কবিতা ভুল শিখাচ্ছে- আদি পাপের উৎস বিবি হাওয়া আঃ নন
লিখেছেন লিখেছেন FM97 ১১ আগস্ট, ২০১৩, ০৪:২৫:৪২ বিকাল
কবিতা, উপন্যাসের প্রতি আগ্রহ ছিলো না তত। তবে মাঝে মধ্যে যাও পড়ি, মূলত কবিতার ছন্দে মুগ্ধ হয়ে। ছন্দ এবং সুস্থ ধারার কবিতা প্রায়ই আমাকে আকৃষ্ট করে। এক কবির মহাকাব্য পড়তে বসলাম। তবে আমার আনন্দের স্থায়িত্ব বেশি সময় টেকেনি। বরং ভেঙ্গে চুরমার। সমালোচনার কাঠগড়ায় কবিতা।
বর্তমানে দেশের একজন প্রথম সারির কবি। আমি কবির নাম উচ্চারণ করবো না, কারণ তিনি যে ভুলটি করেছেন আর যে কারণে আমি তাঁর কবিতার ধরণ ও মানসিকতার সমালোচনা করবো সেটা প্রায় কবির মধ্যেই আছে। তাই একা উনাকে দোষারোপ করতে চাই না।
কবিতাগুলোতে প্রায় দেখি নারীর বয়স, যৌবন, দৈহিক গঠন ইত্যাকার বিষয়ে নাড়ি-নক্ষত্র বিশ্লেষণ করে নারীর রূপের বর্ণনা নয় বরং আমার কাছে তো মনে হয় নারীর অপমানের মানদন্ডটাই যেন ভারী করা হচ্ছে। জানি, এমনটি যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে। আর অবাক হই যখন কবিতায় এমন কুরুচিপূর্ণ কথা পড়েও পাঠিকারা দেদারসে পড়ে যায়। হয়ত তারা “এটা তো কবিতার অলঙ্কার”-বলে ধরে নেয়। যেমনটি টেলিভিশনের অধিকাংশ নারী দর্শক মিডিয়ায় তাদের অর্ধউলংগ প্রদর্শনীকেও ‘একেক জনের দেখার দৃষ্টিভঙ্গি’ বলে উড়িয়ে দেয়। (ভুল বুঝবেন না, আমি সব নারীদের নয়, বরং অধিকাংশ অসচেতন নারীদের প্রসঙ্গ তুলেছি)। তাই বলি- নারীরা যদি এসবের পিছনের জঘন্য খেলাকে বুঝতো তাহলে হয়ত অধিকাংশ এই দর্শকমন্ডলী লম্পট মিডিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় তুলতো।
তা, যাই হোক, কথা হচ্ছিলো কবিতা নিয়ে। কবিতায় শুধু নারীদের উদোম শরীরের বর্ণনা দেয়া হয় তাই নয় বরং আদিপাপের উৎসও বলা হয় নারীকে। মহাকাব্যটি পড়তে গিয়ে বেশ শাব্দিক ছন্দে প্রকাশ করা হলো ইভকে (বিবি হাওয়া আঃ) ইবলিশ প্ররোচিত করে সেই নিষিদ্ধ ফলটি খাইয়েছিলো। পাপের শুরুটা ইভই করেছিলো।
আফসোস লাগে-মানুষ এমন ঘটনা কেনো বলে, যার সত্যতা সে নিজেই জানে না? সূরা ত্বহা এর আয়াত ১২০ এ বলা হয়েছে “কিছু শয়তান তাকে কুমন্ত্রণা দিলো, বলতে থাকলো-হে আদম! তোমাকে কি এমন গাছের কথা বলে দেবো যা থেকে অনন্ত জীবন ও রাজ্য লাভ করা যায়”? খেয়াল করে এমনকি কুরআনের আয়াতটি পড়েও দেখতে পাড়েন যে, সেখানে “ইয়া আদামু...” বলা হয়েছে।
বাইবেল মতে, ইবলিশ সাপের আকার ধারণ করে প্রথম মহিলা তথা বিবি হাওয়া আঃকে বিপথে প্ররোচিত করে। অথচ কু’রআন বাইবেলের বানোয়াট কথাকে ভুল প্রমাণিত করেছে। আদি পাপের উৎস নারী নয়। অথচ কবি, হাওয়া আঃ এর যৌবন বর্ণনা করে বেশ ভালোই অপমান ও অপবাদ দিলেন। কবিদের এমন কর্মে দিন দিন সমাজে যেমন কুরুচির সৃষ্টি হচ্ছে তেমনি মানুষ ভ্রান্ত ধারণার শিকার হচ্ছে- যাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই, বিনোদনের নামে ভুল জিনিস শিখানো অনুচিত।
আমি সব কবিদের সমালোচনা করছি না। কারণ এমন কবিও দেখেছি- যারা প্রকৃতি নিয়ে লিখেন, যাদের কবিতায় থাকে বিশুদ্ধ ভালোবাসা, সমূহ সম্ভাবনা, উদ্দ্যোম, সাহসিকতা, দুরন্তপনা, জয়ধ্বনি ইত্যাদি ইত্যাদি......। তবে কবিতা হোক সুস্থ ধারার বার্তাবাহক, নচেৎ নারীর অসম্মান করে নয়- এমনটাই কামনা করি।
বিষয়: বিবিধ
১৪৬২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন