সংবিধান এর দোহায় আর উন্নত দেশের নির্বাচন পদ্ধতি কি জনগন গিলতে রাজি !!!!

লিখেছেন লিখেছেন সাইদ ১০ জুলাই, ২০১৩, ০৮:৫১:৩৫ সকাল





বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।আসসালামুআলাইকুম।

গত দুই-তিন দশক ধরে সব শাসক গোষ্ঠীই কথায় কথায় সংবিধানের দোহায় দিয়ে জনগনের দাবিকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করেন।সংবিধানে নেই তাই তোমাদের কোনো দাবি মানা যাবে না।ভাবখানা এমন যে সংবিধানে নেই তাই জনগন নিজেদের কল্যাণের জন্য নতুন কোনো দাবি করতে পারবে না। কিন্তু গণদাবির মুখে যখন পেরে উঠেনা তখন আবার গনদাবিকে ঠিকই সংবিধানের মধ্যে ঢুকিয়ে নেন। ছোটকাল থেকে জীবনে অনেক বই পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে কিন্তু সংবিধান বইটি পড়ার কখনো সৌভাগ্য হয়নি।গ্রাম্য এলাকার লাইব্রেরীতে ছিলো না বলে পড়া হয়ে উঠেনি।এতো বড়ো একটা মহা গুরুত্বপূর্ণ বই কেনো এলাকার লাইব্রেরীতে নাই? শহর এলাকার লাইব্রেরীতে বোধহয় পাওয়া যায়।এবার ভাবছি দেশে গেলে একটা কিনে নিয়ে আসবো।

সংবিধান তো রাষ্ট্র এবং জনগনের কল্যাণের জন্যই নাকি?সংবিধান এমন কোনো চিরস্থায়ী বস্তু না যে তা পরিবর্তন করা যাবে না।রাষ্ট্র এবং জনগনের কল্যাণের জন্য জনগণ যদি মনে করে সংবিধান পুরোপুরি পরিবর্তন করতে হবে তাহলে তাই করতে হবে। সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনো কাজ করার কথা তো জনগণ বলছে না।জনগনের গণদাবি সুষ্ঠ সুন্দর নিরপেক্ষ নির্বাচন।এখনকার সংবিধান মতে জনগণ যদি মনে করে সুষ্ঠ নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব না তাহলে সুষ্ঠ নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে।যেহেতু জনগনের চাওয়া বর্তমান সংবিধান পূরণ করতে পারছে না তাহলে জনগনের চাওয়া যাতে পূরণ হয় সংবিধানে সেই ব্যাবস্তা করতে হবে।শাসক দলের দায়িত্ব তো জনগনের কল্যাণ বয়ে আনা। জনগনের জন্য সংবিধান না হয়ে যদি সংবিধানের জন্য জনগণ হতো তাহলে আমার মতো মুর্খের মাথায় ব্যাপারটা ঢুকতো।তখন না হয় সংবিধান রক্ষার জন্য আমরা জনগনই পরিবর্তন হতাম।আমরা জনগণ নিত্য নতুন পরিবর্তিত হয়ে সংবিধান কে অক্ষুন্ন রাখতাম। নিজেদের কল্যাণের কথা বিসর্জন দিয়ে আমরা সকাল সন্ধা সংবিধান জপ করতাম।সংবিধানে একটা আচড়ও আমরা জনগণ লাগতে দিতাম না।আসলে সংবিধানের দোহায় দিয়ে জনগনের গনদাবিকে দাবিয়ে রাখা সব শাসক গোষ্ঠীর একরকম ভাওতাবাজী ছাড়া আর কিছুই না।আর যারা জনগনের গনদাবিকে উপলদ্ধী করার ক্ষমতা রাখেনা তাদের কাছে জনগনের কল্যাণ কতটুকু প্রত্যাশা করা যায়?

ইদানিং আরেকটা কথা খুব জোরে শোরে প্রতিনিয়ত শোনা যায়।পত্রিকার পাতাতে ভাঙ্গা রেকর্ডের মতো অনেকই বাজিয়ে চলছে উন্নত দেশের নির্বাচন পদ্বতিতে নির্বাচন।শুধু মাত্র নির্বাচন কেনো উন্নত দেশের মতো হবে?উন্নত দেশে কি নির্বাচন ছাড়া আর কিছু নাই?আজ জাপানের মতো উন্নত দেশে পুলিশকে আমি বন্ধু হিসাবে পাই,সরকারী কর্মজীবিরা আমাদের সেবা করার জন্য স্যার স্যার করে অস্থির হয়ে যায়।ভয়ে থাকে আমার একটা কমপ্লেইন তার চাকুরী জীবনের বারোটা বাজাতে পারে।দেশে একবার এক সরকারী অফিসে ফোন করছিলাম একটা কাজে।সরকারী কর্মচারীর ভাষা শুনে তাকে একটু বলেছিলাম আপনারা আমাদের সেবা করার জন্যই তো আছেন।কথাগুলো একটু নরম করে বললে শুনতে ভালো লাগতো।কর্মচারী বলে উঠলো আপনাদের সেবার জন্য??জাপানে আছেন বলে কি ভাব দেখাচ্ছেন নাকি?কয় দিনের বৈরাগী ভাত কে বলে অন্ন।মানে মানে ফোনের লাইন কেটে দিলাম।

সামান্য দুর্নীতি,স্বজনপ্রীতির জন্য উন্নত দেশে রাজনীতিবিদদের পদত্যাগের হিড়িক পড়ে যায়।দায়িত্ব অবহেলার জন্য মন্ত্রী,প্রধানমন্ত্রী অহরহ পদত্যাগ করে থাকে।নিজের যোগ্যতা বলে চাকুরী পায়।চাকুরী পাওয়ার জন্য কাউকে বিন্দুমাত্র পয়সা ব্যায় করতে হয়না।মামা,খালু,টাকার জোর দেখিয়ে চাকুরী নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না।সরকারী দল-বিরোধী দল সংসদে গঠনমূলক সমালোচনা করে।একে অপরকে সন্মান করে।আমাদের দেশের মহান সাংসদদের মতো মৃত মানুষকে নিয়ে এতো আলোচনা করেনা।এই রকম ভুরি ভুরি উদহারণ দেওয়া যায়।এইগুলো নিয়ে আমাদের শাসক দলের মাথা ব্যথা নেই।শুধু মাথা ব্যথা উন্নত দেশের নির্বাচন পদ্বতি নিয়ে।ভাবখানা এমন যে উন্নত দেশের নির্বাচন পদ্বতিতে নির্বাচন করতে পারলেই সারা বিশ্ব আমাদেরকে উন্নত দেশের তকমা লাগিয়ে দেবে। এখন পর্যন্ত উন্নত দেশের বিমান বন্দরে পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশীদের যে বিড়ম্বনা সইতে হয় তার খবর কি শাসক গোষ্ঠী রাখে?আমাদের দিকে এমনভাবে তাকায় যেনো কোন চোরের দেশ থেকে আমরা এসেছি। আপনাদের তো আবার লাল পাসপোর্ট।এইসব বিড়ম্বনা তো আপনাদের সইতে হয়না তাই আপনাদের এইসব জানারও কথা না।আগে উন্নত দেশের মতো জনগনের সেবা করে দেখান।বিরোধী মত কে সন্মান করতে শিখুন তারপর উন্নত দেশের মতো নির্বাচন দিন।তাতে বিরোধী দল নির্বাচন নিয়ে কোনো কিছু করলে জনগনই তার জবাব দেবে।শাসক দলের কিছুই করার দরকার হবে না তখন।

আল্লাহ হাফেজ

বিষয়: রাজনীতি

১৮২৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File