ইউএস প্রশাসন ভারতের বিরুদ্ধে গিয়ে আমাদের জন্য দরদ দেখাবে এমনটি ভাবার কারণ নেই

লিখেছেন লিখেছেন FM97 ১৩ নভেম্বর, ২০১৩, ১২:২১:১২ দুপুর

একদিকে হরতাল, সহিংসতা-অপরদিকে প্রধানমন্ত্রীর একগুয়েমী ও হটকারীতা। জেলায় জেলায় বক্তব্য প্রদান, চলছে গণহারে প্রকল্প উদ্ভোদন (যদিও প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের মুখ দেখবে কিনা সে ব্যাপারে আমরা আশ্বস্ত নই)। একদিকে বিরোধীনেতা-কর্মীদের গণহারে গ্রেফতার, অপরদিকে সরকারি নেতারা পদত্যাগ করে ফিরছেন নির্বাচনী প্রচারণায়। মজার ব্যাপার হলো- পদত্যাগ করেও তারা মন্ত্রীর সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। বাহ! সোনার বাংলাদেশে সবই সম্ভব! গোল্লায় যাক সংবিধান!

এদিকে নির্বাচন কমিশন সাফ জানিয়ে দিয়েছে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা তাদের কাজ নয়- নির্বাচন যথাসময়েই হবে। তাহলে কি হতে যাচ্ছে একদলীয় নির্বাচন? অনেকটা ১৯৭৩’র মতো……। সেই সময় বিরোধীজোটের সংখ্যা এখনকার মতো না হলেও সমূহ দূর্নীতির আশঙ্কায় ‘জাতীয় সরকার’ গঠনের দাবি উঠেছিলো। তবে সেই দাবিকে উপেক্ষা করে সে সময় শেখ মুজিব সরকারের অধীনেই নির্বাচন হয়। যথেষ্ট কারচুপি করে ন্যাপ (ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি) ও সমাজতান্ত্রিক দলের বিজয়কে কিভাবে নাসাৎ করে দেয়া হয়েছিলো সেই অধ্যায়টা মেনন সাহেবরা খুব ভালো করেই জানেন। হতে পারে ক্ষমতার লোভে সব কিছু জেনেও তারা চুপ। সুতরাং, আব্রাহাম লিংকন যথার্থই বলেছিলেন- “ If you want to test a man’s character give him power”

জানি না, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাদের ইশারায়, কি ভরসায় এমন হটকারীতায় লিপ্ত-যদিও সন্দেহের তীর ছুটে ভারতের দিকে। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তো বলেই দিয়েছেন- “হাসিনা ভারতের আপনজন” তাই রাজনীতিতে এমন ‘আপনজন’এর প্রতি ভারতের আন্তরিকতা (অবশ্যই নিজ স্বার্থে) থাকবেই। আর মি.ড্যান মজিনা যতই বিবৃতি দিক, ইউএস প্রশাসন কখনো ভারতের বিরুদ্ধে যাবে না। তাইতো ওবামা, বাংলাদেশের স্থিতাবস্থার জন্য তার কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয় ভারতের সাথে যোগাযোগের জন্য। সেই হিসাবে একটা তথ্য জানিয়ে রাখাটা আমার দায়িত্ব মনে করি- তাহলো, অনেকেই ভাবেন- ১৯৭১ এ বঙ্গোপসাগরে মার্কিন তরী পাঠানো হয়েছিলো পূর্ব পাকিস্তানের স্বার্থে ভারতকে থামানোর জন্য। তবে এই বিষয়টা তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরী কিসিঞ্জার তার বই “White House Years”- এর The India Pakistan crisis of 1971 অধ্যায়ে স্পষ্ট বলেছেন- “যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পূর্ব পাকিস্তানের সায়িত্ত্বশাসনের বিষয়টি অবশ্যম্ভাবী ছিলো। তবে তারা মালাক্কা প্রণালী থেকে যে জাহাজটা বঙ্গোপসাগরে পাঠাচ্ছিলো সেটা মূলত পূর্ব পাকিস্তানকে নয় বরং পূর্ব থেকে ভারতের আক্রমণ যাতে পশ্চিমের দিকে না যায়- সেই জন্য, কারণ ভারত তখন সোভিয়েতের সাথে মিলে তেমনই পরিকল্পনা করছিলো। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপে তারা পিছু হটে। অনেক মিডিয়াতে তখন ফলাও করে ছড়িয়ে পড়ে যে যুক্তরাষ্ট্র পূর্ব পাকিস্তানকে রক্ষায় এগিয়ে আসছে, অথচ তেমনটি ছিলো না”। আর এখন ইউএস প্রশাসন ভারতের বিরুদ্ধে গিয়ে আমাদের জন্য দরদ দেখাবে এমনটি ভাবার কারণ নেই। তাছাড়া, এশিয়ার প্রেক্ষাপটে চীনকে ঠেকাতে ইউএস চাইবে ভারতকে পাশে রাখতে।

যাই হোক, টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত এক সুবীর ভৌমিকের কথায় ভারত , হাসিনা সরকারকে বজায় রাখার জন্য সেনাবাহিনী পাঠানোর মতো বোকামি করবে বলে মনে হয় না। এদিকে, দেশের বর্তমান জালাও-পোড়াও পরিস্থিতির দায় প্রধানমন্ত্রী কোনোভাবেই অস্বীকার করতে পারেন না আর সেই সাথে সরকারের পরিকল্পনা কোথায় গিয়ে ঠেকে- সেটাই দেখার বিষয়। পরিকল্পনা যাই হোক- সকল পরিকল্পনার মালিক এক আল্লাহ। আর তিনি যা পরিকল্পনা করেন- সেটা হবেই।

বিষয়: বিবিধ

১১০০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File