হেফাজত হত্যাকাণ্ডের কারন
লিখেছেন লিখেছেন সালাম বাংলাদেশ ১৫ মে, ২০১৩, ১০:২৭:৫২ সকাল
সরকার হেফাজত কে শুধু হারাইনি হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের সকল মুসলমান কে? কিন্তু কিভাবে?
বাংলাদেশ একটি মুসলিম দেশ কিন্তু ভোটার মুসলমানের দাম থাকলে ও, নীতি নির্ধারনি পর্যায়ে মুসলিম কেউ মেনে নিতে পারেনা, মুসলিমরা হুজুর হবে, নামাজ পড়াবে, মিলাদ পড়াবে, জানাজা পড়াবে এটুকু হলে সবাই তাদের মেনে নেয়, কিন্তু প্রচলিত ধারার বাইরে কিছু সচেতন মুসলিম যারা আছে তাদের কে তো ৭১ এর শত্রু হিসেবে একখান কালী মাখিয়ে রাখা হয়েছে তাদের মারলেও কেউ কিছু বলেনা, যখন তখন জেল জুলুম, হালের ফাসির রায় হলেও কেউ কিছুই বলেনা। কিন্তু হঠাত করে দেশে মাহমুদুর রহমান ঘুমিয়ে থাকা মুসলমান কিছু মানুষকে জাগিয়ে তুলেছিল সেই মুসলমানেরা মিছিল কি জিনিস জানত না তারা সরকারের একপ্রকার সহায়তায় বিশাল বিশাল সমাবেশ করার ক্ষমতা পেয়ে গেল, ক্ষমতা এক জাদু তা অক্ষম কে ও কাতিলের ভুমিকায় উপস্থিত করতে পারে, হেফাজতি নেতারা নিজেদের মুল শক্তির উৎস এবং ভিত্তি কি তা বুঝতে পারিনি, গাদা গাদা বালি স্তুপ করলে বিশাল দেয়াল হতে পারে কিন্তু একটু ঝড়েই যে তা উড়ে যেতে পারে তা ভাবিনি হেফাজতের নেতারা। তারা সরকারের এক অংশের সহযোগিতা, বিরোধীদলের সমর্থন আর জামায়াতের কাঠামগত মেশিনারির প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের ফলে যে অল্প সময়ে এই ইসলামী গন জাগরণ বিশাল হয়েছে তা বুঝতে পারিনি।
তারা বুঝতে পারেনি সহানুভুতির সরকারী হাত কাতিলের হাত হয়ে যেতে পারে সরকারের স্বার্থের কিছুটা ব্যত্যয় হলেই। সরকার কে বিশ্বাস আর জামাত কে অবিশ্বাস করার কারনে তাদের এই পরিণতি,
তারা মরেছে সাথে মেরেছে জামায়াত বিএনপি সহ পুরো দেশ কে।
আসলে আপন যত আপন ই হোক তাকে দিয়ে মেডিক্যাল অপারেশন চলেনা এর জন্য চাই পেশাদার প্রশিক্ষিত ডাক্তার, তা না হলে রোগির মৃত্যু অনিবার্য , সেটাই হয়েছে এখানে।
হেফাজত মারা গেছে কিন্তু তার লাশ চাপিয়ে দিয়ে গেছে পুরো বাংলাদেশি মুক্তিকামী মানুষের উপর। সরকারের কূট চাল চালিয়েছে আর হেফাজত পাকা ফলের মত তাদের হাতে গিয়ে পড়েছে, সেদিন হেফাজত যদি তাদের ছয় পয়েন্টে অবস্থান করে ফিরে যেত তবে হেফাজতের সক্ষমতা সরকারের মাথার উপড় খড়গ হয়ে ঝুলত সেই ভয়ে আজন্ম কুট সরকার একটু সোজা চলত কিন্তু হেফাজতের ক্রমবর্ধমান চাপের ফলে দেশ ব্যাপি আওয়ামীলীগের মনোবল ভেঙ্গে যাচ্ছিল সেই সাথে জেগে উঠছিল বিএনপি এটাকে শক্ত হাতে ভেঙ্গে দেয়ার কৌশল খুজছিল সরকার। তাই ৫ই মে হেফাজত কে সারা দেশে প্রতিহত করার জন্য মাঠে নামে সরকারী গুন্ডা এবং পুলিশ তা সত্বেও ঢাকাকে যে ভাবে অবরুদ্ধ করে ফেলেছিল হেফাজতিরা এতে খুবই চিন্তিত হয়ে পড়ে সরকার মুলত তখন থেকেই গণহত্যার পরিকল্পনা নেয়া হয়।
কতগুলি বিষয় একটু মনোযোগ দিয়ে ভাবলেই এটা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
১) হেফাজতের মুল এজেন্ডা ছিল অবরোধ কিন্তু তাদের কে মতিঝিলে আনলো কে?
২) সরকার তাদের মতিঝিলে আসতে বলেছে কিন্তু আসার পথে নানাভাবে বাধা দেয়া হয়েছে যাতে তারা বেশি লোক আসতে না পারে, আমার নিজে চোখে দেখা পল্টনে সকাল থেকেই পুলিশ গুলি চালিয়েছে।
৩)ভাংচুর, সরকার তার এজেন্ট দিয়ে পরিকল্পনা মাফিক ভাংচুর চালিয়েছে যাতে তাদের উপর মামলা দেয়া যায়। লক্ষ্য করে দেখুন বহুল প্রচারিত কোরান পোড়ানোর কোন ফুটেজ কিম্বা ছবি সরকার দিচ্ছেনা আবার এই ঘটনা কখন হয়েছে সেটাও তারা বলছেনা, মতিঝিলে অফিস হওয়ার কারনে ছয়টা পর্যন্ত মতিঝিল ছিলাম কিন্তু তখন পর্যন্ত কোন ভাংচুর হয়নি সন্ধ্যার পর পল্টন থেকে হেফাজত কর্মিরা হটে যায় তখন ই ভাংচুর গুলো শুরু হয়।
৪) দেশ ব্যাপী টেরর তৈরি করা তাদের উদ্দেশ্য ছিল। তারা ইচ্ছা করলে বিকাল ৫টায় হেফাজত হটিয়ে দিতে পারত কারন ১০০০০ পুলিশ জলকামান, এপিসি নিয়ে হামলা করলে নিরস্ত্র মানুষ হটে যেতে বাধ্য কিন্তু তারা তাদের নিষ্ঠুর পরিচয় প্রকাশ করতে চেয়েছে তাই ইচ্ছাকৃত ভাবে এই গণহত্যা করেছে, কারন সাধারন ভাবে হেফাজত ঢাকা থেকে হটিয়ে দিলে তারা দেশব্যাপি আন্দলোন করত তা সরকার সামাল দিতে পারত না কিন্তু হত্যার মাধ্যমে যে ভয় ধুকিয়ে দিয়েছে তার ফলে কেউ আর এগুতে সাহস করছেনা ।
বিষয়: বিবিধ
১৪৫১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন