জামাত ও আমার কিছু মতামত-গোলাম মাওলা ভাইয়ের পোস্ট প্রসঙ্গে মন্তব্য
লিখেছেন লিখেছেন সাইদ ২১ আগস্ট, ২০১৩, ০১:১৮:০১ দুপুর
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।আসসালামুআলাইকুম।
গোলাম মাওলা ভাইয়ের পোস্ট
গোলাম মাওলা ভাইয়ের পোস্ট এর যথার্ত উত্তর একজন জামাতের কর্মীর কাছ থেকেই প্রত্যাশা করি। গোলাম মাওলা ভাই একজন সাধারণ জনগণ (গোলাম মাওলা লিখেছেন : আমি অমিলিগকে ছাপট করি না কিংবা বিয়েনপি কেও , তেমনি ৭১ এর ভুমিকার ও তাদের ইলাম নিয়ে নোংরা রাজনীতির জন্য জামাত কে )হিসাবে জামাতের রাজনীতির মূল্যায়ন করেছেন। সাধারণ জনগণ(আমিও কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত না) হিসাবে তার পোস্টের কিছু বিষয়ের (সব বিষয় নিয়ে আমার অতো আসলে ধারণা নেই) আমার মন্তব্য তুলে ধরেছি।
১।জামাত দু দুবার ক্ষমতাই এসেছে কিন্তু কই একবার ও তো শুনলাম না তারা ইসলামি আইন চালুর জন্য চেষ্টা করেছে। আইন পাশ না হক চেষ্টা তো করতে পারতো।
ইসলামী আইন আসলে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যায়না।ইসলামী আইন মেনে চলার জন্য জনগনকে মানসিক দিক থেকে প্রস্তুত থাকতে হবে।একটা সমাজের বেশিরভাগ লোকজন যখন ইসলামকে ভালবাসতে শিখবে,ইসলামী জীবনের ভালোদিকগুলো নিজে উপলদ্ধী করতে পারবে তখন নিজ থেকেই সে ইসলামী অনুশাসন মেনে চলবে।এইজন্য সমাজে সুশাসন নিশ্চিত,দুর্নীতি মুক্ত,শিশুকাল থেকে নৌতিক চরিত্তের উন্নয়ন আগে দরকার।এগুলো বাস্তবায়ন না করে ইসলামী শাসন জোর করে চাপিয়ে দিলে হিতে বিপরীত হবে।আমার ব্যক্তিগত ধারণা জামাত এককভাবে ক্ষমতায় আসলেও প্রথমে ইসলামী আইন চাপিয়ে দেবেনা।মানুষ যাতে ইসলামের মুল্যবোধ বোঝে সেভাবে সমাজ গঠনের দিকে মনোযোগ দেবে।
২।ইসলামে নারী নেতৃত্বর হারাম। আমরা তা সকলে জানি।অথচ জামাত শিবির দুই বার BNP এবং একবার আওয়ামীলীগ এর সঙ্গে জোট গঠন করেছে।
৯০% মুসলমান হলেও আমরা নামধারী মুসলমানই বেশী।সেই হিসাবে ইসলামী শক্তি এখনোও বাংলাদেশে দুর্বল।ইসলামী শক্তিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এরা বিএনপি কিংবা আওয়ামীলীগ এর সাথে একসাথে আন্দোলন করেছে।ইসলামের প্রথম জীবনে নবী (সা ) কিন্তু কাফিরদের প্রটেকশন নিয়েছেন।হুদাইবিয়ার সন্ধিতে অনেক কিছু ছাড় দিয়েছেন।আমার কাছে মনে হয় ইসলাম সহজ এবং সরল ধর্ম।জামাত ইসলামী একক ভাবে ক্ষমতায় থেকে নারী নেতৃত্ব মেনে নিলে আমিও প্রতিবাদ করব।
৩।আচ্ছা জামাত যারা করে তারা কি একটু ভেবে দেখেননা তাদের নেতা গুলি ৭১ এ যে সব অপরাধ করেছে তা কি ক্ষমা যোগ্য ?
আমার বাবাও একজন মুক্তিযোদ্ধা।মুক্তিযুদ্ধের অনেক ঘটনা বাবার কাছ থেকে শোনা।৭১এ জামাত পাকিস্তানের অখন্ডতা চেয়েছিলো।এই সুযোগে অনেকই রাজাকার হয়েছিল।তাদের অনেকই অনেক জঘন্য অপরাধে জড়িত ছিলো আবার অনেকই নিজের পরিবার,গ্রাম রক্ষার জন্যও রাজাকার হয়েছিলো। ব্যক্তিগত ভাবে কোন নেতা অপরাধের সঙ্গে জড়িত তা আমি জানিনা।তবে স্বাধীনতার পরে জামাত ইসলামীর ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিলো বলে আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি।
৪।এরা দুই মনে করে এরা ইসলামের ধারক ও বাহক।
আমাদের মূল সমস্যা আমরা জনগণ।জামাতকে কেনো আমাদের ইসলামের ধারক মনে করতে হবে? আওয়ামিলিগের লোকজন কি মুসলমান নই? বিএনপির লোকজন কি মুসলমান নই? মুসলমানের সন্তান হিসাবে তো এদের উচিত ছিলো আল্লাহর আইন,বিধি বিধান কে বাস্তবায়ন করা।তাহলে তো আল্লাহর আইন বাস্তবায়নের জন্য আমাদেরকে জামাতের ধরনা ধরতে হতো না।কিন্তু বাস্তবে আমরা কি দেখি।আওয়ামীলীগ কিংবা বিএনপির পক্ষে কি আল্লাহর আইন বিধি বিধান বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা সম্ভব? যদি তাই না হয় তাহলে আমরা কেমন মুসলমান? আমার তো মনে হয় আওয়ামীলীগ কিংবা বিএনপি যদি আল্লাহর আইন বিধি বিধান বাস্তবায়ন করে তাহলে কালকেই জামাত বিলীন হয়ে যাবে।আমরা সাধারণ জনগনই জামাতকে ইসলামের ধারক বানিয়েছি।
আমার বিশ্লেষণ একজন জামাত কর্মীর সাথে নাও মিলতে পারে।না মেলায় স্বাভাবিক।ইসলাম সমন্ধে আমার সাধারণ ধারণা থেকে নিজের মতামত তুলে ধরেছি।তবে জামাত তার নিজেদের পরিকল্পনা জনগনের কাছে এখনো পরিস্কার করে তুলে ধরতে পারেনি এটা সত্য।অনেকে মনে করে জামাত ক্ষমতায় আসলে মানুষকে জোর করে ইসলামী সব আইন কানুন মেনে চলতে বাধ্য করা হবে।তাই জামাতকে ক্ষমতায় দেখতে চায়না।এই ভুল ধারণা ভাঙ্গানোর দায়িত্ব আসলে জামাতের।এই ব্যাপারে জামাতের পরিকল্পনা কি আমিও জানতে আগ্রহী।
আল্লাহ হাফেজ
বিষয়: রাজনীতি
২১৯৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন