“আপনি ভালো বলবেন কাকে? কার জন্য লড়াই করবো? কোনো দলই তো ভালো না”
লিখেছেন লিখেছেন FM97 ২১ অক্টোবর, ২০১৩, ০৪:০৬:২৩ বিকাল
মনে হচ্ছে ভুল আগেই হয়ে গেছে। তাহলো, ঐক্যতায় ঘাটতি। কিছু ইসলামী দল আছে যারা সঙ্গত কারণে ১৮ দলের অন্তর্ভুক্ত তথা খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে না থেকে আলাদা থাকতে আগ্রহী। তবে দেখা গেছে ,হয়ত ক্ষমতায় গিয়ে দেশের উপকার করতে পারবেন এটা ভেবে কিছু ইসলামী দল বেগম জিয়ার পিছনে দাঁড়ালেন। যদিও লাভ তেমন হয় নি। বরং আমার মনে হয় সব ইসলামী দল এক জোট হলে অন্যায় ঠেকানো তেমন কঠিন হতো না, যেমনটি আজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই প্রসঙ্গটি তুললাম কারণ, একটু হলেও যারা দেশ নিয়ে ভাবেন, রাজনীতি নিয়ে ভাবেন তারা সবাই উদ্বিগ্ন ২৫ অক্টোবর নিয়ে। খোদ প্রধানমন্ত্রীও ভয়ের মধ্যে আছেন, তাই সমাবেশ ঠেকাতে তিনি নির্বাচনকালীন সময়ে বিএনপিকে ক্যাবিনেটের সিট দেয়ার লোভ দেখিয়েছেন। কারণ, তিনি বা তার আশপাশের চেলাচামুণ্ডারা গোপনে লগি-বৈঠার অপব্যবহারের আদেশ যদি দেনও, তবে বেশি খুন-খারাবি হয়ে গেলে দেশীয় ও বিদেশী মিডিয়ায় তা লুকিয়ে থাকবে না।
তা যাই হোক, ব্যক্তিগতভাবে ঐ দিন সরকার পতন টাইপ কিছু হবে বলে মনে হয় না। হ্যা, ১৮ দলের সমাবেশে যাত্রা পথে আওয়ামী ক্যাডাররা হামলে পড়লে সহিংসতার সৃষ্টি হবে, তবে তা সারা দেশে বিপ্লব সৃষ্টি করবে বা অন্যায় ভাবে ক্ষমতায় থাকা সরকারকে সরাতে সক্ষম হবে বলে মনে হয় না। বরং বিএনপি হয়ত পিছন থেকে আত্মরক্ষার চেষ্টা করবে আর যেহেতু আওয়ামী টার্মে জামায়াতের ওপর অত্যাচার বেশি হয়েছে তাই তাদের ক্ষোভ থাকবে একটু বেশি। রাস্তার ইট, লাঠি, কিংবা শূন্য হাতে হোক মোকাবেলার চেষ্টা করবে, মার খাবে অথবা দিবে। তবে একা জামায়াতের পক্ষে কিছু করা সম্ভব বলে মনে হয় না। আর Point should be noted ধর্মীয় দলগুলো যেহেতু আজও এক হতে পারে নি, তাই আন্দোলন সফলতার মুখ পাবে কিনা সন্দেহ। আমি ইসলামী দলগুলোর জোট হওয়ার প্রসঙ্গ বার বার তুলছি- কারণ, এক ধর্মই আমাদের শিখায়- দুনিয়ার স্বার্থ ছেড়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে, সেটা নিজের জীবন দিয়ে হলেও হোক। এর ফল পৃথিবীতে না পেলেও আখিরাত তথা পরকালে এই কর্মফল বিফল হবে না। শক্তি আসেই ধর্ম থেকে, যারা দুনিয়ার জন্য রাজনীতি করে তাদের কাছ থেকে কখনোই এই শক্তির আশা করা যায় না।
এদিকে পিছনে থেকে যাওয়ার নীতি দেখিয়ে বিএনপি’র বেজ্জতি করার অভিপ্রায় নেই। তবে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে বলি- বিএনপিকে কখনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে কঠোর হতে দেখা যায় নি। জানি, দেশের অধিকাংশ মানুষ বিএনপি’র মতো, ভিন্নভাবে বলতে-অধিকাংশ মানুষ বিএনপি সমর্থক। তবে এ নিয়ে গর্ব করে বিএনপি যদি বসে থাকে, তবে বলতেই হয়- আপনাদের ‘জান বাচানো ফরজ’ মার্কা নীতি (যা দলের হয়ত অনেককেই হতাশ করছে) হয়ত এই বিপুল সমর্থকদের নিরাশ করবে আর এই সমর্থন হাইজ্যাকও হয়ে যেতে পারে।
এদিকে আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার দায়িত্ব নির্দিষ্ট কোনো দল বা গোষ্ঠীর নয় বরং আমাদের সবার। এই সরকার ধর্মীয়বিদ্বেষ যেভাবে ছড়িয়েছে, মসজিদে শুধু হামলা হয় নি, ভেঙ্গেছে মন্দিরও। বিডিআর বিদ্রোহ থেকে ফিরিস্তি লেখা শুধু করুন, হাজার হাজার কোটি টাকার লুটপাট, হত্যা-গুম-খুন-গণগ্রেফতার, নির্যাতন (যাদের ওপর দিয়ে গিয়েছে তাদেরকে জিজ্ঞাস করে দেখুন), বিভক্তির রাজনীতি, জাতীয় সম্পদ নিয়ে উদ্ভট চুক্তি, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি, তার ওপর নেতা-নেত্রীদের প্রতিহিংসামূলক কথাবার্তা কোনো কিছুই কম ছিলো না। সব লিখতে গেলে হয়ত লেখার কলেবর আরো বড় হতে থাকবে।
জানি, এত কিছুর পরও অনেকে আন্দোলনে অণীহা প্রকাশ করে বলবেন- “আপনি ভালো বলবেন কাকে? কার জন্য লড়াই করবো? কোনো দলই তো ভালো না”। হ্যা, ঠিক আছে, তবে আওয়ামী লীগের মতো এতো খারাপ দল এ দেশে আর নেই। এরা নিজের স্বার্থে দেশও বিক্রি করে দিতে পারে।
পরিশেষে দেশে কিছু একটা হতে যাচ্ছে, এই মনোভাবটা ৫ই মে’১৩ অনুভূত হয়েছিলো। নির্মম অত্যাচারে উনারা পিছু হাটলেও হেরে গেছেন- সেটা বলা যাবে না, বরং এদেশের ইতিহাসে কালের সাক্ষী হয়ে থাকবেন। তাই, আগামী ২৫শে অক্টোবর (মেয়েরা রাজপথে থাকার সামর্থ না রাখলেও কলম যুদ্ধ হোক বা মানসিক সমর্থন বা হাসপাতালে সক্রিয় থেকে বা দোয়া করে) সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ না ছাড়া তথা ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়াটাকেই যুক্তিযুক্ত মনে করি।
বিষয়: বিবিধ
১৪০০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন