বামপন্থী আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মুসল্লীদের নামাজের দৃশ্য দেখে পড়েছে 'ফাঁকা বাঁশের চিপায়' - না পারছে হজম করতে, না পারছে গিলতে
লিখেছেন লিখেছেন বিজয়ী পতাকা ৩০ মার্চ, ২০১৩, ১১:২২:৩২ রাত
নামাজ হচ্ছে মুসলিমদের পক্ষ থেকে বিশ্বের জন্য সবচাইতে সুন্দরতম, পবিত্রতম উপহার। নামাজের দৃশ্য দেখে মানবজাতির বুকের কোণার অতৃপ্ত আত্মা হু হু করে কেঁদে উঠে, কোথায় যেন একটা ভাল লাগার স্পর্শ হৃদয়কে ছুঁয়ে যায়। এরজন্য নামাজের দৈহিদ ভঙ্গী এবং অবস্থান পরিলক্ষিত করে নন-মুসলিমরাও বলে উঠে যে, observing salat is their favourite part in Islam.
মানব সভ্যতার সূচনা থেকে নামাজ চালু থাকলেও, আমরা এখন যেই ভাবে যেই পদ্ধতিতে নামায পড়ি, সেভাবে নামাজ পৃথিবীতে প্রথম সূচনা করেছিলেন পবিত্রা স্বতীসাধ্বী এবং পৃথিবীর সবচাইতে সন্মানিতা নারী ইসার (আঃ) কুমারী আম্মু বিবি মারইয়াম (আঃ)। Maryam (আঃ)-এর নামাজের মডেলটাকেই আল্লাহ পছন্দ করে পুরো বিশ্বের উম্মাহর জন্য অবশ্যকর্তব্যমূলক নামাজের বিধান করে দিলেন, সুবহানাআল্লাহ। একই ভাবে উল্লেখযোগ্য, নবজাতক ইসমাইলকে (আঃ) খাওয়ানোর জন্য পিপাসার্ত এবং ক্ষুদার্থ মা হাজেরার (আঃ) সাফা-মারওয়া পাহাড়ে ৭ বার দৌঁড়ানো এবং একটু বড় হয়ে কিশোর বয়সে পৌঁছালে, সবচাইতে প্রিয় এবং সেই মুহূর্তের একমাত্র পুত্র সন্তান ইসমাইলকে (আঃ) বিসর্জন করতে প্রস্তুত বাবা ইব্রাহীমের (আঃ) আল্লাহর প্রতি নিষ্ঠা এবং ভালবাসা -- হজ্জ এবং ঈদুল আযহার ইবাদতের অংশ বিশেষে পরিণত হয়েছে, এই রীতিগুলো সামর্থ থাকলে মনে করে পূরণ না করলে হজ্জ, ওমরা বা কুরবানীর ঈদই হবে না।
আর আবু বকরকে (রাঃ) যখন গৃহবন্দী করা হল (তৎকালীন ক্ষমতাশীন কর্তৃক), উনি (রাঃ) বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে নামায পড়তে শুরু করলেন। এবং ওঁনার (রাঃ) এই নামাজের দৃশ্য দেখেই মক্কার পৌত্তলিকরা ইসলামে দাখিল হতে থাকলেন - অথচ আবু বকরের (রাঃ) প্রথমতঃ গৃহবন্দী হওয়ার প্রধান এবং মূল দোষনীয় কারণই ছিল ইসলামের প্রচার এবং প্রসার ঘটানো। এই পরিস্থিতি দেখে মুশরিক সর্দারা আবু বকরকে (রাঃ) হুকুম করে ওঁনার (রাঃ) উঠনে বের হয়ে নামাজ পড়া রহিত করলো, যেটা আবু বকরের (রাঃ) জন্য খুব কষ্টকর এবং বুক ফাঁটা বেদনার কারণ হয়েছিল। তৎকালীন জালেম কর্তৃপক্ষ তো ভেবেছিল যে, এভাবে পর্যায়ক্রমে অত্যাচারের মাত্রা বাড়াতে থাকলে, অতি শিঘ্রই পৃথিবী থেকে ‘নামাজ’ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। সাড়ে ১৪০০ বছর পরে এখন পাঠক হিসেবে আপনাদের কি মনে হয়, পৃথিবী থেকে কি নামাজ এবং মুসল্লিরা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে, নাকি তাদের সংখ্যা কোন অংশেই কমে গিয়েছে?
বাংলাদেশের আজকের বাকশালী সরকার, অতীতের পরাজিত, নিগৃহিত এবং বিলুপ্ত মক্কার কাফের মুশরিকদের মত একই রকম সরকারী পুরাতন কায়দায় বাংলাদেশের মাটি থেকে ইসলামকে, ইসলামের পক্ষীয় শক্তিকে অযথা আহাম্মকী স্টাইলে বিলুপ্ত করার পণ নিয়ে রণযুদ্ধে নেমেছে। শিক্ষা ব্যবস্থা, কর্মসংস্থান, কলকারখানা এবং বাসস্থানসহ জনজীবনে অপরিমিত ক্ষতি সাধনের পর ওনারা বাংলাদেশের তৃণমূলের আলেম-ওলামাকে ধরার আগে বড়টাকে ধরেছে। এর জন্য বাংলাদেশের প্রাণ, মুফাসসির সাঈদী সাহেব এবং ওঁনার বন্ধু এবং সহকর্মীদের ধরেছে। সত্য মামলা না খুঁজে পেয়ে মিথ্যা মামলার আসামী হিসেবে তাঁদেরকে বিলুপ্ত করার পর প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এবং পরে ইসলামী আন্দোলনের মত দল থেকে শুরু করে বাকীদেরকেও নির্মূল করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। আওয়ামী দেশদ্রোহী সরকার ভেবেছিল, আগে বড় দুটোকে শেষ করলে পরে ছোটদের ধরা তো অনেকই সহজ হবে। এরজন্য সরকারকে এখন ধৈর্য ধরতে হচ্ছে, একই রণমূর্তি অন্যান্য দলকে দেখানোর সময় সরকারের এখনো আসে নি। কিন্তু সরকার এবং ভারতের পোষ্য ছানা, শাহবাগ, সরকারের এই পরিকল্পনা সব গরমিল করে ফেলেছে। বয়স এবং অভিজ্ঞতার স্বল্পতায় তারা সরকারের এই পরিকল্পনা আগ বাড়িয়ে দেশবাসীকে প্রকাশ করে ফেলেছে এবং সরকারও ‘অতি চালাকের গলায় দড়ির’ খেল দেখাতে গিয়ে, নিজেই ফেঁসে পড়েছে। তাই আওয়ামী সরকার এখন পুরো দেশবাসীর আনিত এই অনাহূত পরিস্থিতি না পারছে গিলতে, না পারছে হজম করতে। সরকারী খাদেমদারিতা করে তারা মুসলিম জনতাকে এখন নামাজ পড়তে দিতে বাধ্য হলেও তা গণমাধ্যমে ছবি বা ভিডিও ফুটেজ করে প্রচার করার অনুমতি দিতে পারছে না, এবং শাহবাগী ছানাকে দিয়ে প্রতিদান অনুনয় বিনয় করে বলতে চাচ্ছে, ‘এত তাড়াতাড়ি আপনারা ক্ষেপবেন না, আপনাদের তো এক-দু’বছর এখনো সময় বাকি আছে। বড় দু’টোকে শেষ করে, তবে তো আপনাদের জবাই করার পরিকল্পনা আমাদের। তাই চোখ বুজে একটু কানামাছি খেলেন এখন। সরকারী এই পরিকল্পনাটা শাহবাগী ছাউ আমরা প্রকাশ করে ফেললেও মনে করেন যে, আপনাদের কান-চোখ সব বন্ধ - তাই আপনাদের প্রজ্ঞা কাজে লাগাবেন না, গাজা খাওয়ার মত বুদ হয়ে পড়ে থাকেন আরো কয়েক বছর।”
হায়ে রে, বাকশালী আওয়ামী সরকার! জানো না তুমি কার সাথে লড়ছো। ইবলিস শয়তানের প্ররোচনায় এর আগে ফেরাউন, নমরুদ আর মক্কার মুশরিক লড়েছে, ভবিষ্যতে দজ্জালও লড়বে - কিন্তু ওদের মতই তোমরাই লাঞ্চিত হয়ে বিলুপ্ত হবে - তারপরও আল্লাহর জমিন থেকে ইসলামকে বিলুপ্ত করতে পারবে না। বরং তোমাদের দ্বারা আমাদের প্রকৃত শহীদের রক্তের মর্যাদাতে সমৃদ্ধ হয়েই বাংলাদেশী দরদী জনতা ফুলে ফেপে আগের চাইতেও বেশী উদ্দমে ইসলামে দলে দলে দাখিল হয়ে বাংলাদেশকে অনেক সুন্দর প্রগতিশীল মাতৃভূমি তৈরী করতে সামনের দিকে এগিয়ে এসেছে। এর আগেও এরজন্যই মৃত্যুশয্যায় শায়িত অবস্থায় আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ) এই বিজয়ী কষ্টার্জিত নামাজের শান্তিপূর্ণ দৃশ্য দেখার জন্য আবেদন করেছিলেন এবং সেই মনোরম দৃশ্য দেখে ওঁনার (সাঃ) দুই কপোল ধরে পানি গড়িয়ে পড়ে ভালবাসায় আপ্লুত হয়ে নবীজ্বী (সাঃ) ডুকরে কেঁদে উঠে বলেছিলেন, “আমার উম্মাহ, আমার উম্মাহ”।
নবুয়তের প্রথম বছর যখন নবীজ্বী (সাঃ) বিবি খাদিজা (রাঃ) এবং কিশোর আলীকে (রাঃ) নিয়ে কাবা শরিফের চত্তরে নামাজ পড়তে দাঁড়ালেন, তখন একব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন যে, এরা কারা এবং কি করছেন - তখন উত্তরে উনি জানতে পারলেন যে, এরা মুসলিম এবং ওনারা নামাজ আদায় করছেন এবং মক্কাতে এনাদের সব মিলে জনশক্তি হচ্ছে এই তিনজনই। একথা শুনে প্রশ্নকারী মনে মনে বলেন যে, উনি অভিপ্রায় করেন উনি যেন চতুর্থ (নামাজী) হন। এই হল আমাদের বিশ্বনেতা (সাইয়েদেনা) নবী করিম (সাঃ) এবং তার সঙ্গী সাহাবা কেরামদের (রাঃ) নামাজের প্রতি ভালবাসা এবং তার প্রভাবের মহাকার্ষণের প্রতিচ্ছবি। দোয়া এবং অধ্যাবসায় থাকবে আমাদেরও নামাজ যেন এতই সুন্দর প্রশান্তির এবং powerful হয় যে, দর্শক বিশ্ববাসীও যেন এমনই দেউলিয়া হয়ে যান নিজেরা নামাজী হওয়ার জন্য অথবা নামাজীকে শহীদ করার জন্য। কারণ শুধু দুনিয়াকেই যে ভালবাসে, তার জন্য নামাজ সবচাইতে কঠিন কাজ, মুনাফিক ছাড়া। আর আখেরাতকে যে ভালবাসে তার নামাজের প্রতি আসক্তি প্রেম ভালবাসা দিন দিন আরো গভীরতর হতে থাকে
[হেফাজতে ইসলাম এই বাকশালী সরকারের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থানে এখনো অনঢ়। নীচে ইসলামী আন্দোলনের ডাকা ২৯ শে মার্চ,২০১৩ শুক্রবার জুম্মার নামাজ পড়ার দৃশ্যের কিছু ছবি নীচে সংযোজিত হল।]
বিষয়: বিবিধ
৩৯৭৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন