এক লোকমা খাদ্য তুলে দেয়াও তাদের জন্য সাদকা...
লিখেছেন লিখেছেন FM97 ১১ নভেম্বর, ২০১৪, ১১:১৭:২৪ সকাল
আমরা কোনো আদর্শ সমাজে বসবাস করছি না- এটাই সত্য। বিভিন্ন পরিবারের বিভিন্ন সমস্যা, যার সমাধানও ভিন্ন ভিন্ন। আজকে লিখছি তেমন পরিবার নিয়ে যেখানে পরিবারের কর্তা অহংকারী এবং কর্ত্রী হয়ে যান স্বৈরাচারী।
“আমার টাকায় সংসার চলে, তাই আমার কথামতো চলতে হবে” এমন অহংকার ও দাম্ভিকতা স্বরূপ কথার কারণে অনেক মেয়েরাই একটা চাকরি পেতে (হাতে কিছু টাকা আসার জন্য ) চায়-যাতে কেউ তাদেরকে কথা শুনাতে না পারে। নিজের ইচ্ছা মতো ‘যেমন খুশি তেমন চলা যায়’- ইদানিং যেটাকে আর্থিক স্বাধীনতাও বলা হচ্ছে।
যদিও ‘যেমন খুশি তেমন চলা’ কিংবা ‘আমার কথা মতো চলতে হবে’- এই দুই ধরণের কথার মধ্যে অনেক ভুল আছে। প্রথমত সংসারে টাকা খরচ করা মানে এটা নয় যে কর্তৃত্ব প্রকাশ করতে হবে। বরং এটা পুরুষ জাতির ওপর আল্লাহ’র অনুগ্রহ যে- পরিবারের সদস্যদের মুখে এক লোকমা খাদ্য তুলে দেয়াও তাদের জন্য সাদকা হিসাবে কাজ করে। সুতরাং স্বামী যখন তার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করে সে মূলত আল্লাহ’র ইবাদতই করে- সেখানে অহংকারের কিছু নেই।
তাছাড়া যারা চিন্তা-ভাবনা না করেই সূরা নিসার ৩৪ নং আয়াতের জের ধরে বলেন-“পুরুষ নারীর কর্তা”- তাই কর্তৃত্ব আমার। সেক্ষেত্রে বলবো- আল্লাহ ‘কর্তা’ কেনো বলেছেন তার জবাবও দিয়েছেন। কারণ- “তারা তাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে”। আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো-‘কর্তা’ শব্দের প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘দায়িত্বশীল’। তাই পুরুষদেরকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে, নারীদেরকে বুদ্ধিমত্তার সাথে সঠিক পথে পরিচালিত করতে হবে। কোনো কিছু বারণ করলে বা আদেশ দিলে তার কারণটাও বুঝিয়ে বলতে হবে- নিছক গর্ব কিংবা অহংকার করলে হবে না। এতে অপরপক্ষ আক্রমণাত্মক হয়ে যাবে। তাছাড়া স্ত্রীর পক্ষ থেকে আসা কোনো ভালো কথাও মেনে নিতে কার্পণ্য করা উচিত নয়। বরং হটকারিতা বা কার্পণ্য করলে যে জিনিসটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলো- আপনার একটা ভুল সিদ্ধান্তে আপনি অটল থাকলেন আর আপনার স্বভাবের কারণে পরবর্তিতে পরিবারের কোনো নারীর কাছ থেকে সঠিক কথা আশা করা যাবে না। সুতরাং ক্ষতিগ্রস্থ হলো কে? আপনি…
অপরদিকে, নারীদের মধ্যে দেখা যায়- “নিজের ইচ্ছা মতো খরচ করবো, কারো কথা শুনতে আমি বাধ্য নই”- এমন কিছু কথা (সব মেয়ে এক রকম না)। এতে অহংকারের পাশাপাশি অবাধ্যতাও কাজ করে। আল্লাহ মা-বাবার প্রতি অনুগত থাকতে বলেছেন সেই সাথে একজন স্ত্রীকে তার স্বামীর প্রতি অনুগত থাকতে বলেছেন। স্বামীর প্রতি নারীর এই আনুগত্য মূলত স্বামীর দায়িত্বশীলতার জন্য। কারণ একটা পুরুষ যখন পরিবারের আর্থিক ও মৌলিক চাহিদা পূরণ করছে সেক্ষেত্রে তার প্রতি আনুগত্য হওয়ার বিষয়টা আশাকরি কোনো স্ত্রীকে চাপ দিয়ে বুঝিয়ে দেয়ার প্রয়োজন হয় না।
এদিকে বর্তমান সমাজের স্বাধীনতার সংজ্ঞায় ভুল দেখি। স্বাধীনতা বলতে হাতে টাকা থেকে “যেমন খুশি তেমন খরচ করা বা আমি কারো কথা শুনতে বাধ্য নই” এটা নয়। ধরি মেয়ে/স্ত্রী একটা সিদ্ধান্ত নিলো যেটা প্রকৃতই তার জন্য সুখকর নয়- তো সেক্ষেত্রে বাবা/স্বামী যদি বারণ করে- তাহলে কি আমরা হটকারিতা দেখিয়ে তাদের অবাধ্য হয়ে যাবো নাকি তাদের কথা শুনবো? বর্তমান সমাজে কথা মেনে চলাটাকে পরাধীনতা হিসাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। তাই এরূপ ভুল বার্তার বিপরীতে আমাদের নারীদের সজাগ হওয়া উচিত। এদিকে নিজের টাকা (সেটা চাকরি করে আসুক বা স্বামী বা বাবার দিক থেকে আসুক)-নিজের ইচ্ছা মতো খরচ করার স্বাধীনতা নারীর আছে, তবে অপব্যয় না করে নিজের শখ পূরণ করে উন্নয়নমূলক কাজে খরচ করার সামর্থ ও সাহস থাকাই আর্থিক স্বাধীনতা বলে মনে করি।
বিষয়: বিবিধ
১০৬৮ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুন্দর চিন্তার নান্দনিক বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে আলোচ্য লেখনীতে!
সহনশীল ও সমযোতার মনোভাব প্রতিটা সম্পর্কের জন্যেই জরুরী উপাদান!
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে.......।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
মানে স্বামীর কথামত চলা (অবশ্যই তা শরিয়তের পরিপন্থী হবে না )।
বিয়ে শরিয়ত মোতাবেক করলেও , স্ত্রী হিসেবে প্রাপ্য শরিয়ত মোতাবেক পেলেও বা পাবার ওয়াদা থাকলেও স্ত্রীরা কি কখনও স্বামীর কথা মত চলে বা স্বামীর অনুগত হয়ে থাকে যেটা শরীয়তেই বলা আছে ? না কি স্বামীর উপর তার কথা ফলায় ?
শরীয়ত মোতাবেক সে পেতে আগ্রহী থাকলেও শরিয়ত মোতাবেক সে কি দিতে প্রস্তুত?
আর ভালো স্ত্রীরা স্বামী'র ভালো কাজে আগ্রহী ও সহায়ক হয়। তাদের অনুগত হয় :-)
মন্তব্য করতে লগইন করুন