মুক্তির বার্তা দিয়ে চলে গেলেন মাওলানা ইউসুফ
লিখেছেন লিখেছেন শিক্ষানবিস ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৮:২৪:৫০ রাত
শিরোনামটি অদ্ভুত লেগেছে, তাই না?
একটু গোড়ার কথা বলি। ছোটকালে আরবী একটি কবিতা পড়েছিলাম। শুধু আবৃত্তি নয়, মুখস্থও করেছিলাম। এখন সবটা মনে নেই। তবে অর্থ কিছুটা মনে আছে। তা হল: যদি তুমি ইমাম আবু হানীফা হতে চাও, তাহলে তোমার লাশ যেন জেলখানা থেকে বের হয়। যদি তুমি ইমাম মালেক হতে চাও, তবে তুমি যেন জালেমদের মার খেয়ে পঙ্গু হয়ে যাও। যদি তুমি ইমাম শাফেয়ী হতে চাও, তবে যেন স্বদেশ থেকে বহিস্কৃত হও।
হ্যা, আমাদের নবী, রাসূল, সাহাবায়ে কেরাম, ইমাম ও ইসলামের আহবানকারীদের ঐতিহ্য হল, জেল-জুলুম বরদাশ্ত করা, ফাসীর মঞ্চে ইসলামের গান গাওয়া, ধর্মের কারণে দেশান্তর হওয়া ইত্যাদি। এগুলো শুধু ঐতিহ্য নয়, সত্য ও ন্যায়ের প্রমাণও বটে।
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. কে এক ব্যক্তি প্রশ্ন করল, জনাব, আমাদের সমাজে তো ইসলামের নামে অনেক দল ও গোষ্ঠি আছে। সবাই দাবী করে তারা ইসলামের সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত। কিন্তু আমরা কিভাবে বুঝব কারা সত্যিকার সত্যানুসারী? তিনি উত্তরে বললেন, দেখবে বাতিল-পন্থীদের অস্ত্র কাদের আঘাত করে, তারাই সত্য ও ন্যায়ের পথে প্রতিষ্ঠিত।
বাতিলপন্থীদের আঘাতে আজ কারা তছনছ হয়ে যাচ্ছে তা আমার আর বলে দিতে হবে না।
হ্যা, উস্তাজুল আসাতেজা, আকীদায়ে আহলিস সুন্নাহ ও হাদীসে রাসূলের শিক্ষক মাওলানা এ, কে, এম ইউসুফ চলে গেলেন। হক ও বাতিল-অুনসারী সকলকে মুক্তি দিলেন। শুধু মুক্তি দিলেন না, চিরদিনের জন্য তিনি মুক্ত হলেন। জালিমের জেলখানা তাকে আর কোনদিন আটকাতে পারবে না। দেশ ও ইসলামের দুশমনদের ফাসীর মঞ্চ তাকে নিয়ে আর গর্ব করার সুযোগ পাবে না। ভারতের উচ্ছিষ্টভোগী মিডিয়া, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবিরা তাকে ফাসী দিয়ে আর মিষ্টি খেতে পারবে না। অসহায় বিচারকরা তাকে হত্যার আদেশ দিয়ে আর কলংকিত হবে না। মুখচেনা বুদ্ধি-বিক্রেতারা ফাসীর আদেশ দেয়ার সময় তাকে কুত্তার বাচ্চা বলে গালি দেয়ার সুযোগ পাবে না। তাকে খুন করার পর এই সমাজের নোংড়া দুর্বিত্ত শাহবাগী নাস্তিকদের অশ্লীল আস্ফালন জাতিকে আর দেখতে হবে না। স্বজাতির রক্ত-পিপাসু কিছু সংখ্যক পুলিশ-বিজিবি প্রতিবাদকারীদের উপর গুলি চালিয়ে খুনীর খাতায় নাম নিজেদের লেখানোর সুযোগ পাবে না।
এমনিভাবে তার ফাসীতে ইসলামের অনুসারীদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণের মুখোমুখি হতে হবে না। তার মৃত্যুদন্ডের প্রতিবাদের যারা রাজপথে নামবে, তাদের আর নির্বিচারে গুলি খেয়ে মরা লাগবে না।
ইসলাম প্রসারে অবদান রাখার অপরাধে যারা তাকে ঘৃণা করে আর একই অপরাধে যারা তাকে ভালোবাসে, উভয় দলের লোকদের তিনি এভাবেই মুক্তির বার্তা দিয়ে চলে গেলেনে আবর্জনাময় এই দুনিয়া ছেড়ে। কিন্তু আমাদের ভালোমত মনে রাখতে হবে, আমরা আমাদের মহান প্রতিপালক আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য নিবেদিত, তার কাছেই আমরা ফিরে যাবো। আর যারা ঈমান এনেছে তাদের প্রভু হলেন আল্লাহ, আর কাফিরদের কোন প্রভূ নেই।
বিষয়: বিবিধ
১৫২৯ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন