আমেরিকা ইউরোপ ইসলাম ও মুসলিমদের শত্রু নয়, শত্রু হল এলমানিয়া
লিখেছেন লিখেছেন শিক্ষানবিস ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৮:২১:১০ রাত
সৌদী আরবের সর্বজনমান্য আলেম মরহুম শায়খ মোহাম্মদ সালেহ আল উসাইমীন রহ. সব সময় একটা কথা বলতেন। কথাটি হল, আল-এলমানিউন আখবাস মিনাল ইয়াহুদ। অর্থ্যাত : মুসলিম নামধারী সেকুলাররা হল ইহুদীদের চেয়ে হিংস্র, ভয়ংকর, নোংড়া ও নিকৃষ্ট। এলমানী শব্দের অর্থ সেকুলারিস্ট। এলামনিয়্যাহ মানে সেকুলারিজম।
আমার বাস্তব উপলদ্ধি হল, আমেরিকা, বৃটেন, ভারত, খৃষ্টান, হিন্দুরা ইসলামের আসল শত্রু নয়। ইসলাম ও মুসলিমদের আসল শত্রু হল, মুসলিম সমাজ ও দেশে বসবাসকারী সেকুলার বা ধর্মনিরপেক্ষবাদের দাবীদাররা।
এই সব দেশ যদি কোন মুসলিম জনপদে আগ্রাসন চালিয়ে থাকে তবে সেটাও কিন্তু এদের কারণেই, এদের দাওয়াতেই। আমরা দেখেছি তালেবান শাসন আমলে যখন আমেরিকা আফগানিস্তানে আক্রমণ করলো তখন আমাদের দেশের সেকুলার ব্যক্তি, সংগঠন ও মিডিয়া আনন্দ প্রকাশ করেছে। আমেরিকাকে বাহবা দিয়েছে। আমেরিকার জয়ধ্বনি করেছে।
এই সেকুলাররাই মিশরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি সরকারকে বন্দুক নিয়ে উৎখাত করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি তারা হাজার হাজার বিক্ষোভকারীকে হত্যা করেছে। পুড়িয়ে মেরেছে।
এই সেকুলাররাই বিগত পঞ্চাশ বছর ধরে মিশরে মুসলিমদের হত্যা –নির্যাতন, দেশান্তর করেছে।
এই সেকুলাররাই ১৯৯২ সালে আলজেরীয়া নির্বাচিত দল ইসলামিক সালভেশন ফ্রন্টকে ক্ষমতা গ্রহণ করতে না দিয়ে তাদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে।
এই সেকুলাররাই জয়নাল আবেদীন বিন আলীর শাসনকালে তিউনিসিয়ায় মুসলামানদের উপর বছরের পর বছর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে।
এই সেকুলাররাই কামাল আতাতুর্কের ক্ষমতা গ্রহণ করার পর তুরস্কে ইসলাম ও মুসলিমদের উপর ভয়াবহ জুলুম-নিপীড়ণ চালিয়েছে।
এই সেকুলাররাই বছরের পর বছর লিবিয়াতে ইসলাম অুনসারীদের ধরে ধরে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে।
এই সেকুলাররাই সাদ্দাম আমলে ইরাকে হাজার হাজার আলেম-উলামাকে হত্যা করেছে।
এই সেকুলাররাই বর্তমানে বাংলাদেশে ইসলাম অুনসারীদের বিভিন্নভাবে খুন করছে। কখনো পুলিশ-বিজিবি দিয়ে, কখনো র্যাতপিড দিয়ে, কখনো দলীয় সন্ত্রাসী ঘাতকদের দিয়ে, কখনো আদালত দিয়ে, কখনো ভারতের গুপ্ত-ঘাতক বাহিনী দিয়ে।
সর্বশেষে তারা এ দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করতে কোমর বেধে নেমেছে।
তবে আমি সেই নন্দিত ইসলামিক স্কলারের কথায় একটু সংশোধনী আনতে চাই। সেটা হল, সব সেকুলারিষ্ট কিন্তু এমন নয়। যে সকল সেকুলার সকল মানুষের জন্য গণতান্ত্রিক অধিকার প্রযোজ্য বলে মনে করে তাদের আমি এই তালিকা থেকে অব্যাহতি দেয়ার পক্ষে। আর যে সকল সেকুলার ব্যক্তি, সংগঠন ফ্যাসীবাদ লালন ও চর্চা করে আমি তাদেরকেই ইহুদীদের চেয়ে অধম –সন্দেহ নেই। তাদেরকে আমি ইসলাম ও মুসলমানদের এক নম্বর দুশমন বলে গণ্য করতে চাই। মিশর ও বাংলাদেশের অধিকাংশ ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা এমনই। তারা ফ্যাসীবাদী। তারা মনে করে যারা তাদের মতে বিশ্বাসী নয় তাদের মানবাধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, মতামত প্রকাশের অধিকার, ভোট প্রদানের অধিকার, নির্বাচনে অংশ নেয়ার অধিকারসহ কোন অধিকার থাকা উচিত নয়। ইসলাম অুনসারীদের চোখ বুঝে নিষিদ্ধ, নির্মূল আর হত্যা করতে হবে।
আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশগুলো এমনকি ইহুদীরাইও কিন্তু এমন মত পোষণ করে না। যদি করতো তাহলে আমেরিকা বৃটেনে মুসলমান বসবাস করতে পারতো না। আর আমাদের দেশের সেকুলাররা যদি কখনো ঐ সব দেশে ক্ষমতায় যায়, তাহলে ওখানেও মুসলমানদের বসবাস নিষিদ্ধ হবে।
অনেকে মনে করতে পারেন, এইসব সেকুলাররা তো নিজেদের মুসলমান বলে পরিচয় দিয়ে থাকে। আবার অনেক সময় নামাজ-রোযা হজ করে থাকে। এদের ইসলামের দুশমন মনে করা কতখানি কুরআন সম্মত হতে পারে।
আল্লাহ কি এভাবে বলেছেন?
হ্যা, দেখুন আল্লাহ এদের সম্পর্কে কি বলেছেন:
যারা আল্লাহ ও তার রাসূলদের সাথে কুফরী করে এবং আল্লা্হ ও তার রাসূলগণের মধ্যে পার্থক্য করতে চায় আর বলে আমরা কতক বিশ্বাস করি আর কিছু বিষয় অস্বীকার করি এবং তারা ঈমান ও কুফরীর মাঝামাঝি পথ গ্রহণ করতে চায়, তারাই আসল কাফের। (সূরা আন- নিসা : ১৫০-১৫১)
বিষয়: বিবিধ
২৩৯৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন