বাস প্রতি পুলিশের চাদাবাজি...

লিখেছেন লিখেছেন FM97 ২৬ আগস্ট, ২০১৪, ০৫:০৫:৪৯ বিকাল

(বাসের ড্রাইভারকে) আমিঃ আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে?

(ড্রাইভার কিছুটা অবাক হলো-হয়ত ভাবছে এই মেয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্সের কথা বলে কেনো?)

পুনরায় আমিঃ না, আসলে ট্রাফিক পুলিশ দুই জায়গায় গাড়িটা থামিয়ে টাকা নিলো-তা আপনার মধ্যে কোনো ভুল আছে কিনা, যাচাই করছিলাম।

ড্রাইভারঃ লাইসেন্স থাকবে না ক্যান? আছে।

আমিঃ সাথে আছে?

ড্রাইভারঃ …… আমার সব কাগজ-পত্র ok.

ড্রাইভারের ঘুরিয়ে কথা বলা আর চেহারার মনোভাবে বুঝাই যাচ্ছিলো, উনার কাগজ পত্র সব ঠিক থাকলেও উনার সাথে ড্রাইভিং লাইসেন্স নাই। অধিকাংশ ড্রাইভারদেরই এই অবস্থা থাকে। তা, যাই হোক- সবার সামনে উনার দোষ প্রকাশ করলাম না।

জানি, ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকার কারণে পুলিশ টাকা খাচ্ছে না, যদিও নিয়ম অনুযায়ী- কে লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালাচ্ছে, কে দুই নাম্বারি মাল নিয়ে যাচ্ছে- ইত্যাদি বিষয় খতিয়ে দেখা ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব- তবুও ড্রাইভারের সাথে কথা বলার উদ্দেশ্য ছিলো-পুলিশের কারবার দেখে আমার প্রতিবাদ করতে ইচ্ছে হচ্ছিলো। তবুও পরক্ষণেই ভাবলাম- যার জন্য প্রতিবাদ করবো, তার মধ্যে কোনো গাফলতি আছে কিনা-সেটা যাচাই করি। তা যাই হোক-উনার মাথায় উনার অনিয়মটা ধরিয়ে দিয়ে হয়ত আমি কিছুটা সার্থক ।

এবার আসি পুলিশের খাওয়া-দাওয়া প্রসঙ্গে- আজিমপুর এবং নিলক্ষেত চৌরাস্তার নিয়ম (পড়ুন-অনিয়ম) হচ্ছে সেখান থেকে বাস অতিক্রম করলেই ট্রাফিক পুলিশ, ড্রাইভারকে হাত দিয়ে থামার চিহ্ন দেখাবে। আপনি সেটাকে ট্রাফিক সিগন্যাল মনে করলেও-সিগন্যালের পাশাপাশি পুলিশ মূলত ড্রাইভারকে টাকা দেয়ার ইশারা করছে। এমন সময় ড্রাইভার হেলপারকে বলবে-“ওই যা! ক্লিয়ার কইরা আয়”। দেখবেন হেলপার হাতের মুঠে ১০টাকা নিয়ে পুলিশের হাতে গুজে দিবে। এক্ষেত্রে হেলপার যদি এগিয়ে না আসে তখন দেখবেন খোদ পুলিশ গাড়ির গেটের সামনে ভিড়বে। মন না চাইলেও টাকা দেয়া লাগবে।

উল্লেখ্য, পুলিশ ১০টাকার চেয়ে কম নিবে না। সুতরাং নিলক্ষেত-আজিমপুরে বাস প্রতি ১০টাকা করে খাচ্ছে পুলিশ। তাছাড়া, যেহেতু বাসস্ট্যান্ড এলাকা তাই এ রাস্তায় প্রচুর বাসের ভীড় লেগেই থাকে। প্রত্যেক সিগন্যাল প্রতি কম করে হলেও তিন-চারটা বাস থামে। সুতরাং, হিসাব করে দেখুন কয় মিনিট পর পর ট্রাফিক সিগন্যাল পড়ে, এক ঘন্টায় কয়টা সিগন্যাল পড়ে, তেমনি ২৪ ঘন্টায় মোট সিগন্যালের সংখ্যা আর প্রত্যেক সিগন্যাল বাবদ একদিনেই দুর্নীতি করে একটা পুলিশ কত হাজার টাকা পকেটে ঢুকাচ্ছে।

তাছাড়া রাস্তা দিয়ে মালামাল নিয়ে যাওয়া যেনো আরেক বিপদ। অবৈধ মাল কিনা, কেউ ছিনতাই করে নিয়ে যাচ্ছে কিনা- সেটা যাচাই-বাছাই নয়- বরং আপনি মালামাল নিয়ে যাচ্ছে, এবার ট্রাফিক পুলিশকে খুশি(!) করে যেতে হবে। অতিষ্ঠ জন-জীবন! যা দেখে স্থির থাকা যায় না। যদিও হাস্যকর ব্যাপার হলো- পুলিশের অবস্থাও বোধ হয় আমাদের মতো। তারা অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় নিজের চাকরি রক্ষায়, আবার কখনো নিজেই অন্যায়ে ডুব দেয়। আর আমরা চোখের সামনে খোদ নিরাপত্তা কর্মীদের অন্যায় দেখে নিরবে সটকে পড়ি। ঝামেলায় জড়ানোর ভয়ে। আর এই ভয়ে কখনো বা নিজেই দূর্নীতিতে জড়িয়ে যাই।

তাই, আমি মনে করি- ভয় পেয়ে চুপ থাকাটা- মানবতা নয়, ভীরুতা। অন্যায় দেখা মাত্র শুধু অন্যায়কে ঘৃণা করলে সমাজে দূর্বলের ওপরই অত্যাচার হবে। তাই, সে দিনের অপেক্ষায় আছি- যেদিন পুলিশের হাত থেকে টাকা ছিনিয়ে নির্যাতিতের অধিকার ফিরিয়ে দেবো। পুলিশের সামনে তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করবো। আমাদের নিরবতা অন্যায়ের হাতকে লম্বা করে দিচ্ছে।

বিষয়: বিবিধ

১১৭১ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

258441
২৬ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:১১
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : ভাই প্রতিবাদ করতে গেলে যে আপনাকে জামাত শিবির বানিয়ে ছাড়বে।
২৬ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:২৩
202116
FM97 লিখেছেন : আরে দূর!
নামের আগে অহেতুক ট্যাগিং এর ভয়ে বসে থাকলে হয় না...
258456
২৬ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৯
আবু সাইফ লিখেছেন : ঈমান (পড়ুন মানুষ) মাপার মানদন্ড হলো অন্যায়ের প্রতিবাদ

এ কাজটা যিনি যতটা পারেন তিনি ততটাই ঈমানদার(মানুষ)
২৭ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৭
202520
FM97 লিখেছেন : চমৎকার বলেছেন!
258463
২৬ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০২
আজিম বিন মামুন লিখেছেন : সুন্দরের মাঝে অপ্রিয় সত্য নামক কঠিন একটি বিষয় তুলে ধরেছেন।
অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তব ঘৃণা তারে যেন তৃণ সম দহে
লাইনটি পুলিশ নামক প্রাণীদের,এবং আমাদের কিছু পাবলিকের ভাল করে মুখস্ত করতে হবে।
আসলে ইসলামী আইন প্রতিস্ষ্ঠিত না হলে অনেক সমস্যাই থেকে যাবে চিরকাল। ধন্যবাদ,শিক্ষামূলক পোষ্ট পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
২৭ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৮
202521
FM97 লিখেছেন : ইসলামী আঈন প্রতিষ্ঠার পথে কাজ করতে হবে যে...

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File