ইজ্জত বাঁচাতে অথবা মনের ক্ষোভে আত্মহত্যা আসল সমাধান নয়।
লিখেছেন লিখেছেন মুহছিনা খাঁন ০৩ জুন, ২০১৩, ০১:১৭:২৯ রাত
ছেলে অথবা মেয়ে একটু বড় হয়ে গেলে মা বাবার খেয়াল রাখা দরকার কোথায় যাচ্ছে কার সাথে মিশছে কি রকম ভংগিতে কথা বলছে।
আর বিশেষ করে ইসলামিক শিক্ষা দিয়ে সন্তানদের বড় করার দিকে খেয়াল রাখা খুব জরুরী
তার জন্য মা বাবাকে ও ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।
আর বিয়ের বয়স হলে ভালো পাত্র এবং পাত্রী দেখে বিয়ে দিতে হবে। এবং দ্বীনদারীকে প্রাধান্য দিতে হবে আর সেটা হলো আল্লাহর রাসুল স: এর নির্দেশ।
শুধু আমেরিকান, লন্ডনএর ছেলে অথবা মেয়ে দেখলেই খুশি হয়ে তাড়া হুড়া করে বিয়ে দিয়া ঠিক হবেনা।
কারন এক একটি বিয়ে মানেই হলো ছেলে মেয়ের একসাথে জীবন পরিচালনা করা সংসারের সন্তান পালন থেকে শুরু করে সারাটি জীবন একসাথে অতিবাহিত করা।
সেখানে মনের মিল, মতের মিল থাকতে হবে , বিশ্বাস, শ্রদ্ধাবোধ ও থাকতে হবে পরস্পর এর পরামর্শের ভিত্তিতে জীবন সংসারকে সাজিয়ে নিতে হবে। না হলে শান্তি সুখের পায়রাটি কখন যে জানালা দিয়ে পালিয়ে যাবে ঘরের কেউ টের ই পাবেনা।
যাই হোক গত কয়েকদিনের দুএকটি ঘটনা শুনে আমার অন্তর আত্মায় এমন কাঁপন হয় মাঝে মাঝে যে এত ব্যস্ততার মধ্যে থেকেও আমি এ বিষয়ে লিখার বিবেকের তাড়া অনুভব করছি। জানিনা কারো চোখে পড়বে কি না অথবা কাজে আসবে কিনা আমার এই কথা গুলি।
প্রথম যে ঘটনা সেটা হলো একটি আমেরিকান ছেলে আঠারো উনশ বয়সেই ভালোবেসে বিয়ে করেছে হাই ইস্কুলপড়ুয়া এক মেয়েকে
এর কিছু দিন পরেই ডিভোর্স হয়ে গেলো।
এর পর মায়ের চাঁপেই দেশে গিয়ে মাত্র একসপ্তাহ থেকে এক মধ্যবিত্ত আত্মীয়ের উনিশ বিশ বছরের মেয়েকে বিয়ে করে একদিন অথবা দুই দিন থেকে আমেরিকায় আবার চলে আসছে । মেয়েটি সাত মাসের অন্ত:সত্বা। কিন্তু শুনা গেলো স্বামী সেইযে বিয়ে করে এসেছিলো আর যায়নি জানিনা খোঁজ খবর রেখেছিলো কিনা।
গত সপ্তাহে শুনলাম এই অন্ত:সত্বা মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে। কি ছিলো তার মনের কষ্ট কেন সে এবং তার অনাগত সন্তানকে নিয়ে এই আত্মহুতি দিলো এর জবাব কেউ দিলোনা
আল্লাহ ভালো জানেন তবে ধারনা করতে পারি অবস্থার পরিপেক্ষেতে হয়তো স্বামীটার অবহেলা অথবা সে বলেছে আমিতো মাত্র একদিন তোমার সাথে সংসার করেছি এই সন্তান আমার না তাই মধ্যবিত্ত ঘরের কচি মেয়েটি মনের দু:খে নিজের প্রান বিসর্জন দিয়েছে।
মা বাবা স্বামী শাশুড়ি এই সমাজ কি দিবে এর জবাব। ? মোটেইনা।
আরেককটি ঘটনা হলো আমার এক আত্মীয় ডাক্তার হয়েছে ছেলএটি অনেক সুনাম ও আছে লন্ডনি বাবার মেয়ে দেশে নিয়ে গিয়ে ছেলেটাকে পছন্দ করে বিয়ে দিয়ে দিলেন ছেলের পরিবার ও খুশি কারন লন্ডন আমেরিকার মেয়ে পাওয়া অনেক কষ্ট।
কিন্তু ছেলেটা লন্ডন এসে যখন দেখলো তার বউটা সে চিরাচরিত বাকি মেয়েদের মতো অবাধ্য শালীন নয় তখন নিজে ডিবোর্স দিয়ে নিজের দেশে চলে গেছে।
সাব্বাস বেটা ! এই হলো উপযুক্ত জবাব আমার গর্ব হয় তোর জন্য তুই আমার দেশের গর্ব।
শিক্ষিত ছেলে কেন পরে থাকবে শশুড় বাড়ির ফরমায়েসের ছেলে হয়ে । তাদের মতো যাদের আত্মোসম্মান বোধ নেই শ্রেফ আমেরিকান হওয়ার জন্য পরিবারের মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য দিনের পর দিন নিজের অযোগ্য মেয়েকে বিয়ে করেও মনের মতের মিল না রেখেও জীবন কাটিয়ে দেন অনেক সুশিক্ষিত পুরুষ।
লন্ডন আমেরিকার অনেক ছেলে মেয়ে যে রকম ইচ্ছা সে রকম চলাফিরা করে অনেক কিছু শেষ করে মা বাবা নিয়ে যান দেশে মধ্যবিত্ত মা বাবার অনেক কষ্টে গড়ে তোলা ছে ও মেয়েকে বউ অথবা জামাই করে নিয়ে আসতে।
কিন্তু মা বাবার দায়িত্ব হলো ভালো করে খোজ খবর নেয়া এমনকি পরিবারের ভিতর সম্পর্কেও জানা
অনেক সময় দেখা যায় ছেলেটি হয়তো অনেক ভালো কিন্তু ঘরের মানুষগুলা এই দেশি মেয়েটার সাথে কাজের মেয়ের মত ব্যবহার করছে সেখানে ছেলের ও বলার কিছু থাকেনা বেশি ভালো ছেলেরা ঝগড়া প্রতিবাদ করতে পারেনা তাই সেই সুযোগ বাকিরা নিচ্ছে।
আমার দুরবর্তি এক ভাগ্নি মোটা মুটি ভালো দেশে গিয়ে সুদর্শন শিক্ষিত ছেলেকে বিয়ে করেছে সাত বছরের পরীর মতো সুন্দর একটি মেয়ে ও আছে গত তিন বছর আগে নাকি না বলে দেশে চলে গেলো পরে আবার অনে অনুরোধ করে ঘরে আসলো।
দেশে কার সাথে নাকি সম্পরক আছে মেয়েটা আমার ভাগ্নির কাছে ফেইসবুকে ছবি পাঠায় এক সাথে তোলা।
গত বছরে নাকি প্রতিদিন শুধু ষ্টোরে যায় আর ব্যাগ ভরে বাজার করে নিয়ে আসে মেয়েটি এই দেশে বড় হয়েছে তাই তার এই লুকানো কাজ ধরতে পারেনা একদিন বেডের নিচে কি খুজতে গিয়ে দেখে লাগেজ ভর্তি মেয়েদের কাপড় এর সাথে তার সোনার বক্সটিও সে বক্সটি খুলে অবাক। তার পর স্বামীকে কিছু না বলে মায়ের বাসায় নি রেখেছে পরের দিন মেয়েটি কি কাজে বের হয়েছে ঘরে দেখে এসে তার স্বামী নেই আজ এক বছর কোন ফোন নেই যোগাযোগ নেই। এই হলো আমাদের পরিবারের সমাজের অবস্থা ।
মনটা মাঝে মাঝে এত খারাপ হয় যে কিছু বুঝে উঠতে পারিনা ।
তাই মা বাবাকে আরো সাবধান হতে হবে সারা জীবনের জন্য যার হাতে আপনার আদরের সন্তানটিকে তুলে দিচ্ছেন তাদের সম্পর্কে তার পরিবার সম্পর্কে ভালো করে খুঁজ নিন। তাড়াহুড়া করে কিছু করতে যাবেননা। না হলে ক্ষতি আপনার ই হবে.যেমন করিতে ধুলা দুর জগত হইলো ভরপুর।
এরকম কত শত ঘটনা আমাদের আশে পাশে ঘটছে প্রতিনিয়ত ।
আমোরা ভাংগা ঘর চাইনা আমরা ঘরের প্রতিটি ইট বালুকনাকে শক্ত দেখতে চাই ভালোবাসা আর স্রদ্ধাবোধের সৌজন্যে।
আল্লাহ আমাদের সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্বান্ত নেবার তাওফিক দিন এবং প্রতিটি সন্তানদের যেনো সুন্দর করে গড়ে তুলে ভালো জামাই ও ভালো বৌমা উপহার দিতে পারি। সবার সংসার সুখের হোক শান্তির হোক জান্নাতি পরিবেশ বিরাজ করুক প্রতিটি মুসলমানের ঘরে সে আশা আর বিশ্বাস নিয়ে আজকের মতো বিদায়।
বিষয়: বিবিধ
১৪৭৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন