বিয়ের পরে ভালো হয়ে যাবে…
লিখেছেন লিখেছেন FM97 ২৭ নভেম্বর, ২০১৪, ১০:৩৮:২৭ সকাল
দেখা যায়- অনেক মা-বাবা তাদের ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দেয়ার সময় সত্যতা লুকায়। অথবা সত্য বলার তাদের সাহস থাকে না-মিথ্যার আশ্রয় নেয়। সেক্ষেত্রে কিছু সন্তানেরা মা-বাবার সাথে তাল মিলায় কিংবা নিরুপায় হয়ে নিরব থাকে।
“ছেলেটা অনেক ভালো, স্বভাব-চরিত্র, টাকা-পয়সা- সবই ভালো- তাই নিজের মেয়ের জন্য সিলেক্ট করে নিলাম” (অথচ উনার মেয়ে যে এই ছেলেটার যোগ্য না-সেটাই বুঝেন না)। আবার বিপরীতভাবে “রূপবতী, গুণবতী, চটপটে মেয়ে দেখে নিজের ছেলের জন্য পছন্দ করে নিলাম, তবে আমার ছেলে যে বখাটে, সেই সাথে কিছু খাওয়ারও যে অভ্যাস আছে- সেটা যাতে কেউ না জানে। থাক না অসুবিধা কি? বিয়ের আগে ওরকম কিছু একটা থাকেই- বিয়ের পরে সব ঠিক হয়ে যাবে। বিয়েটা হয়ে যাক…”-- এমনই ধ্যান-ধারণা সমাজের অনেক মুরুব্বিদের। তবে আসলেই কি নষ্ট ছেলে-মেয়েরা বিয়ের পর ভালো হয় নাকি জীবনসঙ্গীর ওপর জুলুম হয়?
ঘটনাটা আমাদের এলাকার। উভয়পক্ষের সম্মতিতে বিয়ে হয়ে গেলো। উল্লেখ্য, মেয়ের পড়াশুনা তখনও শেষ হয় নি। এদিকে মাঝে মধ্যে স্বামীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে কোচিং এ যাচ্ছি বলে বের হয়। স্ত্রী কোথায় কোচিং করতে যায়- এটা দেখতে স্বামী একদিন বের হয়। গিয়ে দেখে কোচিং নয়- বরং আরেক ছেলের সাথে বসে আছে। স্বামী হতবাক, একি অবস্থা! মেয়ের মা-বাবা জানে? যদি জানে, তাহলে আমার সাথে বিয়ে দিলো কেনো?
জানা যায়- মেয়েটার প্রেমের কথা তার মা-বাবা জানতো। কিন্তু মেয়ের পরিবার সেই ছেলেকে মেনে নিবে না। যেকারণে মা-বাবা ভেবেছে অনত্র বিয়ে দিলে হয়ত তার মেয়ে ভালো হয়ে যাবে। অথচ একসাথে তিনটা জীবন নষ্ট হয়েছে। এদিকে মেয়েকে মোহরানার বাকি টাকা দিয়ে তালাক দিয়েছে তার স্বামী। পুনরায় সেই লোকটি বিয়ে করেছে কিনা জানা যায় নি।
তাছাড়া, সমাজে এমনও দেখা যায় বিয়ের পরে স্বামী ভালো না। নেশা করার খারাপ অভ্যাস আছে কিংবা আরেক নারীর প্রতি দূর্বল। সেক্ষেত্রে ফাঁদে পড়ে যায় স্ত্রী। মা-বাবা, শশুড়-শাশুড়ি সবার একই কথা- “স্বামীকে সঠিক রাস্তায় নিয়ে এসো”। কিন্তু আদৌ কি একটা মানুষকে সঠিক পথে আনা সহজসাধ্য? যদি না- আগে কাউকে ভালো লাগলেও- সেটাকে ভুলে যায় কিংবা মাদকাসক্ত হলেও বদ অভ্যাস ছেড়ে দেয়।
জীবনটা তো নাটক-সিনেমার মতো নয় যে কয়েক ঘন্টা কিংবা কয়েক পর্বের মধ্যে বাড়ির বউ চমৎকারিত্ব দেখাবে আর স্বামী ভালো হয়ে যাবে। বরং দেখা যায়- তালাকপ্রাপ্ত পুরুষের বিয়ে সহজ হলেও তালাকপ্রাপ্ত সতীসাব্ধি নারীর বিয়ে সমাজে সহজ নয়। যার কারণে কষ্ট সহ্য করে, স্বামীর কুকর্ম দেখেও শশুড় বাড়িতে থাকো তা নাহলে খোলা তালাক দিয়ে সারাজীবন বাপের বাড়িতে থাকো। এদিকে ভাইরা যাতে বোঝা মনে না করে- মাসে মাসে তাদের হাতে টাকা তুলে দাও... ...
যাই হোক- মানুষ বিয়ে করে শান্তির খোঁজে। তবে দুঃখের সাথে বলতে হয় সমাজের কিছু বড়দের নির্বুদ্ধিতা কারণে ( তথা বিয়ের পরে সব ঠিক হয়ে যাবে) কিছু পরিবারে অশান্তিই নেমে আসে……
বিষয়: বিবিধ
১৮৪৮ বার পঠিত, ৪২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সহমত
একজন ছেলের ব্যাপারে যেভাবে খোঁজ খবর নেওয়া যায় সেরকমভাবে একজন মেয়ের ব্যাপারে সম্ভব হয় না ।
মেয়ের কোন প্রতিনিধি ছেলের অফিসে ছেলের রুমের এটাচড্ বাথরুমেও চলে যেতে পারে ।
মেয়ের ব্যাপারে কলেজের গেটের দারোয়ানের কাছে বিভিন্ন কৈফিয়ত দিতে হয় , যেটা মেয়ে পক্ষই বলে রাখে।
বিয়ের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে সিংহভাগ ক্ষেত্রেই মেয়ে এবং মেয়ের ফ্যামিলি মেয়ের ব্যাপারে ইনফরমেশন লুকায় বা মিথ্যা বলে ।
পরে এটা ছেলের জন্য মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি করে ।
একজন ছেলে হিরুন্চি না ডাইল খোর নাকি মাস্তান সেটা ছেলের লোকালিটিতে একবার ঘুরান দিয়ে আসলেই বের করা যায় । মেয়ের ব্যাপারে এক্ষেত্রে খুব কড়া গোপনিয়তা রক্ষা করা হয় ।
এসবের ফলে যে সমস্যার সৃষ্টি হয় তাতে ছেলের কখনই লাভ হয় না । তালাক হয়ে গেলে আবার বিয়ে করলে তাকে তো আরেকজন মেয়েরই ভরণপোষন করতে হবে হোক সে হিরুন্চি বা নামাজি ছেলে।
আর মেয়ের তো লাভ হবে দুইখানেই । এক্স হাব্বি থেকে সে পাবে দেনমোহরের বাকি অংশ , সাথে ৩ মাসের খোরপোশ অন্যায় করেও । আবার নতুন হাব্বির কাছে তো তার ভরনপোষণ এনটাইটেলড্ই।
বর্তমান সময়ে বিয়েটা হয়ে গেছে মেয়েদের জন্য খুব স্বল্প সময়ে মিলিয়নিয়ার হবার সহজ একটা উপায়। আর ছেলেদের জন্য এটা এখন দোযখেরই পার্থিব সংষ্করন।
তবে এটা সত্য অনেক সময় মেয়ে যদি বলে- না, আমার পছন্দ না। তখন দেখা যায়- মেয়ের পরিবার উল্টো ঝাড়ি দেয়! এতে মেয়ে পড়ে যায় বিপদে! মেয়ে ভয়ে থাকে!
তবে , মেয়েরা কখনই এ কাজ করে না । বাবা মা এর মন রক্ষার্থে নিজের অমতে বিয়ে করলেও ছেলেকে বিয়ের পর থেকেই একটা মানসিক চাপে রাখে । আর কে না জানে ''ফিতনা হত্যার চেয়ে জঘন্য ''।
পরে ডিভোর্স নিয়ে তার প্রেমিকের কাছেই ফিরে যায় । ক্ষতি যা হবার ঐ বোকাটারই হয়।
বিয়ের ফিল্ডে না নেমে থাকলে এই উপদেশ গুলো একেবারে ফেলনা না।
হতে পারে- সে যে টাইপের ছেলে কামনা করে- মা-বাবা তাকে সেই টাইপের ছেলে এনে দেয় নি। এবার নিজের অমতে বিয়ে করে মেয়েটা কি শান্তি পাবে? অথচ মা-বাবার চাপে তো করতেই হচ্ছে! ফলে, না সে উপভোগ করতে পারবে আর না ছেলেটা আনন্দ পাবে।
স্টিকি পোস্টে অভিনন্দন...
বরং বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই আইবুড়ো ছেলে খোঁজে শুধু খাওয়াতে পারবে বলে...!!!
বাকীগুলো সব গোল্লায় যাক!
ধন্যবাদ....কঠিন সত্য তুলে ধরেছেন।
কথাটা যখন মেয়ে হয় দ্বীনদার, আর পরিবার যখন বর পছন্দের ক্ষেত্রে উপরি ভাব দেখে...
তারপরও সবার ওপর ভাগ্য...
অনেকে পূর্বে খুব অভ্যাসে জীবন যাপন করে, সার্বক্ষণিক একজন মানুষ পাশে থাকলে মনে করে নিজেকে শোধরে নিতে পারবে,তাহলে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা অনেক, কারণ স্বামী স্ত্রীর সহায়তা অন্য যে কারোর চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর।
অনেক ধন্যবাদ সময়োপযী লিখাটি পোস্ট করার জন্য।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে লেখার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ
আমার পাশের বাড়ীর একটি মেয়েকে আবেগের তাড়নায় দ্রুত বিয়ে দিয়ে বাবা-মা এখন চোখের পানি ফেলছে নিয়মিত। কারন মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পর জানা গেল ছেলেটি বখাটে এবং বদমেজাজী।
মন্তব্য করতে লগইন করুন