ভোটের দিনও কি বিরোধী দলের কেন্দ্রীয় নেতারা আত্ত্বগোপনে থাকবেন ???
লিখেছেন লিখেছেন সাইদ ২৭ নভেম্বর, ২০১৩, ০৭:২৩:০৬ সকাল
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।আসসালামুআলাইকুম।
একটা সভ্য দেশের জনগনের চাওয়া পাওয়া কে সভ্য রাজনীতিবিদ/ক্ষমতাসীনরা কেমন শ্রদ্ধা করে তার দৃষ্টান্ত বর্তমান বিশ্বে হাজারো আছে।জনগনের চাওয়া পাওয়া কে যদি ক্ষমতাসীনরা গুরুত্বই না দেই তবে সেই পদে থাকার তাদের যোগ্যতাও নেই।আমাদের দেশে সেই ১৯৯০ সাল থেকে (নিজের দেখা অভিজ্ঞতা থেকে ) দেখে আসছি ক্ষমতাসীনরা জনগনের চাওয়া-পাওয়া কে কতো অবমুল্যায়ন করে।এমনও হতে পারে ক্ষমতাসীনরা হয়তো এদেশের জনগনকে সভ্য বলে মনে করেনা তাই তাদের চাওয়া পাওয়া কে কোনো গুরুত্ত্বও দেয় না। ক্ষমতাসীনদের কাছে জনগনের চাওয়া পাওয়া হতে পারে শান্তিপূর্ণ ভাবে।দাবি-দাওয়া লিখিত আকারে,শান্তি পূর্ণ সভাসমাবেশ,মানববন্ধন ,অনশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। ক্ষমতাশীনরা সভ্য হলে জনগনের মনের কথা বুঝতে পারে।তাদের দাবি-দাওয়া শান্তি পূর্ণ ভাবে মেনে নেয়। বর্তমান বিশ্বে এই ধরনের উদাহারণ অনেক আছে। সামান্য একটা সিটি মেয়র এবং একই সিটির জনগনের বিরোধীতার কারণে দুই বছর আগে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ আমাকে অবাক করেছিলো।
খুব ভাবতে অবাক লাগে কিভাবে এই দেশের ৮০-৯০% জনগনের দাবী কে ক্ষমতাসীনরা তুচ্ছ ভাবতে পারে?এই দাবীর পক্ষে ১০লক্ষ লোক শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করলে কি ক্ষমতাসীনরা মেনে নেবে?এই দেশের রাজনৈতিক চরিত্র বলে ১০লক্ষ কেন ৫০লক্ষ লোকও যদি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে আর সেই দাবী যদি ক্ষমতাসীনদের পছন্দমত না হয় তাহলে একদিন কেন হাজারো দিন শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করলেও ক্ষমতাসীনরা তা মেনে নেবে না।ক্ষমতাসীনদের অপছন্দের শান্তিপূর্ণ কোনো দাবী মেনে নেওয়া হবে না এটাই আমাদের দেশের সভ্য ক্ষমতাসীনদের কাছে প্রতিষ্ঠিত রীতিনীতি ।আপনি মানববন্ধন করেন,গণ অনশন করেন তাতেও সাড়া মিলবেনা।এটাই হচ্ছে আমাদের দেশের ক্ষমতাসীনদের মানবিকতা,দেশ প্রেম,জনগনের প্রতি তাদের ভালবাসার স্বরূপ।গণঅনশন করলে তো ক্ষমতাসীনদের পোয়া বারো।পুলিশ দিয়ে মারার আগেই বিরোধী মতের লোকেরা যদি নিজেরা নিজেরা মরে তাহলে তো আজীবন ক্ষমতা থাকার গ্যারান্টি।এই হচ্ছে আমাদের দেশের সব সময়ের ক্ষমতাসীনদের মানসিকতা।১৯৯০ সাল থেকে যার একটুও কোনো পরিবর্তন হয়নি।আদৌ কোনো পরিবর্তন হবে বলে মনে হয়না।কে করবে পরিবর্তন ?
সরকার পরিবর্তন হলে সাধারণ মানুষের ভাগ্যর যে খুব একটা পরিবর্তন হবে সে আশা জনগণও করেনা তবে ক্ষিনো একটা আশা মানুষের বুকে আছে যদি নতুন সরকার তাদের আগেরকার ভুল গুলো শুধরিয়ে নেয়।তাই মানুষ এই সরকারের পরিবর্তন চায়। তানাহলে যে সরকারের পাঁচ বছরের দু:শাসন কে জাস্টিফাই করা হয়।তারা তো ভাববে যে আমরা ঠিক পথেই এগুচ্ছিলাম।তাদের সেই ভাবনার জায়গাটাতে মানুষ পরিবর্তন করার সুযোগ দিতে চায়।কিন্তু ক্ষমতাসীনরা জনগনের সেই অধিকারটুকুও কেড়ে নিতে চায়।তানাহলে নিরপেক্ষ নির্বাচনের গণদাবীকে তারা এভাবে তুচ্ছ ভাবতে পারতো না।
আমাদের দেশের সভ্য ক্ষমতাসীনদের চরিত্র থেকে বিরোধী দলের ভাবা উচিত যে মামুলি কোনো আন্দোলনের মাধ্যমে এই দেশের ক্ষমতাসীনদের কাছে গণদাবি আজ পর্যন্ত কেউ আদায় করতে পারেনি। আপনারাও পারবেন না।কঠোর আন্দোলন ছাড়া ক্ষমতাসীনরা কোনো দাবি মেনে নেবে সেটা আশা করা ভুল।সেইরকম সাধারণ বোধ সম্পন্ন রাজনীতিবিদও আমাদের দেশে নেই।থাকেলও ক্ষমতার শীর্ষবিন্দুতে তারা নেই।কি নিষ্ঠুর পরিহাস যে এই দেশে হাজার হাজার লাশ ছাড়া কোনো ক্ষমতাসীন সরকার গণদাবির প্রতি কোনো গুরুত্ত্ব দেয়না।মানুষের সংজ্ঞায় আমরা মানুষ হিসাবে গণ্য কিনা ভেবে দেখার সময় হয়েছে। এভাবে চলতে থাকেলে একদিন আমাদেরকে হয়তো বন্য প্রাণী বলে উল্লেখ করলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।
বিরোধীদল গত ১০ বছরের শাসন আমলে সাধারণ জনগনের জন্য এমন কোনো দৃষ্টান্ত দেখাতে পারেনি যে তারা সেই জন্য আপনাদেরকে জোর করে ক্ষমতায় নিয়ে আসার জন্য পুলিশের বুলেটের সামনে বুক পেতে দেবে।আপনাদের সুবিধাবাদী নেতা কর্মীদেরকেই পুলিশের বুলেটের সামনে বুক পেতে দিতে হবে নিরপেক্ষ নির্বাচন অমুষ্ঠানের দাবী আদায়ের জন্য।জনগণ হয়তো আপনাদের নিরপেক্ষ নির্বাচনে নির্বাচিত করবে তবে সেটা আপনাদের জনপ্রিয়তায় নই,ক্ষমতাসীনদের প্রতি ক্ষোভের প্রশমন ঘটানোর জন্য।নির্বাচিত হয়ে জনগনের মন জয়ের জন্য কাজ করলে ভবিষ্যতে জনগণ তখন নিজেই আপনাদের আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়বে।
তাই বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আত্বগোপনে না থেকে আন্দোলনের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিন।দেশের ৮০ ভাগ লোকের যেখানে মৌন সমর্থন নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে সেখানে এভাবে আত্বগোপন থেকে আন্দোলন করে নির্দলীয় সরকারের দাবী আদায় করা কি সম্ভব এই দেশে?আন্দোলনের নামে এই আত্বগোপন কৌশল কি ভোটের দিনও বজায় থাকবে???
আল্লাহ হাফেজ
বিষয়: বিবিধ
১৬৫১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন