বৈবাহিক বিষন্নতা...
লিখেছেন লিখেছেন FM97 ২৪ জুন, ২০১৫, ০৩:৫৯:১২ দুপুর
দুই বছর আগের কথা। একটা ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়েছি। তো, পরীক্ষাকেন্দ্রের গেট তখনও খুলে নি। সময় কাটানোর জন্য পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটার সাথে কথা বলা শুরু করলাম। এক পর্যায়ে পরিবার নিয়ে কথা উঠে। বললাম- “আমি সিঙ্গেল, আপনি”? মুখে কিছুটা বিষন্নতার ছাপ রেখে বললো- “হুম… সিঙ্গেল থাকাই ভালো। আমি মেরিড”।
যাই হোক- এই মেয়েটার মতো অনেককেই দেখেছি, বিবাহিত হয়ে বৈবাহিক জীবনকে ভালো বলেন না। অসন্তুষ্টতা প্রকাশ করে অবিবাহিতদেরকে পরোক্ষভাবে ‘বিয়ে’ বিষয়ে ভয় দেখান, নিরুৎসাহিত করেন। মূলত- বিবাহিত হয়েও আমাদের মধ্যে বিষন্নতা, হতাশা; কাজ করে বিভিন্ন কারণে-
১/ ভুলটা করি বিয়ের আগেই। মা-বাবা হোক বা স্বয়ং নিজেই- জীবনসঙ্গী পছন্দ করি ছেলের উপরি হাভ-ভাব দেখে। মালদার পার্টি (ধনী) কিনা- এসব দেখে। অথচ, ধার্মিকতা ও উন্নত মানসিকতা- যে দুটো জিনিস একটা ছেলেকে স্ত্রীর অধিকারের ব্যাপারে সচেতন করে- সেটা একটা ছেলের মধ্যে আমরা দেখি না।
২/ আমরা এমন ধারণা নিয়ে থাকি যে- আমি যেমন আমার জীবনসঙ্গী তেমনই হবে। সবকিছু মিলবে। কোনো কিছুতে অমিল হওয়া মানেই - ‘আমি অসুখী, আমি নির্যাতীত’!
৩/ সংসার হচ্ছে একটা মানুষের জন্য open challenge. যে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অনেকেই ব্যর্থ হয়ে যায়। কারণ- অধৈর্য, সমঝোতার অভাব ও নিজেকে অদৃশ্য প্ররোচনায় নিমজ্জিত করা। দেখুন- আমরা সবাই জানি- বিয়ে মানুষের দৃষ্টিকে সংযত করে, চরিত্র উন্নত করে, অশ্লীলতা ও পাপাচার করতে বিবেককে বাঁধা দেয়। আর এতো কিছু জিনিস যখন একটা বিয়ের মাধ্যমে বন্ধ হয়ে যায়, তখন মানুষের চির শত্রু শয়তান, ভিন্ন পথে এসে মনকে বিপথগামী করে, মনে অশান্তি সৃষ্টি করে, জীবন নিয়ে চাওয়া-পাওয়া সংক্রান্ত উদাসীনতার জন্ম দেয়। আর আমরা এও জানি যে- শয়তান সবচেয়ে বেশি খুশি হয় যখন সে বৈবাহিক জীবনে ভাঙ্গন ধরাতে পারে।
সুতরাং, অদৃশ্য শয়তানের এই ষড়যন্ত্রকে (আমার মতে) নিম্নে বর্ণিত পদ্ধতিতে অতিক্রম করা যায়-
১/ অল্পে তুষ্ট থাকা। নিজের মধ্যে একটি কৃতজ্ঞ মনকে লালন করা।
২/ রাগ কিংবা ভালোবাসা- কোনোটাতেই সীমালঙ্ঘন না করা।
৩/ এটা বিশ্বাস রাখতেই হবে যে- মানুষের অবস্থান- সেটা দৈহিক, মানসিক কিংবা শারীরিক হোক- সব সময় এক রকম থাকে না। তাই কখনো নিজের মতো অপরপক্ষ থেকে না পেলে- ‘সে আমাকে avoid করছে’ হুট করে এমন ধারণা পোষণ না করা।
৪/ কোনো বিষয়ে সন্দেহ জাগলে খোলামেলা আলোচনা করা। মনে চেপে না রাখা।
৫/ পাওয়া- না পাওয়া; সবকিছুতে আল্লাহ’র ওপর ভরসা রাখা। আল্লাহ আমাদের ভাগ্যে এই পৃথিবীর যেটুকু সুখ রেখেছেন- কেউ তাকে আমার থেকে ছিনিয়ে নিতে পারে না- এই মনোভাব রাখা। তাছাড়া ‘...মু’মিনদের আল্লাহ’র প্রতি নির্ভর করা উচিত’ (সূরা ইমরান, আয়াত- ১৬০)
সুতরাং, আশা করা যায়- বিয়ে পরবর্তী তথা বৈবাহিক জীবন নিয়ে আমাদের মধ্যে বিষন্নতা কাজ করবে না। বরং যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দেয়ার মতো বিচক্ষণতা থাকবে। সেই সাথে থাকবে জীবনের ছোট ছোট স্মৃতি পুঁজি করে আল্লাহ’র প্রতি সন্তুষ্টতা এবং সমাজের প্রতি উৎসাহী বার্তা।
বিষয়: বিবিধ
১৭১৪ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বিবাহিত জীবনের চাওয়া ও পাওয়ার এবং দায়িত্ব ও কর্তব্যের বেড়াজালে সামনে মানুষ বিয়ে থেকে দূরে সরে যাবে ।
এর মানে এইনা আপানর মন্তব্যের সাথে আমি একমত না।
কিন্তু কিছু যুক্তি, তথ্য, উদাহরণ দিতে পারতেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন