মোহরানা যখন- পাঁচ লাখ টাকা!

লিখেছেন লিখেছেন FM97 ২১ আগস্ট, ২০১৪, ০৬:১৭:২৩ সন্ধ্যা

মানুষ তার প্রিয়জনকে গিফট দেয় সন্তুষ্টচিত্তে সামর্থ্যের ভিত্তিতে। আবার অনেক সময় ভালোবাসা বেশি হলে নির্ধারিত বাজেটের একটু বেশি দিতেও আনীহা হয় না। তবে এই গিফট দেয়ার ক্ষেত্রে যদি মানসিকভাবে একটা চাপ কাজ করে, দর কষাকষি হয় তখন সন্তুষ্টি কিংবা ভালোবাসার পরিমাণ কমে যায়। আর আমাদের সমাজে একটা মূল্যবান উপহার তথা মোহরানা দিতে ঠিক এমনটাই হচ্ছে। যে মোহরানা পাওয়াটা স্ত্রীর অধিকার, যা আদায় না হলে স্বামী একজন জিনাকারী হিসাবে সাব্যস্ত হয়, যেটা স্ত্রীর প্রতি স্বামীর তরফ থেকে উপহারস্বরূপ অথচ বর্তমান সমাজের অহেতুক রীতিনীতির যাতেকলে- এই উপহার দেয়ায় স্বামীর সন্তুষ্টি কিংবা ভালোবাসা কাজ করছে না। বরং লাখ লাখ টাকা মোহরানা নির্ধারণের পরবর্তী বিরূপ প্রতিক্রিয়ার শিকার হচ্ছে ছেলে-মেয়ে উভয়ই। আর সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হচ্ছে এই ব্যাপারটা না আমরা (ছেলে-মেয়েরা) বুঝতে পারছি আর না আমাদের মুরুব্বিরা উপলব্ধি করে আমাদের বুঝাচ্ছেন।

একটা বাস্তব উদাহরণ দিয়েই বলি- আমাদের পাশের বাড়ির পরিবারটি অস্বচ্ছল। পরিবারের ছেলেটা ছোট-খাট একটা চাকরি করে। মা’কে নিয়ে ছোট একটা ঘরে থাকে। সম্প্রতি সে বিয়ে করেছে পাঁচ লাখ টাকা মোহরানা দিয়ে। যদিও ছেলেটার সামর্থ্য নেই এতো টাকা দেয়ার। তাই, হাসবো না কাঁদবো বুঝতে পারছি না। লোক দেখানো মোহরানা রাখার মানে কি? আর এই পাঁচ লাখ টাকা-যেটা এখন তার স্ত্রীর অধিকার হয়ে গেছে এটা যদি না দেয়া হয় তাহলে এই ছেলেটা কি জানে পরকালে তাকে কি হিসাবে দাঁড় করানো হবে? কিন্ত প্রতিনিয়ত বিয়ে নামক পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়েও ছেলেরা জিনাকারী আর মেয়েরা অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে। সুতরাং, স্বাভাবিক প্রশ্ন- এর জন্য কে বা কারা দায়ী? একটু বিশ্লেষণ করে বললে, আমাদের সমাজে- ছেলে দিতে পারবে কি পারবে না সেটা বিবেচনা না করেই সচরাচর তিনটি কারণে মেয়েপক্ষ উচ্চ মোহরানা ধার্য করে।

১/ লোক দেখানো মানসিকতা।

২/ তালাকের পরে আর্থিক লাভ।

৩/ সুযোগের সৎ(!!) ব্যবহার।

ব্যাখ্যাঃ ১/ মানুষ যখন জিজ্ঞাস করবে আপনার মেয়ের মোহরানা কতো? তখন যাতে গর্ব করে বলা যায় (খুব বড় ফ্যামিলিতে বিয়ে দিয়েছি!) তাই মেয়ের অভিভাবক পাঁচ লাখ কিংবা তাঁর বেশী মোহরানা ধার্য করে। তার মেয়ে পাবে কিনা কিংবা ছেলেটি দিতে পারবে কিনা সেটা নিয়ে অভিভাবকের কোনো ভাবনা নেই। সবার সামনে গর্ব নিয়ে বলতে পারবে এটাই যেনো তাদের প্রাপ্তি। অথচ -একটা ছেলে (ধরুন) ২৮/৩০ বছর বয়সে কত টাকার চাকরি করে? আর কত টাকাই বা সে সঞ্চয় করতে পারে? বৈধ পন্থায় উপার্জনক্ষম এই বয়সী একটা ছেলে কি ৫ লাখ টাকা কাউকে উপহার দেয়ার আদৌ সামর্থ্য রাখে? আর না মেয়ের বাবার যখন ২৮/৩০ বছর বয়স ছিলো তখন উনার সামর্থ্য ছিলো। তাই বাস্তবতা জেনেও শুধুমাত্র লোক দেখানোর জন্য উচ্চ মোহরানা রাখার কি কোনো অর্থ হয়? যেখানে তার মেয়ে সেই টাকাটা পেতে পারছে না?

২/ অনেক মুরুব্বিরা মেয়েপক্ষকে বুদ্ধি দেয়- “মোহরানা বেশি রাখ, পরবর্তীতে যদি বনিবনা না হয় এবং তালাক হয়ে যায়-তাহলেও মোটা অঙ্কের টাকা আসবে”। প্রথমত তারা এটা ধরেই নিচ্ছেন (ভিন্ন ভাবে বলতে- তারা এত বেশি টাকা ধার্য রাখছেন) যে- ছেলেটা যে একবারে দিতে পারবে না- সেটা তারা জানেন। অপরদিকে বিয়ের আগে কখনো তালাকের লোভ(!) দেখানো উচিত নয়। কারণ, তালাক এমন একটা জিনিস যেটা আল্লাহ’র কাছে বৈধ তবে অপছন্দনীয়। ইসলামে বিয়েকে সহজ ও তালাককে করা হয়েছে কঠিন। নির্দিষ্ট সময়সীমা, শারিরিক ও মানসিক প্রেক্ষাপট, পরিস্থিতি ইত্যাদি দিয়ে তালাককে জটিল করা হয়েছে যাতে মানুষ বেপরোয়া না হয়ে পড়ে। ধরুন, বিয়ের পরে একটা মানুষের (ছেলে কি মেয়ে) কোনো একটা জিনিস খারাপ লাগলো। কিন্তু এমনও হতে পারে তার অন্যান্য দিকগুলো উপকারী। যেমনটি সূরা নিসার ১৯ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন- “নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন করো। অতঃপর যদি তাদেরকে অপছন্দ করো,তবে হয়ত তোমরা এমন এক জিনিসকে অপছন্দ করছো,যাতে আল্লাহ,অনেক কল্যাণ রেখেছেন”। সুতরাং সে বিষয়ে পারষ্পারিক সমঝোতা করে নিলেই হয়। তবে, দোষটা যদি এমনই হয় যে, সহ্য করার মতো নয় এবং শত সালিশ বিচার করেও কোনো লাভ হচ্ছে না, তখনই তালাক। সুতরাং, আমরা দেখতে পাচ্ছি- পারষ্পারিক মিল না হলে আর একসাথে থাকা সম্ভব না হলে বিয়ে ভেঙ্গে ফেলার একটা বৈধ উপায় তালাক। এবার যেখানে মনের মিল নেই, সেখানে কি আমরা ধরে রেখেছি যে, স্বামী স্ত্রী শুধুমাত্র অপরিশোধিত তালাকের টাকার জন্য এক হয়ে থাকবে? বরং দেখা যায়-সমাজে অহরহ তালাক হয়ে যাচ্ছে, নারী তার অধিকার পাচ্ছে না। এও দেখা যায়- স্বামী পরকিয়ায় জড়িত হয়ে প্রথম স্ত্রীকে এমনি ফেলে চলে যাচ্ছে। না জানিয়ে গোপনে আরেকটা বিয়ে করছে। প্রথম স্ত্রীর মোহরানা তো আদায় হয়ই নি, বরং দ্বিতীয় স্ত্রীটার বেলায়ও ঠিক তেমনই হচ্ছে। সুতরাং, মোহরানা বেশি রেখে তালাক পরবর্তী বিষয়ের কথা চিন্তা করা বোকামী। বরং প্রত্যেকটা পন্থা সহজ করলে ভালোটা নিতে যেমন সহজ হবে, তেমনি খারাপ কিছু ছাড়তেও সহজ হবে। অধিকারও আদায় হবে। অপরদিকে তালাকের প্রসঙ্গ যেহেতু উঠেছে তাই একটু বলতে- নারীদের প্রতি ইসলামের মহত্ব দেখুন- বিবাহিত থাকা অবস্থায় স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে যা দেয়া হয়েছে, তালাকের পর সেটা ফিরিয়ে না নেয়ার কথা বলা হয়েছে। “বিদায় দেয়ার সময় এরূপ করা তোমাদের পক্ষে জায়েজ নয় যে, তোমরা যা কিছুই তাদেরকে দিয়েছো, তা থেকে কোনো কিছু ফিরিয়ে নিবে” (সূরা বাক্বারা, আয়াত-২২৯)। যাতে, কোনো অপমান কিংবা ছোটোলোকি স্বভাব যাতে ছেলেরা না করে বরং সসম্মানে স্ত্রীকে বিদায় দেয়। কত সুন্দর আচরণ!

৩/ এদিকে মোহরানা আদায়ের ব্যাপারে তৃতীয় যে বিষয়টি দেখা হয়, তাহল- সুযোগের সৎ(!!) ব্যবহার। মেয়েকে বলা হয়- “যা নেয়ার এখনই নিয়ে নে, পরে এত টাকা একসাথে পাওয়া যাবে না”। এমন মানসিকতা মেয়ের ব্রেনে ঢুকানোর পিছনে কারণ? এটা কি ধরেই নেয়া হচ্ছে যে ছেলেটা বিয়ের পর আর্থিক দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করতে পারবে না। কিংবা মেয়ে কিছু চাইলে সেটা দেয়া হবে না? সুতরাং এমন মানসিকতার পরিবর্তন হবে কি?

আরেকটা মজার বিষয় লক্ষ্য করে দেখুন- বিয়ের কথা ঠিক হওয়ার সাথে সাথে মেয়েপক্ষ যেমন উচ্চ মোহরানা ধার্য করছে তেমনি (ছেলের খরচ বাবদ, যৌতুকের টাকা না নয় বাদই দিলাম) ছেলেপক্ষও লাখের অধিক টাকা ধার্য করছে। ছেলেপক্ষ থেকে বলা হয়- “আমাদের ছেলেকে কাপড় বাবদ (ধরুন) তিন লাখ টাকা দিতে হবে”। কি অদ্ভুদ খেলা! এ যেনো টাকার হাত-বদল! এবার সহজ অঙ্ক কষে দেখা যাক। ছেলে কিংবা মেয়েপক্ষ- কে কত টাকা পায়! ধরুন মেয়েপক্ষ মোহরানা বাবদ পাঁচ লাখ আর ছেলেপক্ষ তিন লাখ টাকা দাবি করলো। এখানে একটা কথা বলে রাখি- ছেলেরা যে টাকা দাবি করে সেটা বিয়ের আগেই তাদের দিতে হয় (বা ছেলেপক্ষের ভাষায়- ‘দিতে হবে’, যদিও এটা এই সমাজের বানানো নিয়ম, এটা কোনো ধর্মীয় নির্দেশনা নয়)। অপরদিকে মোহরানা বিয়ের আগে পুরোটা দিয়ে দেয়া উত্তম হলেও (কোনো কোনো ইসলামিক বিশেষজ্ঞদের মতে কিছু অংশ বিয়ের আগে দিয়ে, বিয়ের পরে আস্তে আস্তেও পরিশোধ করা যায়- হয়ত বিয়ে সহজিকরণ নীতিতে তারা এই মত দিয়েছেন)- দেখা যায় ছেলেকে তিন লাখ টাকা দেয়ার পর তাদের হাতে তিন লাখ টাকা আসে। এবার যেহেতু মেয়েপক্ষ পাঁচ লাখের দাবি করেছে-তাই ছেলেপক্ষ ভাবে তাদের টাকার দুই লাখ এখন দিয়ে দেই, বিয়েটা করে নিই, পরে তিন লাখ দেয়া যাবে। তবে, ‘দেয়া যাবে’- বলে এই টাকাটা দেয়া হয় না। কারণ প্রকৃতপক্ষে তিন লাখ কোনো কম অঙ্কের টাকা নয়। বিয়ের আগে হাতে নাতে তিন লাখ ক্যাশ পাওয়ায় ছেলেপক্ষদের তা থেকে দুই লাখ দিতে কষ্ট হয় না। কিন্তু বাকি তিন লাখের ঠেলা বিয়ের পরে বুঝা যায়। তখন অনেক সময় মেয়েকে বাকি মোহরানা মাফ করে দিতে বলা হয় কিংবা ছেলেকে কষ্ট করে টাকা সঞ্চয় করে আস্তে আস্তে দিতে হয়। যত দিন না সেই টাকা পরিশোধ হবে।

এবার আরেকটা বিষয় যেটা বিশ্লেষণ করার দাবি রাখে তাহল- সমাজে শৃংখলা বজায় রাখতে ও বিয়েকে সহজ করতে ইসলামে মোহরানা হিসাবে মেয়েকে ‘ক্বুরআনের একটি আয়াত উপহার হিসাবে দেয়ারও কথা বলা হয়েছে। আমরা (ছেলে কিংবা মেয়েরা) বুঝতে পারি এই কথাটার মর্ম কি? আর যেসব মানুষ এটার মর্ম বুঝে আমরা কি আদৌ তাদের সেভাবে মূল্যায়ন করছি? ক্বুরআনের একটা আয়াত দেয়ার অর্থ কি? আয়াতটা গড় গড় করে মেয়ের সামনে পড়ে শুনানো? নাকি নিজে একজন ‘ক্বুরআনে হিফজ এটা প্রকাশ করা? নাকি সঠিক উচ্চারণ তথা তাজবিদ সহকারে নিজের তেলাওয়াত প্র্যাকটিস করা? নাকি সেই আয়াতের অর্থ, তাৎপর্য, প্রয়োগ, প্রভাব, উপলব্ধি, জীবন-সমাজ কিংবা রাষ্ট্রে সেই আয়াতের গুরুত্ব -ইত্যাদি বুঝিয়ে দেয়া? কোনটা? আমার মনে হয় শেষের কথাটাই সঠিক। কারণ সেই ভাবে একটা আয়াত যদি মানুষের সামনে তুলে ধরা হয়, তেমন বিশ্লেষণ করা হয়- যাতে অপর ব্যক্তিটি উপলব্ধি করে নিজের জীবনে প্রয়োগ করে চিরস্থায়ী সফলতা পেতে পারে (হিদায়াত দেয়ার মালিক আল্লাহ, আমরা চেষ্টা করতে পারি)- তাহলে সেটার চেয়ে দামি উপহার আর দ্বিতীয়টি হতে পারে না। তবে অনেক কম মানুষই সেভাবে ‘ক্বুরআন পড়ে (কারণ, এখানে জ্ঞানের মূল্য নেই তাই জ্ঞানী জন্মায় না) আর অনেক মেয়ের মানসিকতা তেমন নয় যারা জ্ঞানী ছেলে খুঁজবে (কারণ, পরিবার থেকেই তাদের তেমন বুঝ দেয়া হয় না) কিংবা পরিবার নিজেই তাদের মেয়ের জন্য তেমন ছেলে খুঁজে না। সমাজের বাস্তবতা হলো- ছেলে চায় পরী, মেয়ে চায় হিরো। সেই সাথে ধনী পরিবারের মূল্যায়ন বেশি। যেনো বিয়ে নয়, বরং আর্থিক লেনদেন, টাকার হাত-বদল।

সুতরাং, মানসিকতার পরিবর্তন না হলে সমাজ পরিবর্তন হওয়ার নয়। বিয়ের আগে কত টাকা মোহরানা নেয়া যায় সেটার প্রতিযোগীতা না করে- যার সাথে বিয়ে হচ্ছে তার সামর্থ্যের কথা মাথায় রেখে মোহরানা ধার্য করা উত্তম। এতে ছেলেটা সহজে ও সন্তুষ্টচিত্তে যেমন দিতে পারবে মেয়েটিও তার অধিকার সহজে নিতে পারবে। অতঃপর একটা হাদিস উল্লেখ করেই লেখাটি শেষ করছি -“তোমরা সহজ করো, কঠিন করো না”।

বিষয়: বিবিধ

৩৭৪২ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

256808
২১ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২০
বুড়া মিয়া লিখেছেন : এটাই বাস্তবতার ‘রেডিও FM97’ খুব ভালো লেখা হয়েছে।

বের হওয়ার উপায় আছে কি না জানি না, বিয়া করতে চাইলেও বউ এর ১৪ গুষ্টি আগে খবর লয়, টাকা আছে কি-না!
২১ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৭
200453
FM97 লিখেছেন : তা আর বলতে! বিয়ের বাজারে ধনী পরিবারের জয়জয়াকার! তবে শুধু ছেলে নয়-বরং মেয়েদের পরিবারটিও ধনী কিনা, সেটাও দেখা হয়- এটাকে দুই ভাবে ব্যাখ্যা করা যায়- ১/ ছেলেপক্ষের ধারণা- "মেয়ের পরিবার ধনী হলে সেই পরিবারে অত করা লাগবে না, গরিব হলে দেখা যাবে তারা আমার ছেলের ইনকামের ওপর নজর দিবে'।
২/ এমন কিছু স্বয়ং ছেলেদেরই দেখা যাচ্ছে- যারা ধনী পরিবারের মেয়ে খুঁজে যাতে মেয়ের বাপের কাছ থেকে মাসিক ভিত্তিতে (স্বেচ্ছায় দিলে সেটা আলাদা কথা তবে, মেয়ের জন্য) টাকা পাওয়া যায়। এতে ছেলের যাতে সুবিধা হয়...। এখানে যে জিনিসটা আপত্তিকর তাহল- একটা ছেলের এটা আত্মমর্যাদায় লাগার কথা যে- বিয়ের পরে সে স্ত্রীর খরচ দিচ্ছে না, বরং বউকে তার বাড়ি থেকে আনার কথা বলছে।

মানসিকতার পরিবর্তন কাম্য। ধনী না দেখে নৈতিকতা দেখা উচিত। "মনে শান্তি থাকলে রিকশায়ও ভালো লাগে, আর শান্তি না থাকলে এসি গাড়িতেও খারাপ লাগে"।
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:১০
200513
বুড়া মিয়া লিখেছেন : আরেকটা বিষয় বাদ পড়েছে – অনেক মেয়েদের বাবা-মা এসেও আবার ছেলের কাছে দাবী করে, ছেলে তাদের কি দিলো? আর তাদের মেয়েরা আবার খরচ বলতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত রং-ঢং আর বিলাসিতার খরচকেই বুঝে থাকে – সেটা ছেলে না দিলে অত্যন্ত আশ্চার্যান্বিত হয় এই ভেবে যে – এ যুগে আমাকে মার্কেটে মার্কেটে ডেইলী ঘুরার খরচ দিবে না?
২২ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০৩:৩৭
200768
FM97 লিখেছেন : বিষয়টি তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।
একটা ভালো স্ত্রী কখনো তার স্বামীর জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়ায় না। স্ত্রীর বুঝা উচিত স্বামীর ইনকাম কতো। সেটা বুঝে চলা বুদ্ধিমানের কাজ।
খরচের মধ্যে একটা হলো মৌলিক খরচ তথা ভরণ-পোষণ-যেটা স্বামী করতে বাধ্য, আরেকটা হচ্ছে স্ত্রীর একান্ত শখ- যেটা স্বামী চাইলে পূরণ করলে ভালো তবে অনেক ক্ষেত্রে এটা নিয়েই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগে যায়। যেমন- কিছু মেয়ের মাসে কয়েকটা ড্রেস না বানালে হয় না, নতুন যে ডিজাইন বের হয়েছে সেটা কিনতেই হবে, অনেকের শখ তার আপনজনদের প্রায়ই গিফট দেয়া, মাসে মাসে বিউটি পার্লারে যাওয়া-ইত্যাকার মানুষের শখের কমতি নেই। সে ক্ষেত্রে স্বামীর সামর্থ ও দেয়ার ইচ্ছা থাকলে সমস্যা নেই, তবে অনেক স্বামীর এই শখ পূরণের সামর্থ থাকে না। তবে স্ত্রীর চাহিদা থাকে। সেক্ষেত্রে আমি বলবো- মেয়েদের উচিত হাত খরচ থেকে টাকা জমিয়ে কিংবা মোহরানার টাকা কোনো ব্যবসায় লাগিয়ে সেখান থেকে যে টাকা আসে- তা ব্যবহার করা।
২২ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:০৭
200772
বুড়া মিয়া লিখেছেন : মনে হচ্ছে আপনি মেয়ে মানুষ! এবং আধুনিক স্বাধীনতাকামী-মেয়েদের মতোই। অনেকেরই পছন্দ এ-ধরণের মেয়েদের!
২২ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:১৩
200775
FM97 লিখেছেন : আধুনিক স্বাধীনতাকামী বলতে কি বুঝালেন Tongue
২২ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:২০
200780
বুড়া মিয়া লিখেছেন : অবস্থা-অবস্থান-পারিপার্শ্বিকতা বিচার না করে নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেয়া এবং সেটা আদায়ের লক্ষ্যে প্রয়োজনে অবস্থা-অবস্থান-পারিপার্শ্বিকতাকে অস্বীকার করে ইচ্ছা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাওয়া!
২২ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:২৭
200782
FM97 লিখেছেন : বিষয়টা বুঝিয়ে বললে ভালো হয়। অসঙ্গতি কোথায়?
২২ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:৪১
200785
বুড়া মিয়া লিখেছেন : মুসলিম ছেলে-মেয়েদের বিয়ে হয় কিছু টার্মস এ্যান্ড কন্ডিশনের ভিত্তিতে, যেখানে ছেলে মেয়ে কবুল বলার আগে সে বিষয়ে কাজী স্পষ্ট করে বলে দেয় সেসব বিষয়, এটা প্রকাশ্যের স্বাক্ষীদের সামনে মেনে নিয়ে কবুল বলে এবং বর্তমানে সেটা রেকর্ড করার জন্য রেজিষ্টারে স্বাক্ষর করে থাকে ছেলে এবং মেয়েঃ

সেখানকার কন্ডিশান – ছেলে মেয়েকে ভরন-পোষন দিবে, এবং এটা বলতে বোঝায় অবস্থা ও অবস্থানের প্রেক্ষিতে তাকে খাবার, বাসস্থান, কাপড় ও চিকিৎসা। ছেলে মেয়ে এগুলো বুঝে জেনেই কবুল বলে এবং স্বাক্ষর করে আধুনিক নিয়মানুযায়ী। এবং সেখানে স্পষ্ট করে বলে এবং রেকর্ড রাখা হয় এ বিয়ে হচ্ছে ইসলামী শরীয়্যত মোতাবেক।

এবার বলুন ইসলামী শরীয়্যতের কথা মেনে এবং খাবার, বাসস্থান, কাপড় ও চিকিৎসার খরচে রাজী হয়ে বিয়ে বসে কেন – ইসলামের শরীয়্যতের কথা বললে তার স্বাধীনতায় সতক্ষেপ হয়? এবং কেন ঐ খরচের খাত ছাড়া অন্য খাতের খরচ দাবী করে? কেন স্বামী না চাইলেও (ভরন-পোষন দেয়ার পরও) মোহরের টাকা নিয়ে বাইরে ব্যবসা করতে যাবে? সে কি এগুলো জেনে বিয়ের কন্ট্রাক্ট করে নাই? এরকম কন্ট্রাক্টে সাইন করার পর এরকম করাতো ভন্ডামী-কার্য্যক্রম (ফ্রডুল্যান্ট-এক্টিভিটিস) যে শরীয়্যত মোতাবেক সে বিয়ে বসেছে এরকম ভন্ডামীর জন্য সে মোহরের টাকাও পেতে পারে না, সে স্বাধীনতা চাইলে মোহরের টাকা ফেরত দিয়ে স্বামীকে ছেড়ে (খোলা করা, মেয়েদের পক্ষ থেকে ডিভোর্স) চলে যাবে। মেয়েগুলো কি তা করে? এরকম ভন্ডামী করে উল্টা আরও মামলা করে কোর্ট থেকে মোহর আদায় এর অর্ডার নিয়ে আসে।

এগুলো কি অসঙ্গতি না?
২২ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:০৮
200792
FM97 লিখেছেন : বুঝেছি, আপনি মেয়েদের জব কিংবা ব্যবসা করার কথা বলছেন। আর এটা করাটা আপনি শরীয়াতসম্মত মনে করছেন না।
আসলে, বিয়ের আগে এটা স্বামীর জানিয়ে দেয়া জরুরী মনে করি যে- //তোমাকে চাকরি করতে হবে না। আমার যা আছে সেটাতেই সন্তুষ্ট থেকো"//
সেক্ষেত্রে মেয়েটা রাজি হলে তো ভালো, তবে রাজি না হলে তাকে বিয়ে না করলেই হয়। যেটা আপনার কাছে অসহ্যনীয় সেটা করতে যাবেন কেনো?
তবে যদি শরীয়াতের কথা আসে- তাহলে বলবো, মেয়েরা চাকরি/ব্যবসা করতে পারবে না"-এটা কোথাও বলা নেই। হ্যা, আল্লাহ নারীকে এই আর্থিক কষ্ট থেকে বাঁচিয়েছেন- এটা নারী বুঝলেই হলো।
চাকরি করা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে মত আছে, এই বিষয়ে আগেও লিখেছি, তবে ইনশাআল্লাহ আরো বিস্তারিতভাবে লিখবো।
আর মোহরানার বিষয়ে, সেই টাকা দিয়ে ব্যবসায় খাটানোর কথা যেখানে বলেছি- এ কাজে স্বয়ং স্বামীই যদি হেল্প করে তথা ব্যবসার তদারকি করে, তাহলে তো স্ত্রীর জন্যই সুবিধা। বাসায় বসে বসেই হাত-খরচের টাকা পাবে :-) যেটা দিয়ে সে সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে ডোনেট করতে পারবে।
২২ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:১৯
200798
বুড়া মিয়া লিখেছেন : শরীয়তে স্বামী-স্ত্রী ব্যাপারে কি আছে, জানলেই পাবেন – সেখানে স্বামীর অনুগত থাকা কার দায়িত্ব। স্বামী ঐরকম যুক্তিসঙ্গত নিষেধ করলে সেটা শাওরীয়্যত অনুযায়ী মান্য কি না তাও জেনে নিয়েন!

অধিকাংশ ছেলেরাই জিজ্ঞেস করে নেয় এসব এখন আর মেয়েরা বিয়ের আগে বলে আমি সবকথা শুনবো জব এর কথা না করলে সেটাও স্বীকার করে এছাড়াও আর অনেক কিছু! কিন্তু ধীরে ধীরে তাদের ছলনাময়ীরূপ প্রকাশ পায় ...

শরীয়ত ভুল বলে-নিঃ নারীদের ছলনা ভয়ংকর!
২২ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:৪২
200810
FM97 লিখেছেন : যাই হোক, আপনি হয়ত ঝগড়া করতে উদ্যত। তাই আক্রমণের সুরে কথা বলছেন। পুরুষদের নিয়েও বাস্তবতা বিবেচনায় অনেক কথা বলা যায়- তবে আমি কি তেমন ভাবে আক্রমণ করে বলেছি? যাই হোক।

হ্যা, স্বামী নিষেধ করলে তার অনুগত হতে হবে। এটা নেক্কার স্ত্রীর বৈশিষ্ট। তবে স্বামীর উচিত তার স্ত্রীকে ভালো উপদেশ দেয়া, ভালো পথ দেখানো, তার অবসর সময় যাতে ভালোভাবে কাটে সেটার ব্যবস্থা করা।
শরীয়াত নারীদের ছলনাময়ী বলে- বলে জানা নেই, তবে এই সমাজ নারীদের অনেক সময় ফিতনা, ছলনাময়ী, জাহান্নামী-ইত্যাদি ইত্যাদি বলে। যাই হোক, প্রকৃত ছলনাময়ী নারীদের থেকে সাবধানে থাকুন।
২২ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:৫০
200814
বুড়া মিয়া লিখেছেন : যুক্তি-তর্ক মানেই ভদ্রভাবে ঝগড়া করা, ঝগড়া আপনার অপছন্দ বলে মনে হচ্ছে; থাক এভাবেই, ধন্যবাদ।
256815
২১ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয়ে মনোযোগ আকর্ষন করেছেন। আমাদের দেশে এখন মোহরানা কে অনেকে ব্যবসা বানিয়ে ফেলেছেন। সামর্থের বাইরে মোহরনা ধরাকে মনে করেন কৃতিত্ব। এর অবসান হওয়া জরুরি।
২১ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩৬
200445
FM97 লিখেছেন : যথার্থ বলেছেন!
256817
২১ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩২
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : আপু ওনেক দিন পর যে? Love Struck Love Struck Love Struck Big Grin Big Grin
২১ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩৭
200446
FM97 লিখেছেন : এই তো আর কি...
তা, ভাইজানের কি খবর?
256847
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৮:২৪
মাহফুজ আহমেদ লিখেছেন : MOney Eyesখুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় আলোচনা করেছেন ।গেল ২মাস আগে আমার এক বন্ধু ২৫লক্ষ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেছে!!
২২ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০৩:২৩
200763
FM97 লিখেছেন : Surprised অবিশ্বাস্য!!Surprised
256851
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৮:৩৯
মোস্তাফিজুর রহমান লিখেছেন : মোহর নির্ধারনে বেশি কাজ করে লোকদেখানো ভাব ও তালাক হলে মেয়ের প্রাপ্য। অথচ যারা মোহর নির্ধারণ করে তারাই সমাজে তালাক পরবর্তী ঝামেলা/লেনদেন সম্পাদন করে কিন্তু কোন তালাকে কাবিন নামা নিয়ে মোহর আদায় করার রেকর্ড অন্তন আমার জানা নেই। দ্বিতীয় যদি তালাক পরবর্তী আর্থিক সুবিধার কথা বিবেচনা করে মোহর নির্ধারণ করা হয় তাহলে এটা মোহর হবে নাকি জরিমানা তাও বিবেচনার দাবী রাখে।
256975
২২ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৬:২০
কাহাফ লিখেছেন : এব্যাপারে জানা/বুঝ থাকলেও পারিপার্শিকতার কারণে অনেক কিছু করা যায় না। বিষয়টা সমাজে মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়ছে।সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া এর রোধ করা যাবে না। সময়োপযোগী পোস্টের জন্যে ধন্যবাদ ।
২২ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০৩:২৬
200765
FM97 লিখেছেন : পারিপার্শিকতার পরিবর্তনের জন্য সংগ্রাম শুরু হোক। নিজ থেকে, নিজের পরিবার থেকে এমন মহামারী রোগের প্রাদূর্ভাব দূর করতে হবে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File