পিলখানা হত্যাকান্ড ও একটি পর্যালোচনা
লিখেছেন লিখেছেন এন্টিভাইরাস ০২ মার্চ, ২০১৩, ১০:৫৫:৪২ সকাল
বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতিক দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী এবং সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বিজিবি (বিডিআর) কে নিয়ে অতীতেও ষড়যন্ত্র হয়েছে, বর্তমানেও হচ্ছে । এর পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে প্রতিবেশী ভারত এবং সহযোগী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে তাদের এদেশীয় দোসররা ।
ভারত কখনোই চায়নি স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীন ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী থাকুক । এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ফেলে যাওয়া বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি ভারত কুক্ষিগত করেছিল । পরবর্তীতে সেনাবাহিনীতে হওয়া বিদ্রোহগুলোতেও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে ভারতের মদদ ছিল।
ভারতের পরামর্শেই শেখ মুজিব রক্ষীবাহিনী গঠন করেছিলেন এবং সেনাবাহিনীকে অনেক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে সেসব সুবিধা রক্ষীবাহীনিকে দিয়েছিলেন । ধারণা করা হয়, শেখ মুজিব হত্যাকান্ডের শিকার হওয়ার অনেকগুলো কারণের মধ্যে অন্যতম কারণ ছিল সেনাবাহিনীর উপর রক্ষীবাহিনীকে প্রাধান্য দেয়া ।
ভারতের সবচেয়ে বড় লজ্জা ছিল রৈমারী সীমান্তে বিডিআরের কাছে পরাজিত হওয়া এবং বিএসএফ ও ভারতীয় সেনা বাহিনীর শতাধিক সৈন্যের নিহত হওয়া । যেহেতু বিডিআরের নেতৃত্ব ও প্রশিক্ষনের দায়িত্বে থাকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, তাই ভারতের ক্ষোভ ও প্রতিশোধ স্পৃহা ছিল বিডিআর ও সেনাবাহিনী উভয়ের উপরই ।
২০০৯ সালের ২৫ শে ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ৫৭ জন সেনা অফিসারকে হত্যার মাধ্যমে এক ঢিলে দুই পাখি মারা হয়েছে । একদিকে দেশপ্রেমিক ও চৌকস সেনা অফিসারদের হত্যার মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে নেতৃত্বশূন্য করা গেছে অপরদিকে হত্যাকান্ডের সাথে বিডিআরকে জড়িয়ে এর জওয়ানদের বিচার করায় এবং বিচারকালীন সময়ে রহস্যজনক ভাবে অনেকের মৃত্যুর কারণে বিডিআরের চেইন অব কমান্ড ও মনোবল উভয়ই ভেঙ্গে পড়ে এবং সীমান্ত অরক্ষিত হয়ে পড়ে । ধারণা করা হয়, রোউমারীতে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই ভারত পিলখানায় সেনা হত্যাকান্ডের পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছিল ।
পিলখানা ট্র্যাজেডির অনেক প্রশ্নের উত্তর আজও পাওয়া যায়নি এবং অনেক রহস্যের উন্মোচন হয়নি । সেদিন আওয়ামীলীগের অনেক নেতা ও মন্ত্রীর আচরণ ও কারযক্রম ছিল প্রশ্নবিদ্ধ ও রহস্যময় । এমনকি সেনা প্রধান মইন ইউ আহমাদের ভূমিকাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ । পরবর্তীতে অনেক সৎ ও দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারকে চাকরীচ্যুত করা হয়েছিল, এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়ায় এবং সরকারের প্রশ্নবিদ্ধ ভুমিকার সমালোচনা করায় ।
মূলত পিলখানা হত্যাকান্ডে দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পাওয়া গেলেও বিচারকে অন্য দিকে প্রবাহিত করে আসল অপরাধীদের বাঁচানোর প্রয়াস লক্ষ্য করা গেছে । এ হত্যা কান্ডের আসল রহস্য একদিন উন্মোচিত হবে এবং প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে, এ আশাই করে এদেশের দেশপ্রেমিক জনতা ।
বিষয়: বিবিধ
১৪২৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন