প্রথম সাক্ষাতের ভুল
লিখেছেন লিখেছেন FM97 ০৭ এপ্রিল, ২০১৪, ০৫:১৫:৩৬ বিকাল
love marriage এর কথা না হয় বাদই দেই। মানুষ তো দেখছি Arrange marriage এও ভুল করে। দোষটা হলো অজ্ঞতা কিংবা অবিচক্ষণতার। জীবন সম্পর্কে উদাসীনতা কিংবা উদ্দেশ্যহীনতার।
প্রথম ভুলটা হয় question~ answer session এ- ছেলেপক্ষ বা মেয়েপক্ষ যখন মেয়ে/ছেলেকে দেখতে যাসে-তখন দেখি একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন বাদ দিয়ে (যেটাতে মূলত pass marks আসা বড়ই কঠিন ) just formality স্বরূপ less important প্রশ্ন করা শুরু করে দেন (যেগুলোতে A+ এমনিতেই চলে আসে)। যেমনঃ কোথায় পড়ো/পড়ছো? রান্না পারো?-ইত্যাদি। তবে আমি মনে করি- এসব প্রশ্নকে side line এ রেখে ছেলে/মেয়ের মানসিকতা বুঝার জন্য মূলত প্রশ্ন করা উচিত- ‘তুমি কেমন জীবনসঙ্গী কামনা করো’? কারণ এই প্রশ্নের উত্তর পেয়েই অপরপক্ষের ধ্যান-ধারণা আর সেই ভিত্তিতে নিজের সক্ষমতা/অক্ষমতা বিচার করা যায়। তথা গ্রিন সিগন্যাল/রেড সিগন্যাল দেয়া যায়।
এদিকে দুঃখের বিষয় হলো অধিকাংশ মেয়েরা এই প্রশ্ন নিয়ে ভাবে না, কিংবা বলার সুযোগ পায় না। যদিও আমি মনে করি- মেয়েদেরকে একটু বেশি এই বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত। কারণ- তাকে বিয়ের পর একটা নতুন পরিবেশের সাথে খাপ খেয়ে চলতে হয়- তো সেক্ষেত্রে যার সাথে তার বিয়ে হলো সেই যদি তাকে না বুঝে, তখন-পুরোপুরি ফাঁদে পরে যাওয়ার অবস্থা হয়ে যায়। আমি প্রায়ই দেখি বিয়ের পরে অধিকাংশের মুখ থাকে বেজার। তারা অবিবাহিত ফ্রেন্ডদের বলে বেড়ায়-“বিয়ে করো নাই, ভালোই করসো। বিয়ের পরে ঠেলা বুঝবা”। এদিকে বিয়ের পরে গড়ে হয়ত ১০০ জনে মাত্র ১ জন হবে যে বলে- আমি সুখী। “যেমন চেয়েছিলাম তেমন পাই নি, মনের মিল নাই, বিয়ের আগেই ভালো ছিলাম, লাইফটা শেষ হয়ে গেলো”-ইত্যাদি অভিযোগ। তাই বলতে, বিয়ের আগে প্রথম দেখায় ভুল না করে প্রশ্নটির উত্তর নিয়ে ভাবুন- এর ফলে আপনি খোদ নিজেকেই আরো ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন।
এবার কেউ যদি এক রাশ হাসি দিয়ে বলেন-‘এসব নিয়ে আবার ভাবার কি আছে’? কিংবা ‘জানিনা……আসলে চিন্তাই করি নাই’। তাহলে বলবো- আপনি নিশ্চয়ই সদ্যভূমিষ্ট শিশু নন, আপনি বিয়ে করতে এসেছেন আর আপনার পছন্দের লেবেল ঠিকই করতে পারেন নি? আপনার লাইফ স্ট্যাইলের সাথে সেই মানুষটা খাপ খাইতে পারবে কিনা তাও বুঝেন নি? তাহলে তো বলবো- আপনি বিয়ের উদ্দেশ্য, এর পরবর্তী জীবন কিভাবে সেট করবেন- এসব নিয়ে ভাবেন নি। আপনি ধরে রেখেছেন এটা একটা সামাজিক রীতি, যেটার ওপর ধর্মীয় গুরুত্বারোপ আছে-কিন্তু কেনো আছে সেটা আপনার অজানা কিংবা আপনাকে জানানো হয় নি। সুতরাং এখন যখন উত্তরপত্র রেডি করতে বসলেনই, তাহলে বলি- আপনার শর্ত হতেই পারে- গুড লুকিং, স্মার্ট (যদিও স্মার্টনেসের সংজ্ঞা বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন রকম, লেখার আলোচ্য বিষয় সেটা না হওয়ায় বর্ণনা করা হলো না) তবে বাহ্যিক এই শর্তটাই যদি প্রধান রেখে, সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে ভিতরটা বিচার করলেন না, তাহলে বিয়ের পরে আসলেই “লাইফটা শেষ হয়ে যাবে”! ধ্যান-ধারণার মিল না হলে তখন কেউ কারো সৌন্দর্য ধুয়ে পানি খাবে না, তাই আমাদের আগেই সচেতন হওয়া উচিত।
জানি, এতো সচেতনতার কথা শুনে অনেকেই হয়ত বলবে- দূর!, এসব আসলে কিছুই না, ভাগ্যে যার সাথে জোড়া আছে-সেটা হবেই। হ্যা, ভাগ্যে যা আছে, যার সাথে আছে- সেটা তো হবেই তবে ভাগ্যের দোহাই দিয়ে চেষ্টা বন্ধ রাখার কথা কি আল্লাহ বলেছেন? বরং তিনি বলেছেন- যে জাতি ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করে না, আল্লাহ তার ভাগ্য পরিবর্তন করেন না” (সূরা রা’দ, আয়াত:১১)। আচ্ছা, আমরা কি ধরে নিয়েছি যে এ যুগে মুখ ‘হা’ করবো আর মান-সালওয়া নাযিল হবে? যেমনটি মুসা আঃ এর যুগে বানী ইসরাঈলের জন্য হয়েছিলো? তাই বৈধ উপায়ে চেষ্টা করতে দোষ কই?
হুম, এখানে অবশ্য একটা কথা না বললেই নয়- আজকাল কিছু ছেলে-মেয়েরা বলে-“একদিনের সাক্ষাতে কি করে একটা মানুষকে জানা যাবে? আমরা কয়েকদিন একে অপরকে বুঝে নেই- তার পর দেখবো”। তাদের উদ্দ্যেশে বলতে- আসলে একটা মানুষকে একবারের সাক্ষাতে যেমন পুরোপুরি জানা যায় না, তেমনি সারাজীবনেও জানা যায় না। তাই চেষ্টা করুন- সীমিত এমন কিছু প্রশ্নের উত্তর অপরপক্ষের কাছ থেকে বের করে আনার- যেটা জানলেই মোটামুটি আপনি সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন। ভাগ্যের উপরে চেষ্টা করার মানে এই নয়- যে, আপনি বিয়ের (কাবিন) আগেই ফোনালাপ, ঘুরাঘুরি শুরু করে দিবেন। বরং এভাবে একটা অবৈধ সম্পর্কই মূলত গড়ে উঠবে- যেটার কোনো স্থায়িত্ব নেই। সুতরাং, বাড়ি তৈরিতে যেমন ফাউন্ডেশন ঠিকভাবে দিতে হয় তেমনি রাষ্ট্রের কথা ভাবার আগে সুষ্ঠ পরিবারের কথা ভাবতে হয়। তাছাড়া প্রকৃত ক্যারিয়ার বিয়ের পরেই শুরু হয়-কারো গড়ে, কারো বা ধ্বংস হয়।
বিষয়: বিবিধ
১১৮৭ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্যের জন্য এ প্লাস
তবে আমি মনে করি- এসব প্রশ্নকে side line এ রেখে ছেলে/মেয়ের মানসিকতা বুঝার জন্য মূলত প্রশ্ন করা উচিত- ‘তুমি কেমন জীবনসঙ্গী কামনা করো’? কারণ এই প্রশ্নের উত্তর পেয়েই অপরপক্ষের ধ্যান-ধারণা আর সেই ভিত্তিতে নিজের সক্ষমতা/অক্ষমতা বিচার করা যায়। তথা গ্রিন সিগন্যাল/রেড সিগন্যাল দেয়া যায়।
সুতরাং, বাড়ি তৈরিতে যেমন ফাউন্ডেশন ঠিকভাবে দিতে হয় তেমনি রাষ্ট্রের কথা ভাবার আগে সুষ্ঠ পরিবারের কথা ভাবতে হয়। তাছাড়া প্রকৃত ক্যারিয়ার বিয়ের পরেই শুরু হয়-কারো গড়ে, কারো বা ধ্বংস হয়।
দয়া করে এসব দিবেন না।
আজ যদি আমি আপনার বাসায় আসি দাওয়াত খেতে তাহলে আপনি হয়ত আমার সন্মানে পোলাও কোরমা রাঁধতে যাবেন । তার মানে আমার এটা ধরে নেওয়া উচিত নয় যে আপনি সারা বছরই পোলাও কোরমা খান ।
আর আমি আপনার বাসায় আসা উপলক্ষে অনেক ফল , ক্যান্ডি নিয়ে এলাম - তার মানে এটাও নয় যে আমি প্রতি দিনই এত্ত এত্ত ফল ও ক্যান্ডি খাই ।
প্রেম বা প্রথম সাক্ষাত হল কল্পনার জগত আর বিয়ে , সেটাত নির্মম বাস্তবতা ।
লিভ টুগেদারকেই এর বিকল্প। হিসেবে সবাই বেছে নেবে
গঠনমূলক পোস্টের জন্য আপনাকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন