আল্লামা শফির কাছে খোলা চিঠি
লিখেছেন লিখেছেন আহমদ জুনেদ ২৯ জুলাই, ২০১৩, ০৭:২৩:২৭ সকাল
হুজুর
আপনাকে প্রশ্ন করব না কেমন আছেন । কারণ উত্তরটা জানা । ভালো নেই । আমরাও ভালো নেই । আপনি ছিলেন একজন সজ্জন বেক্তি । একদম সাদামনের মানুষ । সারা জীবন মানুষ আপনাকে শ্রদ্ধা করেছে । দুয়ার জন্য হয়ত আপনার অফিসে দীর্ঘ লাইন থাকত । আজ সম্ভবত আপনি সবচেয়ে খারাপ বেক্তি ।আপনার বিরদ্ধে যারা একের পর এক আক্রমন চালাচ্ছে, আপনার একজন কর্মীও নেই তাদের প্রতিবাদ করার ।লোকমারফত খবর পেয়ে আপনি দু একটির প্রতবাদ করছেন ।
গত ৬ই মে ছিল কালো রাত ।এ রাত ছিল নিসংস্রতার এক জল্লন্ত উদাহরণ । আমরা জানি না কোন বোন্ টি বিধবা হয়েছে । কোন মা সন্তান হারিয়ে আজ পাগল প্রায় । কোন সন্তানটি এখনো অপেক্ষায় বাবা ফিরবেন ঈদের জামা নিয়ে । কখনো জানা যাবে না এ মানুষগুলোর দু:সহ জীবনের কাহিনী । আপনার ডাকে সারা দিয়ে লক্ষাধিক মানুষ উপস্তিত হয়েছিল সেদিন শাপলা চত্তরে. ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, সিদ্দান্ত নেয়ার কয়েক ঘন্টাও আপনারা টিকতে পারেন নি শাপলা চত্তরে. বরং আপনাকে অত্যন্ত অপমানিত হয়ে চট্টগ্রাম ফেরত যেতে হয়েছে । আপনার সেক্রেটারি কারাগারের প্রকোস্ট এ নির্যাতিত হয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি ছিলেন ।
হুজুর
আপনারা অনেক ভাগ্যবান যে গত পাচ বছরে মাত্র একটি ৬ই মের মুখোমুখি হতে হয়েছে । এরকম প্রতিটি রাত ছিল এক একটি ভয়াবহ নির্মমতার কালো রাত্রি জামাত শিবিরের কর্মীদের কাছে । এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাড়ি ছাড়া কর্মীটি এখনো বাড়ি যেতে পারে নি । অনেকে লাশ হয়ে ফিরেছে । কওমী মাদ্রাসার ছাত্রদের তুলনায় জামাত শিবিরের কর্মীদের কোরানের গভীর গ্জ্ঞান কম সত্য । তবে মজবুত ইমান আর শাহাদতের তামান্না লালন করার ক্ষেত্রে শিবিরের ছেলেদের সাথে আপনারা হার মানতে বাধ্য ।
হুজুর
জামাত শিবির কোনো ইসলামিক দল না বা কোনো মুসলমান এ দলের সদস্য হতে পারবে না, আপনাদের সত্যায়িত করা এ ফতওয়া নিয়ে আওয়ামিলিগ, কমিউনিস্ট, বি এন পি মানুষের দ্ধারে দ্ধারে গিয়ে বলেছে । অতচ কওমী মাদ্রাসার সময়ের চাহিদা পূরণে বের্ততার গহবর থেকে জামাত শিবিরের প্রতিষ্টা । আপনাদের দৃষ্টিতে স্কুল কলেজের পড়াশুনা ছিল ইহুদি নাসারাদের কাজ । অতচ আপনাদের মধ্যে থেকে মুটামুটি অর্তনৈতিকভাবে সামর্থবানরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাটাতে থাকেন । এদেরকে ইসলামী শিক্ষায় শিক্কিত করার দায়ত্ব নেই জামাত শিবির ।আর সেজন্য অনেক চড়াই উতরাই পারি দিতে হয়েছে. গুনতে হয়েছে শতাদিক লাশ । শুদু এই সরকারের আমলে শিবিরের নিহত কর্মীদের সংখা দেড়শতাধিক ।
হুজুর
আপনাকে বলব না রাসুল (স) বা সাহাবাদের জীবদ্ধসায় কোনো একটি যুদ্ধের গল্প । এমনকি এই সেদিনের স্পেন বিজয়ের কাহিনী হয়ত পুরনো শুনাবে । আপনাকে বলব মিশরের ইখওয়ানুল মুসলিমের বর্তমান সময়ের আনদোলনের একটি দিক । মানুষের ভোটে নির্বাচিত তাদের প্রেসিডেন্টকে সরিয়ে দিলে ইখওয়ান সারা দেশে আন্দোলনের ডাক দেয় । সে থেকে গত এক মাস ধরে এই প্রচন্ড গরম আর রমজানের এই মাসে রাস্তায় দিন রাত তাদের কর্মীরা । এর মধ্যে সেনাবাহিনীর আক্রমন হয়েছে । তাদের অসংখো কর্মীদের জীবন দিতে হয়েছে । তারপরও হাজারো জীবন দেয়ার জন্য প্রস্তুত, শপথ নিয়েছে জীবন বাজি রেখে লড়ে যাবে।
গত ৬ই মে হেফাজতের সমাবেশে যারা হামলা করেছিল তারা ছিল পুলিশ । আর এখন প্রতিনিয়ত ইখওয়ানএর সমাবেশে যারা হামলা করছে তারা হচ্ছে পেশাদার আর্মি । যাদের কাজই যুদ্ধ করা । দেখুন একটি পেশাদার বাহিনী দীর্ঘ একমাস লড়াই করেও পারে নি তাদের সরাথে আর আপনাদের মাত্র কয়েক ঘন্টায় পুরো ঢাকা শহর ছাড়া করে দেয় সাধারণ কয়েক পুলিশ ।
হুজুর
আপনাকে এখন বলব যে কারণে আপনারা টিকতে পারেন নি এই আন্দোলনে ত়া হচ্ছে..
১. কোরানকে তাবিজের কিতাবে পরিনত করা,
২. জিহাদের ধারণা অস্পষ্ট, তসবির দানার মধ্যে জান্নাত খুজা
৩. কোরবানির মানসিকতা না থাকা, নিজেদের মধ্যে আর্থিক কোরবানির দৃষ্টান্ত স্থাপন না করা.
৪. মুনাফিকদের সটিকভাবে সঙ্গায়িত না করা, তাদের বন্ধু ভাবা
৫. মেধা ও প্রজ্ঞার বিকাশ না ঘটা
৬. সময়ের সাথে তাল মিলয়ে না চলা
৭. আধুনিক দুনিয়া ও তার মানুষ সম্পর্কে ধারণা না থাকা
৮. সমাজে মেরুধন্ডহীন ভুমিকা: সমাজের মানুষের কাছে হুজুরদের কাজ হচ্ছে খতম, জানাজা আর মিলাদ পড়ানোতে সীমাবদ্ধ
৯. বদর, ওহুদ আর খন্দকের সুন্নতকে উপেক্ষা করে মিষ্টি সুন্নত (খেজুর, মিষ্টি কদু, মধু খাওয়া) চর্চা
বেগম রোকেয়ার অর্ধাঙ্গি প্রবন্ধ থেকে একটি গল্প বলে এ লেখা শেষ করব । যদিও এ লেখক নারী জাতির অনগ্রসতাকে উদ্ধস্য করে গল্পের অবতারণা । তারপর কুথায় যেন মিল খুঁজে পাই এ গল্পের মর্মার্থের সাতে আপনাদের জীবন যাপনে
গল্পটি হচ্ছে- বাসর রাতে স্বামী স্রীকে প্রশ্ন করলো তুমি কি চাও আমার কাছে, আকাশের তারা, না ওই চাদ মামা । অবলা স্রী বলল আমি কিছুই চাই না আমাকে শুধু ওই কুল গাছ থেকে কুল এনে দাও ।
আপনার ভক্তকুল সারাজীবনের দুয়া প্রার্তি আম্লিগ, কমুইনিস্ট বন্দুরা আপনার বক্তব্যকে এভাবে বিকৃত করবে হয়ত কখনো ভাবেননি । তাদের স্বার্থে আঘাত হানলে আরো যে খারাপ হতে পারে সেটা কোরান থেকে নিশ্চয় আপনি অবগত ।
বিষয়: বিবিধ
১৮০১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন