জিহাদীদের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান : কিছু কঠিন প্রশ্ন
লিখেছেন লিখেছেন শিক্ষানবিস ২৬ অক্টোবর, ২০১৪, ১০:২০:৩০ সকাল
এক সময় জিহাদী সংগঠন বলতে আল কায়েদা আর তালেবানকে বুঝানো হত। তদের দমন করতে বিশ্ব এক হয়েছিল। কিন্তু এখন জিহাদী সংগঠনের অভাব নেই।
মুসলিম উম্মাহর আলেম-উলামা, আমীর-উমারা, হাকেম-হুকামারা এ সকল জিহাদীদের বিরুদ্ধে খুব সোচ্চার। তারা তাদের বিভিন্ন দোষে দুষ্ট করেন। ফতোয়া জারী করেন। খুতবা দেন। ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল ও মিডিয়াগুলো্ও এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই।
কিন্তু আমার অবস্থান দোদুল্যমান। কখনো মনে করি এরা ঠিক কখনো ওরা। তাই কুরআন হাদীস ও সীরাতে রাসূল দিয়ে বুঝার চেষ্টা করি আসলে সঠিক পথে কে? এ বুঝতে যেয়ে কয়েকটি প্রশ্ন এসে যায় যার উত্তর খুব কঠিন। তা ছাড়া আমার একটি অভ্যাস হল, দেশে ও বিদেশে অঘটন যা কিছু ঘটুক সে সকল ব্যাপারে আল্লাহর কাছে নিজের দায়মুক্তির প্রমাণ দেয়ার প্রয়াস চালানো। আমি এটাকে তাকওয়ার একটি অংশ মনে করি।
আমার অনুভব ও প্রশ্ন হল:
এক. স্বচ্ছ দৃষ্টিতে কুরআন, হাদীস, সীরাত পাঠ করলে বুঝে আসে, জিহাদ হল ইসলামের সর্বোচ্চ শিখর।
দুই. জিহাদ ঈমান আর নেফাকের মধ্যে পাথক্য সৃষ্টি করে। যারা মুনাফিক তারা কখনো জিহাদ আর মুজাহিদদের পছন্দ করে না।
তিন. জিহাদে অংশ নেয়া মানুষদের গালি-গালাজ করা, সমালোচনা করা স্পষ্ট মুনাফেকী। কুফরী করার মত পাপ।
চার. জিহাদীদের গালিগালাজ-সমালোচনা করে আল্লাহর কাছে মুনাফিক হওয়ার ঝুকি নেয়া কি ঠিক হবে?
পাচ. খারেজী সম্প্রদায়তো জিহাদী ছিল। কিন্তু তাদের সকল ইমাম, আলেম-উলামা, আমীর উমারাগণ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
কিন্তু এখানে কথা হল, খারেজীরা তখনকার বিদ্যমান ইসলামী খেলাফতের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করেছিল। আজকের জিহাদীরা কি ইসলামী খেলাফতের বিরুদ্ধে? এ সময়ে ইসলামী খেলাফত কোথায় আছে? বাশার আল মালেকীর খেলাফত কি ইসলামী? তিন চারটি মুসলিম রাষ্ট্র বাদ দিলে সবখানেই আছে ইবলীছি খেলাফত।
ছয়. জিহাদ ঘোষণা সহিহ হওয়ার জন্য কি রাষ্ট্র দরকার না ইমাম? যদি রাষ্ট্র হয়, তাহলে ইসলামি রাষ্ট্র না থাকলে জিহাদ ফরজ হবে না। ব্যস! আমরা সবাই এই কঠিন কাজ থেকে বেচে যাবো।
সাত. সৌদী আরবের এক বিখ্যাত আলেম, ইসলামী স্টেট সংগঠনের বিরুদ্ধে ফেসবুকে বেশ লেখালেখি করেন। ওখানে যোগ না দিতে যুবকদের সাবধান করেন। তার এক ভক্ত প্রশ্ন করল, মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাব রহ. যখন জিহাদ শুরু করলেন, তখন মক্কা-মদীনাসহ বিশ্বের প্রায় সকল আলেম তাদের বিরোধিতা করেছেন। তখন তো উসমানী খেলাফত ছিল। এখন আপনি বলুন, তার জিহাদ কি সঠিক ছিল? তিনি কি খারেজী ছিলেন?
ঐ সম্মানিত আলেম এর কোন উত্তর দিতে পারেননি।
আট. কিছু কিছু বিষয় আছে যা ইসলামের শিআ’র। এগুলোর বিরোধিতা বা অসম্মান ঈমানের জন্য ঝুকির সৃষ্টি করে।যেমন আলেম-উলামা, মসজিদ-মাদরাসা, আজান-ইকামত, জিহাদ-হিজরত, হাফেজ-কারী, মুজাহিদ প্রভৃতি।
আজকের আরব শাসকেরা জিহাদীদের ঠেকাতে আমেরিকার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করেছেন। কিন্তু এর পরোক্ষ ফলাফলে একটি একটি করে আরব রাজধানীর পতন ঘটতে যাচ্ছে ইরানী শিয়াদের হাতে। আরব রাজধানী বাগদাদের পতন হয়েছে। আরব রাজধানী দামেস্কের পতন হয়েছে। আরব রাজধানী বৈরুতের পতন হয়েছে। আরব রাজধানী সান’আর পতন হয়েছে শিয়াদেরই হাতে। বাকীগুলো অপেক্ষায়।
আমার এই সংশয়গুলো শেয়ার করার উদ্দেশ্য হল, আমার কল্যাণকামী কোন ভাই যদি আমাকে সঠিক বিষয়গুলো বুঝিয়ে দিতে পারেন, আল্লাহর কাছে পুরস্কার পাবেন। আর আমি আমেরিকার দুতাবাসে যেয়ে বলতে পারবো, আমাকে অস্ত্র ও টাকা দাও! জঙ্গীদের বিরুদ্ধে লড়াই করবো।
বিষয়: বিবিধ
১৭৬০ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
'জিহাদ'একটি ইসলামী পরিভাষা।আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন বাস্তবায়নে ইসলামী বিরোধী শক্তির মোকাবেলায় জান-মাল কোরবান করাই জিহাদ।সশস্ত্র মোকাবেলাই প্রকৃত জিহাদ।কোরান-হাদীসে এই প্রকারেরই মর্যাদা বর্ণিত হয়েছে। স্বার্থযুক্ত ব্যাখ্যায় জিহাদ কে বদলে দেয়া হয়েছে বর্তমানে।
ব্যক্তি-সমষ্টি ও বৈষয়িক স্বার্থ বিবেচনায় অধিকাংশ উলামা-মুফতি-রাষ্ট্র প্রধান-নেতারা জিহাদের মনগড়া সংগা দিয়ে চলেছেন।
আল্লাহই ইসলাম কে হেফাযত করবেন।
আমিরের প্রয়োজনীতা স্বীকৃত হলেও জিহাদের জন্য রাষ্ট্র হওয়া জরুরী নয়।
ইলম ছাড়া যেমন আলেম হওয়া অসম্ভব তেমনি সশস্ত্রতা ছাড়া জিহাদ সংগায়িত করাও স্বার্থপরতা ছাড়া কিছুই না।
আহত নিহত করাকে জিহাদ বলা যায় না।
এতো ক্ষুদ্র পরিসরে'জিহাদ' কে আটকে দিলেন ভাই.......?
লেখনীতে কি তাই ফুটে উঠেছে আপনার দৃষ্টি তে........?
আল কোরআন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন