যে, লংমার্চে আসতে বাধা আসতে পারে কিংবা সরকার গুলী চালাতে পারে, তাই ১০ লাখ লোক আগেই ঢাকার চারপাশের এলাকায় হাঁটার দূরত্বে অবস্থান নেবে। এদের সবাইকে যে বাইরে থেকে আসতে হবে, তেমন নয়। দেশের সব জায়গায়ই তো তৌহিদী জনতা রয়েছে। ঢাকা মহানগরীর ভেতর লাখ লাখ লোক স্বতঃস্ফূর্তভাবেই রাজপথে নেমে আসবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। আমরা সরকারকে বলব, ঈমানী অভিযাত্রায় বাধা দেবেন না। বাধা দিলে পরবর্তী কর্মসূচি আরো কঠোর ও তীব্র হবে। নবী প্রেমের বাণী নিয়ে অহিংস অভিযাত্রা চলবে। যদি সরকারী দলের নেতা-কর্মী, পুলিশ, র‌্যাব বা সাদা পোশাকের কোন নিরাপত্তারক্ষী আমাদের অহিংস ঈমানী আন্দোলনে বাধা দেয় বা গুলী ছুড়ে তাহলে জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা তাদের প্রতিহত করব।

লংমার্চের কাফেলা দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সংযোগ ও পয়েন্টে আমরা স্থানীয় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি তথা ১৪ দল, ১৮ দল, সবাইকে সহযোগী এবং সমর্থক রূপে পেতে চাই। যারা পারেন, লংমার্চ কাফেলাকে খাদ্য,পানীয়, আশ্রয় ও অর্থ সাহায্য দিয়ে সহায়তা করবেন। মহানবী (সা.)-এর মর্যাদা রক্ষার এ সংগ্রামে অংশগ্রহণ আল্লাহর নিকট অনেক মূল্য রাখে। দরিদ্র মাদরাসা ছাত্র ও শিক্ষক, সীমিত আয়ের ইমাম, আলেম ও ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদের গাড়িভাড়া, হাত খরচ দিয়ে বিত্তবান ও সক্ষম ব্যক্তিগণ অশেষ সওয়াব লাভ করবেন। অর্থ আল্লাহর পথে ব্যয় হিসেবে গণ্য হবে।

হেফাজতে ইসলাম ঢাকা বিভাগীয় কমিটির অন্যতম নেতা লংমার্চ খেদমত কমিটির সদস্য হাফেজ মাহবুব হাসান বলেন, রাজধানীর মূল ৫টি প্রবেশ পথ এবং অন্যান্য ৩টি ফাঁড়ি পথের ভেতরের অংশে তিনদিন আগে থেকেই লোকজন ঢুকে পড়বে। ৬ তারিখ যেন বাধা পেলেও শহরে অন্ততঃ ৫ লাখ মানুষ তাকে। নাস্তিক-মুরতাদদের পক্ষ নিয়ে, সরকার কঠোরতা প্রদর্শন করলে আমরা যথাসম্ভব ধৈর্যের পরিচয় দেব। তবে দেশব্যাপী জুলুম-নির্যাতন বা হত্যাকা- চালালে জনগণ ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করি। তাদের এ কৌশল মিডিয়ায় প্রকাশ করলে যদি লংমার্চের ক্ষতি হয় কিংবা সরকার বাধা দেয়ার সুবিধা পেয়ে যায় তখন কী হবে, এ কথার উত্তরে হাফেজ মাহবুব বলেন, আমাদের আরো ৪টি বিকল্প রয়েছে। পুলিশ বা গোয়েন্দারা আমাদের কৌশলের সাথে পাল্লা দিতে পারবে না। আপনি প্রকাশ করতে পারেন।

এ পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল সমর্থন বা সাহায্য নিয়ে এগিয়ে এসেছে কিনা জানতে চাইলে কামরাঙ্গিরচর মাদরাসার মুহাদ্দিস ও অন্যতম হেফাজত নেতা বলেন, দেশের লক্ষ লক্ষ মসজিদ, মাদরাসা যারা সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে চালু রেখেছেন, সেই কৃষক, শ্রমিক ধনী, নির্ধন তৌহিদী জনতাই ঈমানী আন্দোলনও চালিয়ে নেবে। সরকার ও বিরোধী দলের মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরাও আমাদের সাথে রয়েছেন। আমরা ঈমান ও নবীপ্রেমের এ সংগ্রামে কাউকে পর মনে করি না। কেবল চিহ্নিত নাস্তিক-মুরতাদ ছাড়া আমাদের কেউ পর নন। সরকারকে বলব, জনগণের আবেগ বুঝুন। জনতার কাতারে, এসে দাঁড়ান। নইলে শক্তি-কৌশল বা বিদেশী পরামর্শ কোনটাই আপনাদের কাজে আসবে না। নবীভক্ত গণমানুষের আর্তি আল্লাহ শুনবেন। সরকারী নিষ্ঠুরতার জবাব দিতে তিনিই যথেষ্ট। নিরীহ মুসলমানের হেফাজতে আল্লাহর সৈনিকের অভাব হবে না। মজলুমদের সহায়তার জন্য সময়মতই তিনি শক্তিশালী বন্ধু ও অভিভাবকের ব্যবস্থা করবেন।

হেফাজতে ইসলাম সিলেট

হেফাজতে ইসলাম ঘোষিত ৬ এপ্রিল ঢাকাঅভিমুখে লংমার্চ সফলের লক্ষ্যে হেফাজতে ইসলাম সিলেটের উদ্যোগে ৩০ মার্চ, শনিবার সিলেট অডিটোরিয়ামে উলামা সুধীসমাবেশ সফলের লক্ষ্যে ব্যাপক গণসংযোগকালে হেফাজতে ইসলাম সিলেটের সভাপতি মুফতি মাওলানা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী বলেছেন, আমরা আলেম-উলামা ও ধর্মপ্রাণ জনগণকে সাথে নিয়ে নাস্তিকদের চূড়ান্ত শাস্তির লক্ষ্যে ময়দানে নেমেছি। সফল না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাব না। এ আন্দোলনে যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে সিলেটবাসী প্রস্তুত রয়েছে।

গণসংযোগে অংশগ্রহণ করেন হেফাজতে ইসলাম সিলেটের সেক্রেটারী শায়খ মাওলানা জিয়া উদ্দিন, মাওলানা আব্দুল বাছিত বরকতপুরী, মাওলানা মুহিউল ইসলাম বুরহান, মাওলানা রেজাউল করীম জালালী, বন্দরবাজার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মুস্তাক আহমদ খান, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম সিরাজী, অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান সিদ্দিকী, জামেয়া ফারুকিয়ার মুহাদ্দিস মাওলানা জয়নুল আবেদীন প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ সিলেট জেলা ও মহানগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণসংযোগ করেন এবং গণসংযোগকালে সিলেটের সর্বস্তরের জনগণকে ৬ এপ্রিল লংমার্চে ও ৩০ মার্চ সিলেট অডিটোরিয়ামে ওলামা সুধী সমাবেশে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।

বিষয়: রাজনীতি

১১৯৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File